লক্ষ্মীপুর সংবাদদাতা : ওমান প্রবাসীকে বহনকারী মাইক্রোবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে লক্ষ্মীপুরের একই পরিবারের সাতজন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে প্রবাসী বাহার উদ্দিনের স্ত্রী, শিশু সন্তান, মা, নানী, ভাইয়ের স্ত্রী ও দুই ভাতিজি রয়েছে।

জানা যায় লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের পশ্চিম চকলি গ্রামের কাঁসারী বাড়ীর ভাইজান আব্দুর রহিমের ছেলে ওমান প্রবাসী বাহার উদ্দিন মঙ্গলবার দিবাগত রাত বারোটায় দেশে আসে। তাকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য মঙ্গলবার বিকেলে তার পরিবারের ১১ সদস্য ঢাকা বিমানবন্দরে যায়। রাত ১টার সময় তারা বাহার কে নিয়ে বাড়ির পথে রওনা হয়। মাইক্রোবাসটি সকাল ছয়টার দিকে চৌমুহনী-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার জগদীশপুর এলাকায় পৌঁছলে চালক রাসেল ঘুমিয়ে পড়ে। এসময় প্রবাসী পরিবারকে বহনকারি মাইক্রোবাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পার্শ্ববর্তী রহমতখালি খালে পড়ে যায। এ সময় প্রবাসী বাহারউদ্দিন, তার বাবা আব্দুর রহিম ও শ্বশুর ইস্কান্দার, ভাইয়ের স্ত্রী সুইটি, মাইক্রোবাস চালক রাসেল মাইক্রোবাসের মাইক্রোবাসের গ্লাস ভেঙে বেরিয়ে আসতে পারলেও নারী ও শিশু সদস্যরা পানিতে ডুবে যায়। এসময় স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় প্রবাসীর মা খুরশিদা বেগম বুলি, (৫০)স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা কবিতা(২২), নানী, ফজরের (৭৫) ভাইয়ের স্ত্রী লাবনী (৩০), প্রবাসী শিশুকন্যা মিম (২) ভাতিজি লামিয়া (৪) রেশমি আক্তার (৯) এর লাশ উদ্ধার করে।

চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মোবারক হোসেন ঘটনা সত্যতা স্বীকার করে জানান, ফায়ার সার্ভিস ও পানীয় জনতার সহযোগিতায় মাইক্রোবাসটি উদ্ধার করা হয়েছে।চালক ঘুমিয়ে পড়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। মাইক্রোবাসে চালক পলাতক রয়েছে। নিহতদের শরীরে আঘাতের কোন চিহ্ন পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে পানিতে ডুবে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে ময়নায় তদন্ত ছাড়া লাশ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। প্রবাসী বাহার ও তার শশুর জানান চালক ঘুমিয়ে পড়ায় এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

সুনামগঞ্জে ২ শিক্ষাথীসহ নিহত ৩ জন

সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা : সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়কের বাহাদুরপুরে সড়ক দুঘটনায় ২ শিক্ষাথীসহ ৩ সিএনজি যাত্রী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ২ যাত্রী। গতকাল বুধবার দুপুর পৌনে একটায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার পর বাস চালক পালিয়েছে।

দুঘটনার পর ঘটনাস্থল সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার লক্ষনশ্রী উনিয়নের বাহারদুর এলাকায় সড়কের আশপাশের শত শত মানুষ এসে জড়ো হলে বেশ বিছুক্ষণ চান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আহতদের সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভতি করা হয়েছে।

নিহতরা হলেন- শান্তিগঞ্জ টেক্সট্লা নস্টিটিউটের দ্বিতীয় বষের শিক্ষাথী আফসানা জাহান খুশি (২০), তিনি সুনামগঞ্জ শহরের আরপিননগর এলাকার বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে এবং অন্য শিক্ষাথী স্নেহা (১৮), তিনি সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভতি কাযক্রম শেষ করে সুনামগঞ্জ শহরের বাসায় ফিরছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস গ্রামে। এছাড়াও শফিকুল ইসলাম (৫০) নামের আরও একজন সিএনজি যাত্রী নিহহত হয়েছেন। তিনি সুনামগঞ্জ শহরের আলীপাড়া এলাকার বাসিন্দা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাহাদুরপুর এলাকায় সুনামগঞ্জ থেকে সিলেটগামী যাত্রীবাহী বাস (নম্বর সিলেট ব-১১-০১১১) এবং সুনামগঞ্জগামী সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে। দ্রুতগামী বাসটি উল্টো সাটে গিয়ে সিএনজিকে আঘাত করে। এসময় সিএনজি যাত্রীরা হতাহত হন। আহত যাত্রীরা হলেন- ঐশি রানী পাল (২০)। তিনি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার লালারচর গ্রামের বিনয় ভূষন পালের মেয়ে। অন্যজন জেলা শান্তিগঞ্জ উপজেলার বসিয়া খাউরি গ্রামের রমজান আলীর ছেলে সিএনজি চালক রশিদ আহমেদ।

সুনামগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হোসেন নিহতদের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহতদের সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভতি করা হয়েছে। ঘাতক বাস আটক করা হয়েছে। চালক ও হেলপারকে আটকের চেষ্টা চলছে।