কাশ্মির ইস্যুকে কেন্দ্র করে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনকে ফোন করে কোনো সহায়তা বা প্রতিক্রিয়া জানতে চাননি পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার।

মঙ্গলবার (৬ মে) সন্ধ্যায় গতকাল রাতে তৌহিদ-ইসহাকের মধ্যে হওয়া টেলিফোন আলাপ নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

টেলিফোন আলাপের বিষয়বস্তু নিয়ে তৌহিদ হোসেন জানান, ঘটনাটা যা ঘটেছে পাকিস্তান তার ব্যাপারে কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে সেটা পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আমাকে অবহিত করার জন্য ফোন করেছেন। তারা যা করেছেন তিনি তার বিবরণ দিয়েছেন। আমার কাছ থেকে উনি কোনো সহায়তা চাননি বা প্রতিক্রিয়া জানতে চাননি। আমি শুধু বলেছি, আমরা চাই শান্তি বহাল থাকুক।

তিনি বলেন, উত্তেজনা প্রশমনে যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয় এবং কোনো ধরনের উত্তেজনা বৃদ্ধি যেন না ঘটে এটাই আমাদের প্রত্যাশা। আমরা চাই, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যে কোনো সমস্যার সমাধান হোক।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপের বিষয়টি দিল্লির কাছে পৌঁছাবে কিনা-জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, এটা আমি জানি না। যদি দিল্লি আমার কাছে জানতে চায় আমি, ঠিক একই কথা বলব। কিন্তু তারা না চাইলে আগ বাড়িয়ে বলার দরকার নেই। যেহেতু পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে ফোন করেছেন তাকে আমরা বলেছি, আমরা শান্তি চাই কোনো সংঘাত চাই না।

ঢাকাস্থ পাকিস্তান হাইকমিশন জানায়, পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার সোমবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। টেলিফোন আলাপে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতের ভিত্তিহীন অভিযোগ এবং এক তরফা পদক্ষেপের ফলে ক্রমবর্ধমান আঞ্চলিক উত্তেজনা সম্পর্কে উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। যার মধ্যে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করার বিষয়টি ভারতের স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত বলে উপদেষ্টাকে জানান তিনি।

অপরদিকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং উত্তেজনা হ্রাসের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে সব পক্ষকে সংযম প্রদর্শনে জোর দেন বলে পোস্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

এসব ছাড়াও এ দুজন বাংলাদেশ-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদারে তাদের পারস্পরিক প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং নিয়মিত উচ্চস্তরের যোগাযোগ বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তারা আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক ফোরামে সহযোগিতা বৃদ্ধির সুযোগ নিয়েও আলোচনা করেন।

উল্লেখ্য, ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত ২২ এপ্রিলের এ হামলার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ বাধার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। হামলার জেরে পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু নদ চুক্তি বাতিলসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত।