গাজীপুর মহানগরের নাওজোর এলাকায় অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল ক্লাসিক কম্পোজিট লিমিটেড কারখানায় পানি পান করার পর পেটের ব্যথা ও বমিসহ নানা উপসর্গে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন অর্ধ শতাধিক শ্রমিক। অসুস্থদের মধ্যে অধিকাংশই নারী শ্রমিক। শনিবার (১৭ মে) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে শ্রমিকদের উত্তেজনার মুখে কারখানাটি সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
পুলিশ ও শ্রমিকদের বরাতে জানা গেছে, প্রতিদিনের মতো শনিবার সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন এবং কারখানার নির্ধারিত পানি সরবরাহ ব্যবস্থার পানি পান করেন। এরপরেই অনেকে পেটের ব্যথা ও দুর্বলতা অনুভব করতে থাকেন। পরিস্থিতি খারাপ হলে প্রায় ৫০ জন শ্রমিককে গাজীপুরের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।
কারখানার শ্রমিকরা জানান, “ওই কারখানায় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার শ্রমিক কাজ করে। সকালে কাজ শুরু করার পর অনেকেই পানি পান করেন। এরপরেই তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে। এখন কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে গাজীপুর শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার (এসপি) এ কে এম জহিরুল ইসলাম বলেন, “প্রতিদিনের মতো শ্রমিকরা কারখানার সাপ্লাই করা পানি পান করেছিলেন। আজও ওই পানি পান করার পর ৪০ থেকে ৫০ জন শ্রমিক পেটব্যথা, বমি ও দুর্বলতাসহ নানা উপসর্গে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর মধ্যে অধিকাংশই নারী শ্রমিক। তবে আমরা প্রাথমিকভাবে মনে করছি, অনেক ক্ষেত্রে এটি সাইকোলজিক্যাল প্যানিক বা মানসিক আতঙ্ক থেকেও ঘটতে পারে। কারণ, অসুস্থতার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর একসঙ্গে বেশ কয়েকজন শ্রমিক অনুরূপ উপসর্গে ভোগার কথা জানান। তবে যারা প্রথমদিকে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “আশার বিষয় হলো—সিরাজুল মেডিকেল ও নাওজোর মেডিকেলসহ আশেপাশের কয়েকটি হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর অনেক শ্রমিক সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। তাছাড়া কারখানার যেসব কর্মকর্তা এবং পানি ম্যানেজমেন্ট সংশ্লিষ্টরা একই পানি পান করেছেন, তারা সুস্থ আছেন। বিষয়টি আরও গভীরভাবে যাচাই করা প্রয়োজন।
তিনি আরো জানান, “ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটনে তদন্ত চলছে। পানি দূষিত ছিল কি না, সেটি নির্ণয়ের জন্য নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। কারখানা কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক সংস্থাগুলো যৌথভাবে বিষয়টি যাচাই করছে। শ্রমিকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি দূর না হওয়া পর্যন্ত কারখানার কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।