যশোর সংবাদদাতা : যশোরে বোমা বিস্ফোরণে আহত দুই ভাই-বোনের মধ্যে খাদিজা (৪) মারা গেছে। উন্নত চিকিৎসার জন্যে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার বর্তমান বাবা শাহাদত গাজী। বেলা সাড়ে ২টার দিকে মোবাইল ফোনে মেয়ে খাদিজার মৃত্যুর বিষয়টি তিনি জানান। তিনি বলেন, ডাক্তারদের নির্দেশনামতে উন্নত চিকিৎসার জন্যে খাদিজাকে অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে পৌঁছালে খাদিজার মারা যায়। এখন তার লাশ নিয়ে ফিরে আসছি। জানতে চাইলে যশোর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) নূর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেন, আমরাও শুনেছি শিশুটি মারা গেছে।
সোমবার (১৯ মে) সকালে যশোরে ঘরের ভেতরে বোমা বিস্ফোরণে খাদিজা (৪) ও সজীব (৭) নামে দুই শিশু আহত হয়। এদের মধ্যে খাদিজার অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। সকাল ৮টার দিকে যশোর শহরের শঙ্করপুর গোলপাতা মসজিদের পাশে নূর-উন-নবীর বস্তিতে এই ঘটনা ঘটে। বোমায় আহত দুই শিশুর বাবার নাম শহিদুল গাজী। আহতদের দাদি মনোয়ারা বেগম জানান, সকালে ঘরের পাশে উঠানে বসে তিনি ও তার বউমা সকালের খাবার খাচ্ছিলেন। ওই সময় ঘরের ভেতর থেকে হঠাৎ করে বিকট শব্দ শুনে তাকিয়ে দেখেন সেখান থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। এরপর ঘরের ভেতরে গিয়ে দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় তার দুই নাতি-নাতনি মেঝেতে পড়ে রয়েছে। এরপর তারা দুই শিশুকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডাক্তার শাকিরুল ইসলাম বলেন, বোমায় খাদিজার হাত, বুক এবং সজিবেরও বুকসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত লেগেছে। তাদের শিশু সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে, জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) বজলুর রশিদ টুলু বলেছেন, গুরুতর আহত দুই শিশুকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, শিশুরা যে কক্ষে থাকে তার পাশেই থাকে সন্ত্রাসী মুসা ওরফে সাগরের মা। মুসা শাহাদতের ঘরে বসে বোমা তৈরি করে। সম্ভবত তার তৈরি বোমা বিস্ফোরণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। এদিকে, বোমা বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন যশোরের পুলিশ সুপার রওনক জাহান। তিনি বলেন, বিস্ফোরিত বোমার ধরন বোঝা যাচ্ছে না। ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর বোমা বিশেষজ্ঞ টিমকে আহ্বান করা হয়েছে। বোমার ধরন জেনে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।