সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠী আয়োজিত “জুলাই জাগরণ” ২য় দিনের আয়োজনে মানুষের ঢল নামে। জুলাইয়ের বিশেষ চিত্র প্রদর্শনী, ‘জুলাই বিপ্লব’ ভিত্তিক ডকুমেন্টারি প্রদর্শন, বিপ্লবের গান ও কবিতা, শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধাদের গল্প, নাটক, মাইম ও সংগীত পরিবেশনা দেখতে মানুষের ঢল নামে “জুলাই জাগরণ” নামক এই কালচারাল ফেস্টে। চার দিনব্যাপী এই কালচারাল ফেস্ট “জুলাই জাগরণ” উদ্বোধন করা হয় গত শুক্রবার। আয়োজকরা জানান, জুলাইয়ের স্মৃতি ধরে রাখতে, মানুষের মাঝে জুলাই আন্দোলনের স্পিরিট পুনরজ্জীবিত করতে এ “জুলাই জাগরণ” অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সাধারণ মানুষ মনে করেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী বার্তা তুলে ধরার জন্য এমন চিত্র প্রদর্শনী সত্যিই প্রশংসনীয় উদ্যোগ। “জুলাই জাগরণ” নামের মধ্যেই ইতিহাস আর প্রতিবাদের স্পষ্ট ইঙ্গিত ভবিষ্যতের জন্য দরকার এমন সাহসী শিল্পচর্চা। অভিনন্দন আয়োজকদের। গতকাল শনিবার বিকেল আড়াই টায় রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠী আয়োজিত কালচারাল ফেস্ট “জুলাই জাগরণ” সকাল ১১টায় ১ম অধিবেশন শুরু হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয় এবং তারপর সংগীত পরিবেশন করেন শিশু শিল্পী ফাতিন ইশরাক মাহিরা। আবৃত্তি করেন শিশু আবৃত্তিকার সিদরাতুল মুনতাহা মালাছি।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত হয় জুলাই নিয়ে নির্মিত আজিজ হাকিম এর ফিল্ম “থ্রি নট থ্রি”, বাংলাদেশ সরকারের নির্মিত আবরার ফাহাদ কে নিয়ে নির্মিত ডকুমেন্টারি “অনির্বাণ”, জুলাই আন্দোলনে পেশাজীবী মানুষের অবদান নিয়ে নির্মিত ডকুমেন্টারি। এছাড়াও সংগীত পরিবেশন করেন সওগাত সাংস্কৃতিক সংসদ। দ্বিতীয় অধিবেশনের শুরুতে কুরআন তিলাওয়াত করেন, ডি এম জুবায়ের ইসলাম, সংগীত পরিবেশন করেন সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠীর শিল্পীরা, সন্দীপন শিল্পীগোষ্ঠী ও অন্যান্যরা। ফিল্ম প্রিমিয়ার শো হয় এইচ আল হাদী নির্মিত “সেই একই বিকেল” প্রবন্ধ পাঠ করেন আর যে টুটূল এবং মঞ্চ নাটক পরিবেশন করেন বিকল্প সাহিত্য সাংস্কৃতিক জোট এবং অন্যান্য পরিবেশনা করেন দেশের জনপ্রিয় শিল্পী ও অভিনেতারা। উক্ত আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি নুরুল ইসলাম বুলবুল, উপস্থিত ছিলেন সাইমুমের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম সাদ্দাম, অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন ইনকিলাব মঞ্চ’র মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি এবং আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলি আহসান জুনায়েদ। তাঁরা উভয়ে তাদের বক্তব্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের জোর দেন এবং জুলাই ঘোষনাপত্রে জাতীয় আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ পাবে বলে আশা করেন। হাদি সাইমুমের আয়োজনের প্রশংসা করেন এবং সাইমুমের এই আয়োজনে সকলকে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান। আর জুনায়েদ সাইমুমের উক্ত আয়োজন ঘুরে দেখে প্রতীকী আয়নাঘর নিয়ে বলেন, আপনারা এই প্রতীকী আয়নাঘর দেখে কষ্ট সহ্য করতে, পারছেন না তাহলে ব্যারিস্টার আরমান, আমান আযমীসহ যারা সেখানে ছিল এতোগুলো বছর তারা কতটা কষ্ট সহ্য করেছে। সাইমুমের এই মহা আয়োজনকে বক্তারা ধন্যবাদ জানান। উক্ত আয়োজন আগামী ৪ আগস্ট পর্যন্ত যথারিতি একই শিডিউলে চলবে। আগামীকাল অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ও এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, উপস্থিত থাকবেন দীর্ঘদিন আয়নাঘরে বন্দী থাকা ব্যারিস্টার আহমেদ বিন কাসেম আরমান, বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) আবদুল্লাহিল আমান আযমী এবং শহীদ ওসমানের সম্মানিত পিতা। আজকের পর্বে সঞ্চালনায় ছিলেন আব্দুর রউফ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন “জুলাই জাগরণ” এর পরিচালক এইচ এম আবু মুসা।