দেশীয় লবণ শিল্প রক্ষা এবং লবণ চাষিদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে ১০ দফা দাবিসহ শিল্প ও বাণিজ্য উপদেষ্টার কাছে চিঠি দিয়েছেন কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ।
সম্প্রতি পৃথক পৃথক চিঠিতে তিনি এ দাবি জানান। চিঠিতে তিনি বলেন, মহেশখালী-কুতুবদিয়া অঞ্চলের প্রায় ১০ লাখ মানুষ সরাসরি ও পরোক্ষভাবে লবণ চাষের সাথে জড়িত। এখানকার উৎপাদন বাংলাদেশের সম্পূর্ণ চাহিদা মেটাতে সক্ষম হওয়ায় আমদানির প্রয়োজন পড়ে না। ফলে দেশ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করে। অথচ বর্তমানে লবণ চাষিরা উৎপাদন খরচের তুলনায় অর্ধেক দামে লবণ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। যেখানে মাঠ পর্যায়ের চাষিরা কেজিপ্রতি ৬-৭ টাকায় লবণ বিক্রি করছেন, সেখানে সেই লবণ খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকায়।
তিনি অভিযোগ করেন, লবণ মিল মালিকদের একটি অসাধু সিন্ডিকেট ইচ্ছাকৃতভাবে লবণের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করছে এবং আমদানির পক্ষেও প্রভাব বিস্তার করছে, যা দেশের লবণ-নির্ভর গ্রামীণ অর্থনীতিকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
চিঠিতে উল্লেখিত দাবির মধ্যে রয়েছে: (এক) লবণ আমদানি বন্ধ করে ৩ লাখ মেট্রিক টন রপ্তানির ব্যবস্থা করা। (দুই) উৎপাদন খরচ কমাতে বৈদ্যুতিক মোটর ও জমির লিজমানি সহজলভ্য করা। (তিন) বিসিকের মাধ্যমে আধুনিক প্রশিক্ষণ ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। (চার) লবণের খাতভিত্তিক চাহিদা নিরূপণ করে জাতীয় লবণনীতি-২০২২ সংশোধন। (পাঁচ) লবণ গবেষণা ইনস্টিটিউট ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন। (ছয়) সহজ শর্তে ঋণ এবং কম মূল্যে পলিথিন ও জ্বালানি সরবরাহ। (সাত) ভারত থেকে লবণ আমদানির চক্রান্ত বন্ধ। (আট) লবণের ন্যায্যমূল্য কেজিপ্রতি উৎপাদন পর্যায়ে ১৭ টাকা এবং খুচরা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ৩০ টাকা নির্ধারণ। (নয়) সরকারি বাফার স্টক গঠন। (দশ) আলাদা ‘লবণ বোর্ড’ গঠন।
তিনি বলেন, বিগত বছরে উৎপাদিত লবণের ২২২ লাখ মেট্রিক টন মজুদ রয়েছে, অথচ কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী অতিরিক্ত চাহিদা দেখিয়ে আমদানির অপতৎপরতায় লিপ্ত। এ অবস্থা চলতে থাকলে লক্ষ লক্ষ লবণ চাষির জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, সরকার দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে লবণ শিল্পকে রক্ষা এবং চাষিদের মর্যাদাপূর্ণ জীবন নিশ্চিত করবে।