নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রতন নামের এক যুবককে গলা ও হাত-পায়ের রগ কেটে হত্যার পর খালে ফেলে দেওয়া হয়। গত ১৭ জুন উপজেলার ভারগাঁওর ওলামা নগর খালপাড় বেরিবাঁধ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইয়ানুছ (৪০) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। র্যাব বলছে, আসামি এবং ভুক্তভোগী রতন একই এলাকার বাসিন্দা। এলাকায় মাদক ব্যবসার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গলা ও হাত-পায়ের রগ কেটে হত্যা করা হয় ভুক্তভোগীকে। এরপর লাশ ফেলা হয় খালে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিক সম্মেলনে এসব জানান র্যাব-১১ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, গত ১৭ জুন সকালে সোনারগাঁও উপজেলার ভারগাঁও এলাকার ওলামা নগর খালপাড় বেরিবাঁধের পূর্ব পাশ থেকে রতনের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত রতন নারায়ণগঞ্জ জেলার কাঁচপুর এলাকার মালেক মোল্লার ছেলে। তিনি স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সোনারগাঁয়ের নাওড়া বিটা এলাকার দেলোয়ার হোসেনের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। রতনের স্ত্রী বাদী হয়ে সোনারগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যার রহস্য উদঘাটনের জন্য গোয়েন্দা নজরদারি ও সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১১ এবং র্যাব-১৩, যৌথ দল বুধবার কুড়িগ্রামের সদর থানার আরাজী কদমতলা এলাকা হতে হত্যার ঘটনায় জড়িত প্রধান আসামি ইয়ানুছকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। গ্রেপ্তার ইয়ানুছ নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানার বরাব মুগড়াকুল এলাকার মৃত নবুর ছেলে। জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য ও ঘটনার বিবরণ জানিয়ে র্যাব-১১ অধিনায়ক বলেন, আসামি ও ভুক্তভোগী পূর্বপরিচিত। তারা দুজনই একই এলাকার বাসিন্দা ও মাদক ব্যবসায়ী হওয়ায় মাঝে মাঝে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ হতো।
দুই বছর আগে ভুক্তভোগী ও আসামির মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে এবং ভুক্তভোগী আহত হয়। হত্যাকা-ের ১৫ দিন আগে আবারও ভুক্তভোগী ও আসামির মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। আসামি ইয়ানুছ ভুক্তভোগী রতনকে হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকে। পরিকল্পনা অনুযায়ী এজাহারনামীয় ৩ নম্বর আসামি হাসেম (৪০) ও ৪ নম্বর আসামি ইলিয়াছ (৩০) এর সহযোগিতায় গত ১৭ জুন ভুক্তভোগীকে ডেকে নিয়ে মারধর করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করা হয়। এরপর রতনের গলা ও হাত-পায়ের রগ কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে লাশ খালে ফেলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। ঘটনার পর থেকেই ইয়ানুছ কুড়িগ্রামে আত্মগোপন করে। গ্রেপ্তার এড়াতে সে পার্শ্ববর্তী দেশে যাওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল। তার বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানায় একটি হত্যা চেষ্টার মামলাও রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি। উল্লেখ্য, রতন হত্যার এ ঘটনায় মোট ৮ জন অংশ নেয়। যার মধ্যে এখন পর্যন্ত চারজন আসামি হয়েছে।