রাজধানী ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখী জুলাই ঐক্য নামের একটি প্ল্যাটফর্মের মিছিল আটকে দিয়েছে পুলিশ। গতকাল বুধবার বিকেল ৪টার দিকে রাজধানীর বাড্ডার হোসেন মার্কেট এলাকায় মিছিলটি আটকে দেয় পুলিশ। পুলিশ মিছিল আটকে দিলে সেখানে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন জুলাই ঐক্যের নেতা-কর্মীরা। কর্মসূচির অংশ হিসেবে বেলা তিনটার দিকে রামপুরা থেকে জুলাই ঐক্যের সংগঠকদের নেতৃত্বে মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি বিকেল চারটার দিকে বাড্ডার হোসেন মার্কেট এলাকায় পৌঁছালে পুলিশ বাধা দেয়। পরে সেখানেই সড়কে বসে পড়েন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা। এ সময় তাদের দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা; ভারতীয় আধিপত্য, মানি না, মানব না ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়। এ সময় তাদের হাতে ভারতীয় আধিপত্যবিরোধী নানা প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
এর আগে মার্চ টু ইন্ডিয়ান হাইকমিশন কর্মসূচির অংশ হিসেবে বেলা তিনটার দিকে রাজধানীর রামপুরা ব্রিজ থেকে মিছিল নিয়ে হাইকমিশনে উদ্দেশে রওনা দেন জুলাই ঐক্য নেতা-কর্মীরা। এতে প্ল্যাটফর্মটির নেতা-কর্মীসহ কয়েক শ শিক্ষার্থী অংশ নেন। কর্মসূচিতে কয়েকজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু ও জাকসু) একাধিক নেতা, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল-কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
শেখ হাসিনাসহ জুলাই গণহত্যাকারীদের ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি এবং ভারতীয় প্রক্সি রাজনৈতিক দল, সংবাদমাধ্যম ও সরকারি কর্মকর্তাদের অব্যাহত ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে মার্চ টু ইন্ডিয়ান হাইকমিশন কর্মসূচি দেয় জুলাই ঐক্য।
ওসমান হাদির ওপর হামলাকারী ও শেখ হাসিনাকে ফেরত না দিলে হাইকমিশনে ঢুকব
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীদের এবং জুলাই হত্যাকা-ের দায়ে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দ্রুত ফিরিয়ে না দিলে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করেই ভারতীয় হাইকমিশনে ঢুকে পড়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে জুলাই ঐক্য। গতকাল বিকেল পাঁচটার দিকে এ হুঁশিয়ারি দিয়ে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন অভিমুখে মার্চ টু ইন্ডিয়ান হাইকমিশন কর্মসূচি শেষ করেছে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে যুক্ত একাধিক সংগঠনের মোর্চা জুলাই ঐক্য।
জুলাই ঐক্যের সংগঠক ইসরাফিল ফরাজি বলেন, আজকের এই কর্মসূচি ছিল একটি সতর্কবার্তা। আমরা জানতে পেরেছি, ভারত লবিস্ট নিয়োগ করেছে গণহত্যাকারী দল আওয়ামী লীগের জন্য, যারা বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন দলের কাছে যাচ্ছে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের জন্য। বিভিন্ন দেশের দূতাবাস থেকেও একইভাবে আওয়ামী লীগকে ফেরানোর তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
ভারতের সঙ্গে থেকে যারা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে চায়, তাদের সাবধান করে দিয়ে ইসরাফিল ফরাজি বলেন, আজ আমরা থেমে যাচ্ছি, সামনে আমাদের থামানোর ক্ষমতা প্রশাসন দেখাতে পারবে না। আজ আমরা হাজারে এসেছি, সামনে লাখে আসব। শেখ হাসিনাসহ সকল খুনিদের যদি ফিরিয়ে দেওয়া না হয়, তাহলে সামনের দিনগুলো ভারতের জন্য ভালো হবে না।
কর্মসূচিতে জুলাই ঐক্যের সংগঠক ও ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক যুবাইর বিন নেছারী ওরফে এ বি জুবায়ের বলেন, নরেন্দ্র মোদি, (ভারতের প্রধানমন্ত্রী) কান খুলে শুনে রাখো, যদি তোমাদের আগ্রাসন বন্ধ না হয়, যদি আর সীমান্তে গুলি চলে, যদি আমাদের দেশের খুনিদের আশ্রয় দাও, হাসিনাকে ফেরত না দাও; তাহলে তোমাদের আধিপত্যবাদ বন্ধ করার জন্য আমরা যা যা করা দরকার, সেটিই করব।
এ সময় হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে এ বি জুবায়ের বলেন, আজকে আমরা তোমাদের প্রতি আমাদের যে ঘৃণা, সেই ঘৃণা প্রদর্শনের জন্য হাইকমিশন পর্যন্ত এসেছি। আজকে এখানে থেমেছি; যদি তোমরা সংশোধন না হও, তাহলে ভেতরেও (হাইকমিশন) ঢুকব।