স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুরঃ
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় যাত্রীবাহী বাস ও সিএনজি চালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারিয়েছেন এক নারী, তার তিন বছরের শিশু সন্তান এবং পরিবারের আরেক সদস্য। দুর্ঘটনায় একই পরিবারের আরও তিনজন গুরুতর আহত হয়ে কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) বিকেল ৩টার দিকে ঢাকা-কাপাসিয়া-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের কাপাসিয়া সদর ইউনিয়নের জামিরারচর পল্লী বিদ্যুৎ সাব-স্টেশন এলাকায় এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতদের সবাই সিএনজি অটোরিকশার যাত্রী ছিলেন।
নিহতরা হলেন—কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা থানার কৃষ্টপুর গ্রামের আবুল কালামের ছেলে মো. তৌহিদুল (২৫), একই থানার কমলবুক গ্রামের মো. তানভীরের স্ত্রী রত্না আক্তার (২৩) এবং তাদের তিন বছর বয়সী শিশু সন্তান শায়ান।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার বিকেলে কিশোরগঞ্জ থেকে দুটি পরিবারের ছয়জন যাত্রী নিয়ে একটি সিএনজি অটোরিকশা গাজীপুর চৌরাস্তার উদ্দেশে রওনা দেয়। পথিমধ্যে জামিরারচরে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা কিশোরগঞ্জগামী অনন্যা ক্লাসিক পরিবহনের একটি বাস (চট্ট. মেট্রো ব-১১-১০৯৪) সিএনজিটিকে মুখোমুখি ধাক্কা দিলে অটোরিকশাটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই নিহত হন যাত্রী তৌহিদুল ও তার শিশু সন্তান শায়ান। স্থানীয়রা দ্রুত উদ্ধার করে আহতদের কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন তাদের। রত্না আক্তারকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে পথেই তার মৃত্যু হয়।
আহত তিনজনই নিহত তৌহিদুলের পরিবারের সদস্য—তার বাবা আবুল কালাম (৫৫), মা তাছলিমা বেগম (৪৫) এবং বোন সুবর্ণা আক্তার (২৫)। তারা সবাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঘটনার পর চালক দ্রুত বাসটি নিয়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ দুর্ঘটনাকবলিত সিএনজিটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছে। সিএনজির চালক আলমগীর হোসেন পলাতক রয়েছেন।
কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মন্ডল জানান, নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘাতক বাস ও সিএনজি চালকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।
এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় কাপাসিয়া জুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।#