চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (সিইপিজেড) এলাকায় একটি কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে লাগা এই আগুন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্তও নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট ও নৌবাহিনীর চারটি ইউনিট যৌথভাবে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে চার ঘণ্টা পরও আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। অগ্নিকা-ের কারণ ও ক্ষতির পরিমাণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
বেলা ২টার দিকে আগুন লাগে অ্যাডামস ক্যাপস অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড ও জিহং মেডিকেল কোম্পানির গুদামে। অ্যাডামস কারখানায় তোয়ালে ও ক্যাপ তৈরি হয় আর জিহং মেডিকেল কোম্পানিতে তৈরি হয় সার্জিকেল গাউন। সাততলা ভবনের শীর্ষ তলায় থাকা উভয় কারখানার গুদাম থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয় বলে জানা গেছে। স্থানীয়রা জানান, ভবনটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় হওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সরেজমিনে দেখা যায়, আগুন থেকে ছড়িয়ে পড়া ঘন কালো ধোঁয়ায় চারপাশ ঢেকে যায়। আগুন ধীরে ধীরে ভবনের ছয় ও পাঁচতলায় ছড়িয়ে পড়ছে। এ সময় আশপাশে ভিড় করা লোকজনকে সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর সদস্যরা সরিয়ে দিচ্ছিলেন। একপর্যায়ে একজন নারী শ্রমিককে গাড়িতে করে নিয়ে যেতে দেখা যায়। শ্রমিকদের ধারণা, তিনি ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। সিইপিজেড সূত্রে জানা গেছে, ভবনটিতে প্রায় ৭০০ শ্রমিক কাজ করেন। তবে অগ্নিকা-ের ঘটনায় কেউ আহত হননি। চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (সিইপিজেড) নির্বাহী পরিচালক আবদুস সুবাহান বলেন, আগুন লাগার পরপরই শ্রমিকদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাই এ ঘটনায় হতাহতের আশঙ্কা নেই।
জি হং মেডিকেল কোম্পানির শ্রমিক মোছাম্মত শিপা জানান, যে স্থান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে, সেখানে সাধারণত নারীদের প্রবেশের অনুমতি নেই। তিনি পাঁচতলায় কাজ করছিলেন। দুপুরে খাবারের বিরতির পর হঠাৎ ওপর থেকে ‘আগুন, আগুন’ চিৎকার শুনে অনেককে দৌড়ে নামতে দেখেন। এ সময় তিনিও অন্যদের সঙ্গে দ্রুত নিচে নেমে আসেন।
কোম্পানির সুপারভাইজার ফাহিমুল মাহমুদ ভূঁইয়া বলেন, ‘আমি চারতলায় ছিলাম। দুপুরের দিকে হঠাৎ জরুরি অ্যালার্ম বাজতে শুনি। পরে জানতে পারি ভবনের ওপরের দিকে আগুন লেগেছে। শুরুতে আগুন ছোট ছিল, কিন্তু ধীরে ধীরে তা ছড়িয়ে পড়ে।’ ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপপরিচালক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন জানান, কারখানার ভিতরে দাহ্য পদার্থ থাকার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, কারখানার মালিকপক্ষ জানিয়েছে, ভিতরে কোনো শ্রমিক আটকে নেই।