শরীয়তপুর সংবাদদাতা : আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের যেখানে অনিয়ম দুর্নীতি সেখানেই যুদ্ধ। এযাবতকালে যারা দেশটাকে আমার আমার বলে এসেছেন তারা শুধু উন্নয়নের নামে লুটপাটই করেছে। কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে বেগম পাড়া তৈরী করেছে। আমরা অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাব। উন্নয়নের নামে বাটপারি ও ধোঁকাবাজি থেকে জাতিকে মুক্তি দিতে হলে আমাদের উন্নত আদর্শবান ও সৎ চরিত্রবান হতে হবে।

তিনি বলেন, আওয়ামী দুঃশাসনের জুলুম নির্যাতনের শিকার ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের উপর কি এখনো সেই জুলুম চালু থাকবে? আমি ঘোষণা করেছি আজহার ভাইকে ভিতরে রেখে আমি বাইরে থাকতে চাই না।

আজ সোমবার সকাল ৯টায় ভেদরগঞ্জ উপজেলা চত্বরে উপজেলা ও পৌরসভা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, অতীতে যারা ক্ষমতায় ছিলেন তাদের সম্পর্কে আমি কিছুই বলবো না। তারা ভালো করলে ভালো, আর মন্দ করলে মন্দ। দেশের উন্নয়ন হয় জনগণের ট্যাক্সের টাকায় ও বিদেশী ঋণের অর্থে। যার দায় ভিক্ষুক থেকে সদ্য জন্ম নেয়া শিশুর মাথার উপরও বর্তায়। তাই উন্নয়নের নামে বাটপারি ও ধোঁকাবাজি থেকে জাতিকে মুক্তি দিতে হলে আমাদের যোগ্য নেতৃত্ব তৈরি করতে হবে। আর তাদের হাতে নেতৃত্ব গেলেই দেশ প্রকৃত উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাবে।

এসময় তিনি বলেন, এটিএম আজহারুল ইসলাম মুক্তি পাওয়ার সাথে সাথে বাংলাদেশ পুরোপুরি মুক্তি পাবে না। তবে একজন মজলুম মুক্তি পাবে। বাংলাদেশকে মুক্ত করতে হলে এদেশের যুব সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। টানা সাড়ে ১৫ বছর আমাদের উপর জুলুম চলেছে, আমরা আন্দোলন করেছি ফ্যাসিবাদী সরকারকে সরানোর জন্য। আমরা রাজনীতিবিদরা তা পারিনি। কিন্তু সেই সমস্ত কষ্ট দুঃখ যাতনা, জুলুম একত্রিত হয়ে যে শক্তি তৈরি হয়েছিলো আমাদের ছাত্রদের নেতৃত্বে সেই শক্তিতে বাংলাদেশ মুক্ত হয়েছে।

যুবকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সমাজ গড়ার জন্য দায়িত্ব নিতে হলে তোমাদেরকে এগিয়ে আসতে হবে। যে সমাজের যুবকেরা এগিয়ে আসে সেই সমাজে আল্লাহর পক্ষ থেকে বিপ্লব সফল হয়। আমি যুবকদের থেকে দু’টি জিনিস চাই, একটি হচ্ছে গভীর দেশপ্রেম ও আরেকটি হচ্ছে আল্লাহর প্রতি ভয়। এই দু’টা জিনিস নিয়ে যদি যুবকেরা এগিয়ে আসে তারাই হবে সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে হিমালয় পর্বত। এই পর্বত যারাই ঘসে দিতে আসবে, তাদের মাথা চুরমার হয়ে যাবে।

শরীয়তপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর কেএম মকবুল হোসাইন এর সভাপতিত্বে পথসভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি, এএইচ হামিদুর রহমান আযাদ, কেন্দ্রীয় শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কোষাধ্যক্ষ সাবেক ছাত্রনেতা আজহারুল ইসলাম, এনডিএফ এর সেক্রেটারি জেনারেল প্রফেসর ডা. মাহমুদ হোসেন বকাউল, ফরিদপুর অঞ্চল টীম সদস্য মাওলানা খলিলুর রহমান, জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আব্দুর রব হাশেমী, ডামুড্যা পৌরসভার আমীর আতিকুর রহমান কবির, জেলা শূরা সদস্য মাওলানা ওবায়দুল হক, জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি শাখাওয়াত কাওছার।

পথসভা শেষে আমীরে জামায়াত গত ২০১৪ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির আদেশের প্রতিবাদের মিছিলে পুলিশের গুলীতে ভেদরগঞ্জ উপজেলার রামভদ্রপুর ইউনিয়নের মহিষকান্দি গ্রামের শহীদ মাওলানা বেলাল এর কবর জিয়ারত, দোয়া এবং তার পরিবারের সদস্যদের সাথে কুশল বিনিময় করেন।