চট্টগ্রামে নির্বাচনি জনসংযোগ চলাকালে গুলীবিদ্ধ হয়েছেন নগর বিএনপির আহ্বায়ক ও চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনের বিএনপির প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ।

গতকাল বুধবার বিকেলে নগরের চান্দগাঁও থানার চালিতাতলী খন্দকারপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গুলীতে তার সঙ্গে থাকা সরোয়ার হোসেন ওরফে বাবলা (৪৩) নামের এক ব্যক্তি নিহত হন।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেলে এরশাদ উল্লাহ স্থানীয় সমর্থকদের সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নেন। এ সময় হঠাৎ গোলাগুলীর ঘটনা ঘটে। এতে এরশাদ উল্লাহ, সরোয়ার ও শান্ত নামের তিনজন গুলীবিদ্ধ হন। পরে তাদের উদ্ধার করে নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে সরোয়ারের মৃত্যু হয়।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) আমিরুল ইসলাম জানান, গুলীবিদ্ধ এরশাদ উল্লাহর বুকে গুলী লেগে পাশ দিয়ে বেরিয়ে গেছে। তিনি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং আশঙ্কামুক্ত। তবে গুলীবিদ্ধ অপর এক ব্যক্তির অবস্থা গুরুতর ছিল তিনি পরে মারা যান।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহত সরোয়ারের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, হত্যা, অস্ত্রসহ প্রায় ১৫টি মামলা রয়েছে। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদের অনুসারীরা সরোয়ারকে লক্ষ্য করে গুলী চালায় বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

এ বিষয়ে চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল কবির বলেন, গুলীতে আহত সরোয়ার মারা গেছেন। এর আগে গত মার্চ মাসে বাকলিয়া এলাকায় সরোয়ারের ওপর একই ধরনের হামলার ঘটনা ঘটে। তখনও আধিপত্য বিরোধই এর পেছনে ছিল বলে পুলিশ জানায়।

অন্যদিকে, বিএনপি নেতারা বলছেন, নিহত সরোয়ার দলের কেউ নন। নির্বাচনি জনসংযোগে শত শত সাধারণ মানুষ অংশ নিয়েছিলেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “ঘটনাটির সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই। দুটি সন্ত্রাসী গ্রুপের বিরোধের জেরে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।”

বিএনপির মিডিয়া সেল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানানো হয়, হামজারবাগ এলাকায় নির্বাচনি প্রচারণার সময় দুর্বৃত্তরা এরশাদ উল্লাহর ওপর হামলা চালিয়ে তাঁর পায়ে গুলী করে। পরে তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ জানান, নির্বাচনি প্রচারণাকালে নগর বিএনপির আহ্বায়কসহ তিনজন গুলীবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে এবং অভিযুক্তদের শনাক্তে অভিযান চলছে।

এরশাদ উল্লাহ বর্তমানে নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। নগর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ বলেন, চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন এরশাদ উল্লাহর পেটে ছররা গুলী লেগেছে, তবে তিনি আশঙ্কামুক্ত।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ সন্ধ্যায় বলেন, নির্বাচনি প্রচারণাকালে নগর বিএনপির আহ্বায়কসহ তিনজন গুলীবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ শুরু করেছে।