২০১৩ সালের শাপলা চত্বরের ঘটনায় এবং ২০২১ সালের মার্চ মাসের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে নিহত শহীদ পরিবারগুলোকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। গতকাল শনিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে মোট ৭ কোটি ৭০ লাখ টাকার চেক শহিদ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। স্থানীয় সরকার বিভাগ আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রধান অতিথি হিসেবে এবং ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ডা. আ ফ ম খালিদ হোসেন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, শহীদদের রক্ত কখনো বৃথা যায় না। ঐতিহাসিক শাপলা চত্বর এবং মোদি বিরোধী আন্দোলনে শহীদদের আজকের এই স্বীকৃতি তারই প্রমাণ। তিনি আরও বলেন, শাপলা চত্বরেই খোদাই করে লেখা হবে শহীদদের নাম, যাতে কেউ ইতিহাস থেকে তাদের নাম মুছতে না পারে। শহীদ পরিবারকে স্বীকৃতি দিতে পেরে সরকার গর্বিত উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ইতিহাস থেকে যেনো কেউ ঐতিহাসিক শাপলা চত্বরের শহীদদের নাম মুছতে না পারে, এজন্য শাপলা চত্বরেই খোদাই করে লেখা হবে শহীদদের নাম।
ডা. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, শাপলা চত্বর এবং মোদি বিরোধী আন্দোলনে শহীদদের আর্থিক সহায়তা প্রদান স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার এক ঐতিহাসিক উদ্যোগ। তিনি এই উদ্যোগকে দুই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার স্বীকৃতি প্রদানের সূচনা হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
২০১৩ সালের মে মাসে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে আন্দোলনে আসা সবার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবি জানান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আমলের অন্যতম ফেসাকার ছিল শাপলা চত্বরের হত্যাকা-। আর চব্বিশের জুলাই ও আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান ছিল সব হত্যাযজ্ঞের বহিঃপ্রকাশ।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর মাওলানা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরি আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও উপদেষ্টাকে সাধুবাদ জানান। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার এই মহতী উদ্যোগে সারা বাংলার আলেম সমাজ সম্মানিত হয়েছে। ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, ‘শাপলা চত্বর এবং মোদি বিরোধী আন্দোলনে শহীদদের আর্থিক সহায়তা প্রদান স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এক ঐতিহাসিক উদ্যোগ।
২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞে শহীদ ৫৮ টি পরিবার এবং ২০২১ সালের মার্চ মাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি দমনে পরিচালিত হত্যাকা-ে শহীদ ১৯টি পরিবারের সদস্যদের মাঝে পরিবার প্রতি ১০ লাখ টাকা করে, মোট ৭ কোটি ৭০ লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয়।
২০১৩ সালের শাপলা চত্বরের হত্যাযজ্ঞ এবং ২০২১ সালের মোদি বিরোধী বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাকা-ে শাহাদতবরণকারী শহীদ পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে আন্তরিক সাধুবাদ জানিয়ে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মাওলানা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, ‘স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার এই মহতী উদ্যোগে সারা বাংলার আলেম সমাজ সম্মানিত হয়েছে।’
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান ভূঁইয়া মঞ্জু, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা সাজিদুর রহমান এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া।