বগুড়ার আদমদীঘিতে অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী দুই বন্ধু নিহত এবং তাদের আরেক বন্ধু গুরুতর আহত হয়েছেন। বুধবার রাত ১২টার দিকে উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম রেলগেটে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। নিহতরা হলেন- উপজেলার সান্তাহার ইউপির বামনীগ্রামের মৃত নয়ন হোসেনের ছেলে তৌফিক হোসেন (১৯) ও একই গ্রামের হেলাল হোসেনের ছেলে মারুফ হোসেন (১৯)। এদিকে নিহতদের বন্ধু আহত আকাশও (১৯) একই গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে। বৃহস্পতিবার সকালে সান্তাহার রেলওয়ে থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, দুর্গাপূজা উপলক্ষে মোটরসাইকেলযোগে তিন বন্ধু তৌফিক, মারুফ ও আকাশ উপজেলার ছাতিয়ানগ্রামে ঘুরতে আসেন। রাত ১২টার দিকে তারা ছাতিয়ানগ্রাম বাজার থেকে এক মোটরসাইকেলে তিন বন্ধু বাড়ির দিকে রওনা দেন। পথিমধ্যে ছাতিয়ানগ্রামের অরক্ষিত রেলক্রসিং অতিক্রম করছিলেন।

এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চিলাহাটিগামী ‘চিলাহাটি এক্সপ্রেস’ আন্ত:নগর ট্রেন মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই দুই বন্ধুর মৃত্যু হয়। তাদের অপর এক বন্ধু গুরুতর আহত হয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে বগুড়া শহীদ জিযাউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

খবর পেয়ে সান্তাহার জিআরপি থানা পুলিশ নিহতদের লাশ উদ্ধার করে। ওসি হাবিবুর রহমান জানান, পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে নিহতদের লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে। পথচারী রুহুল আমীন, মিজান রহমান ও শাকিল জানান, সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত সেখানে মাত্র একজন গেটম্যানকে দায়িত্বে দেখা যায়। কিন্তু সন্ধ্যার পর থেকে রাতভর প্রায় ১০-১২টি ট্রেন চলাচল করলেও এই রেলক্রসিং অরক্ষিত থাকে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন রেলক্রসিংটি পারাপার হতে হয়। গেটম্যান হুমায়ন কবির জানান, তার ডিউটি প্রতিদিন সকাল ৬ থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। এরপর থেকে সেখানে আর কেউ থাকেনা। জানতে চাইলে হিলির পিডব্লিউ আই ভবেশ চন্দ্র বলেন, গত পাঁচ বছর ধরে সেখানে একজন গেটম্যান দায়িত্বে রয়েছেন।

তিনি ১২ঘন্টা ডিউটি করে চলে যান। পথচারিদের জন্য সেখানে একটি সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড টাঙানো রয়েছে। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে পথচারিদের নিজ দায়িত্বে ওই রেলগেট পারাপার হতে বলা হয়েছে।