বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সঙ্গীত শিক্ষকের জায়গায় ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সর্বদলীয় ইসলামী শিক্ষা রক্ষা জাতীয় কমিটির সাংবাদিক সম্মেলনে এ দাবি তুলে ধরেন তিনি । এর ব্যতিক্রম হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

প্রাথমিক শিক্ষায় ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ বাধ্যতমূলক করার দাবিতে এ সাংবাদিক সম্মেলন করা হয়। এ সময় সর্বদলীয় ইসলামী শিক্ষা রক্ষা জাতীয় কমিটি ৫ দফা দাবি দিয়েছেন। সেগুলো হলো- প্রতিটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একজন যোগ্য ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া; ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের স্বতন্ত্র প্রক্রিয়া তৈরি; কওমি মাদ্রাসা থেকে দাওরায়ে হাদিস ও আলিয়া মাদ্রাসা থেকে ফাজিল পাস করা ব্যক্তিদের এ পদে নিয়োগ; ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-২০২৫’ সংশোধন করে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের বিধান অন্তর্ভুক্ত এবং অন্য ধর্মাবলম্বীদের জন্য শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা রাখা।

জামায়াত নেতা অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, সমাজে দুর্নীতি, অন্যায়, অবিচার, মাদক, নৈতিক অবক্ষয় দিন দিন বাড়ছে। এর প্রধান কারণ ধর্মীয় শিক্ষার ঘাটতি। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একজন ধর্মীয় শিক্ষক থাকলে শিক্ষার্থীদের ঈমান, আকিদা ও নৈতিকতা শিক্ষা দিতেন। এতে তারা সৎ, আল্লাহভীরু ও চরিত্রবান মানুষ হতো।

তিনি বলেন, গানের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের নাচ-গানের মাধ্যমে সাময়িক আনন্দ দিতে পারেন। নৈতিকতার সঙ্গে তাদের চরিত্র গড়তে পারবেন না। বিজ্ঞান শিক্ষক প্রযুক্তি শেখাতে পারলেও ঈমান শেখাতে পারেন না। ধর্মীয় শিক্ষক শিক্ষার্থীকে জ্ঞানী করার পাশাপাশি তাকওয়াবান ও সৎ নাগরিক হিসেবে গড়তে পারেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন– ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ প্রমুখ।

এদিকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সঙ্গীত শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের দাবির সমালোচনা করেছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, এমন দাবি বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। দেশের সাংস্কৃতিক অধিকারের জন্য ক্ষতিকর বিষয়টি। এমন দাবি ‘সমাজে বিভেদ ও ঘৃণা ছড়ানোর ইচ্ছাকৃত প্রচেষ্টা’ বলেও মনে করছে তারা।