আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য ও শান্তিপূর্ণ দেখতে চায় যুক্তরাজ্য। তারা বর্তমান নির্বাচন কমিশনের পদক্ষেপে সন্তুষ্ট এবং সিইসিকে স্বাগত জানিয়েছে।

গতকাল সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক এ প্রত্যাশার কথা জানান। এর আগে তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেন।

বৈঠক শেষে সারাহ কুক বলেন, ‘সিইসির সঙ্গে খুব ভালো বৈঠক হয়েছে। আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘোষণা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে কয়েক মাস আগে এবং আজ সিইসিকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাজ্য।’

বৈঠকের আলোচনা প্রসঙ্গে হাইকমিশনার বলেন, ‘আমাদের খুব ভালো আলোচনা হয়েছে। আমি আগামী বছর বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য যুক্তরাজ্যের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছি। যুক্তরাজ্য নির্বাচন কমিশন এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রচেষ্টার প্রশংসা করে।’

হাইকমিশনার জানান, নির্বাচন প্রসঙ্গে নাগরিকদের শিক্ষিত করা নিয়ে প্রকল্পে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে যুক্তরাজ্যও সহযোগিতা করছে। বিশেষ করে দেশের দুর্বল গোষ্ঠীগুলো এবং পোলিং কর্মীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এ সহযোগিতা করা হচ্ছে। সুতরাং, বৈঠকের আলোচ্যসূচি ছিল নির্বাচন কমিশনকে যুক্তরাজ্যের সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করা।

সাংবাদিকেরা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের বিষয়ে প্রশ্ন করলে হাইকমিশনার বলেন, ‘আমি অন্য আর কোনো কথা বলবো না। যেমনটা বলেছি, যুক্তরাজ্য আগামী বছর অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে সমর্থন করছে।’

অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন চাচ্ছেন না- ফের প্রশ্ন করলে কোনো উত্তর না দিয়ে চলে যান সারাহ কুক।

এর আগে গত ১০ মার্চ সিইসির সঙ্গে বৈঠকে যুক্তরাজ্য আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক দেখতে চায় বলে জানিয়েছিলেন হাইকমিশনার।

এছাড়া গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনও অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার আকাক্সক্ষার কথা জানিয়েছিল দেশটি।

নির্বাচনে ১৫০ পর্যবেক্ষক পাঠাতে চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫০ জন পর্যবেক্ষক পাঠাতে চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণার পর থেকে গেজেট প্রকাশ করা পর্যন্ত ইইউ টিম থাকতে চায়। ভোটের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখতে চায় তারা।

পাশাপাশি সার্বক্ষণিক নির্বাচনের সার্বিক বিষয়ে মূল্যায়ন করতে চায় দলটি। এ জন্য ইইউ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্বাক্ষর হবে।

গতকাল সোমবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ইইউ এর প্রাক-নির্বাচনী বিশেষজ্ঞ দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ তথ্য জানান ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।

তিনি বলেন, পর্যবেক্ষকদের সবাই একসঙ্গে আসবেন না। তারা তফসিল ঘোষণার পর বিভিন্ন সময় আলাদা আলাদাভাবে ভাগ হয়ে আসবেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি টিম আমাদের সঙ্গে দেখা করে গেছেন। একটি অ্যাসেসমেন্ট টিম হিসেবে আমাদের সঙ্গে স্বাক্ষাৎ করে গেছেন। উনারা কয়েকটি বিষয়ে ক্লারিফিকেশন চেয়েছেন তারা আমাদের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করবেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সভা হবে। প্রতিনিধি দলের ১৫০ জন সদস্য আসবেন।

আখতার আহমেদ আরও বলেন, তারা জানতে চেয়েছেন ভোট কেন্দ্রে তারা ঢুকতে পারবেন কি না, ভোট কেন্দ্রের গোপন কক্ষে ঢুকতে পারবেন কি না, ভোট কাউন্টিংয়ের সময় থাকতে পারবেন কি না। শিডিউল ঘোষণার পর থেকে তারা বিভিন্ন সময়ে এই প্রতিনিধি দল আসতে চান। নির্বাচনের শেষ পর্যন্ত থাকবে গেজেট হওয়া পর্যন্ত কীভাবে রেজাল্ট প্রকাশ করা হয় সেটাও দেখতে চান। আমাদের কাজের অগ্রগতি নিয়ে টিমটি সন্তোষ প্রকাশ করেছে। আমাদের ভোটার তালিকা আপডেটসহ নানা কাজের বিষয়ে তারা জানতে চাইলেন। নতুন ভোটারদের নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে খুশি তারা। তারা সব কিছু দেখে গেছেন সামনে একটা দল আবারও আসবে বলেও জানান তিনি।