আজ শনিবার হিজরী নববর্ষের মহররম মাসের দ্বিতীয় দিন। মহররম মাস এলেই স্মরণ হয় আনন্দ ও বেদনা ভারাক্রান্ত ঐতিহাসিক ঘটনাবলীর কথা। হৃদয়ের স্মৃতিপটে ভেসে উঠে কারবালার মর্মান্তিক দৃশ্যপট। ইয়াজিদের বর্বরতা আর সীমারের নিষ্ঠুরতার ঘটনায় আজো মানুষ শিউরে ওঠে মর্মবেদনা প্রকাশ করে। ইসলামের ইতিহাসে তারা রচনা করেছিল কলঙ্কজনক অধ্যায়ের। ইসলামের ইতিহাসে মহররম মাস খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। আল্লাহ তায়ালা যে চারটি মাসে যুদ্ধ বিগ্রহ হারাম ঘোষণা করেছেন তার মধ্যে মহররম মাস অন্যতম। এমাসের দশমদিন পবিত্র আশুরা। এদিন রাসূল (সা.) এর দৌহিত্র ইমাম হোসাইন বিন আলী (রা.) সঙ্গী সাথীদের নিয়ে ইয়াজিদের সৈন্যদের হাতে কারবালার মরুপ্রান্তরে নির্মমভাবে শাহাদাত বরণ করেন।
ঐতিহাসিক কাল ধরেই মহররম মাস গুরুত্ব ও তাৎপর্য বহন করে আসছে। রাসূল (সা.) আশুরার গুরুত্ব বর্ণনা করেছেন। তিনি ঐদিন রোজা রাখতেন এবং ঐদিন রোজা রাখতে উৎসাহিত করেছেন। বর্ণিত আছে যে, রাসূল (সা.) আশুরার তাৎপর্য বর্ণনাকালে সাহাবায়ে কেরাম আরজ করেন, তবে কী আল্লাহ তায়ালা এ দিনটিকে সমস্ত দিনের চেয়ে অধিক মর্যাদা দিয়েছেন? রাসূল (সা.) জবাব দিলেন হ্যাঁ। এরপর তিনি এরশাদ করেন, আল্লাহ তায়ালা আসমান জমিন, লওহ, কলম, সাগর পর্বত এই দিনে সৃষ্টি করেছেন। ইসলাম পূর্বকালে বিভিন্ন জাতি বিভিন্ন কারণে এই দিন রোযা রাখতো। হাদীসে এসেছে, হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) মক্কা থেকে মদীনায় হিজরতের পর মদীনার ইহুদীদেরকে আশুরার দিনে রোজা রাখতে দেখে তার কারণ জানতে চাইলেন। ইহুদীরা জবাব দিল, এই দিন আল্লাহ তায়ালা ফেরাউনকে সাগরে নিমজ্জিত করে হযরত মুসা (আ.)কে বিজয়ী করেছেন। তাই এ দিনটিতে রোজা রাখি। এ কথা শুনে রাসূল (সা.) বলেন, তার সাথে আমাদের সম্পর্ক তোমাদের চেয়েও নিবিড়। অতঃপর তিনি সাহাবায়ে কেরামকে এদিন রোজা রাখার নির্দেশ দেন। বর্ণিত আছে যে, আশুরার দিন রোজা রাখলে ইহুদীদের সাথে সাদৃশ্য হয়ে যায় বিধায় রাসূল (সা.) তার পূর্বের বা পরের দিন আরেকটি রোজা রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।