# তরুণীকে ধর্ষণের আলামত মেলেনি, হিন্দু যুবক গ্রেফতার
# খাগড়াছড়ি অশান্ত করার চেষ্টা করেছে ফ্যাসিস্টরা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
# বড় ইস্যু বানানো হচ্ছে কেন, প্রশ্ন আইজিপির
# সহিংসতা পরিকল্পিত, দাবি সেনাবাহিনীর
নাছির উদ্দিন শোয়েব: কোনো কারণ ছাড়াই পাহাড়ে পরিকল্পিতভাবে অস্থিরতা তৈরি করে সহিংস ঘটনা ঘটানো হয়েছে। প্রতি বছরই কোনো না কোনো অযুহাতে একটি চক্র পাহাড়কে অস্থির করে তোলে। গত কয়েকদিন ধরে খাগড়াছড়ির সংঘর্ঘের ঘটনাটিও পরিকল্পিত। সেনাবাহিনী, পুলিশ ও গোয়েন্দা তথ্যে জানা গেছে- খাগড়াছড়ি জেলায় মারমা সম্প্রদায়ের অষ্টম শ্রেনীর যে ছাত্রীর ধর্ষণের অভিযোগে কয়েকদিন ধরে যে সহিংসতা সৃষ্টি করা হয়েছে আসলে সেখানে এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। ওই মারমা তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত মেলেনি। ধর্ষণকা-ে অভিযুক্ত পাঁচজনের মধ্যে দুজন হিন্দু, একজন মারমা এবং দুজন চাকমা সম্প্রদায়ের। এরই মধ্যে তাদের একজন নয়ন শীলকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। অথচ অভিযোগটির বাঁক ঘুরিয়ে কয়েকটি পাহাড়ি সন্ত্রাসী সংগঠনকে দিয়ে পরিস্থিতি ভিন্নদিকে নেওয়ার জোর তৎপরতা চালানো হয়েছে। তাদের উসকানিতে এলাকায় মসজিদ ভাঙচুর ও সেনাক্যাম্পে হামলার মতো ঘটনাও ঘটেছে। সংঘর্ষে ৩ জন নিহত এবং সেনা কর্মকর্তাসহ আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, প্রতিবেশী দেশ ও ফ্যাসিবাদের দোসরদের ইন্ধনে খাগড়াছড়িতে অস্থিরতা তৈরি করা হয়েছে । এদিকে পাহাড়ি কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের পরও কেন ইস্যুটি বড় করা হচ্ছে; তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। অন্যদিকে সেনা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান মাহমুদ খাগড়াছড়িতে সাম্প্রতিক সহিংসতার জন্য ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টকে (ইউপিডিএফ) দায়ী করে বলেছেন, ধর্ষণের ঘটনাকে পুঁজি করে পাহাড়ে বহিরাগত দিয়ে দেশীয় ও অটোম্যাটিক অস্ত্রে ফায়ারিং করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনও বলেছে- যা হচ্ছে তা পরিকল্পিত এবং বড় কোনো শক্তির ইন্ধনে সংহিংসতা সৃষ্টি করে অস্থিরতা সৃষ্টির অপচেষ্টা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, পতিত ফ্যাসিবাদি আওয়ামী লীগের দোসরেরা দেশকে অস্থিতিশীল করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে নানামুখী চক্রান্ত অব্যাহত রেখেছে। বিশেষ করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে অঘটন ঘটানো সর্বোপরি আগামী জাতীয় নির্বাচন ভন্ডুল করার যে দেশ-বিদেশি ষড়যন্ত্র তার ধারাবাহিকতায় তিন পার্বত্য জেলায় নাশকতার ছক কষা হচ্ছে। খাগড়াছড়ি জেলায় কথিত একটি ধর্ষণের ঘটনাকে পুঁজি করে ওই চক্রটি রীতিমতো রাষ্ট্রঘাতি অপকর্মে লিপ্ত হওয়ার অপচেষ্টায় মেতে উঠেছে। তারা পাহাড়ি জনপদে রক্তাক্ত সংঘাতের চক্রান্ত করছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর আক্রমণ, বাড়ি ঘরে হামলা, ভাঙচুরের মতো ভয়ঙ্কর অপরাধে লিপ্ত হয়েছে তারা। তবে তাদের চরম উসকানির মধ্যেও জননিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সুরক্ষায় দেশ প্রেমিক সেনাবাহিনীসহ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ধৈর্য্যরে সাথে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে। রাষ্ট্রবিরোধী এসব অপতৎপরতার বিরুদ্ধে পাহাড়ের বাসিন্দারাও ঐক্যবদ্ধ। কপিতয় সন্ত্রাসীর রাষ্ট্রবিরোধী অপকর্মের বিরুদ্ধে তারাও সোচ্চার হচ্ছে। জানা গেছে, যেকোনো অসিলায় মাঠে নেমে তারা পার্বত্য জনপদকে পরিস্থিতির বাঁক ঘুরিয়ে দেয়। নিয়ে আসে পার্বত্যাঞ্চল থেকে সেনাবাহিনীর সদস্যদের সরানোর দাবিনামা। এবারও ব্যতিক্রম নয়। গত বছরও এ মাসটিকেই বাছাই করেছিল তারা। ২০২৪ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে মোটরসাইকেলচালক মামুন হত্যাকে কেন্দ্র করে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট-ইউপিডিএফ এবং এর অঙ্গসংগঠনগুলো দীঘিনালা ও রাঙামাটিতে সাম্প্রদায়িক অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা করে। জড়ায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে। ওই ঘটনার এক বছর পূর্তির মতো এ বছরও খাগড়াছড়িতে অনুরূপ ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটানোর চেষ্টা।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্য: হিন্দু ধর্মালম্বীদের শারদীয় দুর্গাপূজা যেন ভালোভাবে করতে না পারে সেজন্য ফ্যাসিস্টরা খাগড়াছড়ি অশান্ত করার চেষ্টা করেছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে খাগড়াছড়ি ইস্যু নিয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে বর্তমানে খাগড়াছড়ির পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এর আগে, সোমবার জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছিলেন, প্রতিবেশী দেশ ও ফ্যাসিবাদের দোসরদের ইন্ধনে খাগড়াছড়িতে অস্থিরতা তৈরি করা হচ্ছে । তিনি বলেন, কিছু সস্ত্রাসী পাহাড়ের ওপর থেকে গুলি করেছে। এসব অস্ত্র বাইরের দেশ থেকে আসে। এই সমস্যাকে প্রতিহত করতে সবার সাহায্য সহযোগিতা দরকার।
আইজিপিরও প্রশ্ন : পাহাড়ি এক কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের পরও কেন ইস্যুটি বড় করা হচ্ছে; তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। মঙ্গলবার পুলিশ সদর দপ্তরে সাংবাদিক সম্মেলনে এ প্রশ্ন তোলেন তিনি। আইজিপি বলেন, পাহাড়ের ঘটনাটি ধর্ষণের ঘটনা দিয়ে শুরু। এ ক্ষেত্রে স্পেসিফিক যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে, মামলা হয়েছে। তারপরও কেন এটাকে নিয়ে এত বড় ইস্যু বানানো হচ্ছে। কারা করছে আমাদের বোধগম্য নয়। সম্প্রতি খাগড়াছড়িতে এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর এর প্রতিবাদে জুম্ম ছাত্র-জনতা অবরোধের ডাক দেয়। অবরোধ কর্মসূচি চলাকালেই গত রোববার বিক্ষোভ ও সহিংসতায় রণক্ষেত্র পরিণত হয় খাগড়াছড়ির গুইমারার রামেসু বাজার। এক পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে অবরোধকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
যা বলেছেন সেনাবাহিনী: খাগড়াছড়ির সংঘর্ষকে পরিকল্পিত দাবি করেন সেনা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান মাহমুদ এটিকে ভবিষ্যতে বড় ধরনের পরিকল্পনার অংশ। দেশের বাইরের একটি শক্তির ইন্ধনে, এখানকার একটি আঞ্চলিক সংগঠন পার্বত্য অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে বলেও প্রমাণ পেয়েছে সেনাবাহিনী। সমানের দিনগুলোতে কঠোর অবস্থানে যাওয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন তারা। সেনাবাহিনী জানায়, সামনে দেশে গুরুত্বপূর্ণ সময়। এ সংঘর্ষ ভবিষ্যতে বড় ধরনের পরিকল্পনার অংশ বলেও দাবি তাদের। সেনাবাহিনীর দাবি, পুরো পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থির করার ষড়যন্ত্র করেছে একটি পক্ষ। গতকাল মঙ্গলবার খাগড়াছড়ি সেনানিবাসে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে খাগড়াছড়ি রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান মাহমুদ বলেন, বহিঃশক্তি অথবা এখানকারই একটি মহল তাদের পেছন থেকে সহযোগিতা করছে। সর্বোপরি ইপিডিএফ সবাইকে বোঝানোর চেষ্টা করছে যে, একমাত্র তারাই এখানে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করবে। আমরা এই ইপিডিএফ এবং তারুণ্যের সংগঠনগুলোকে সব সময় আহ্বান জানাই যে, পরিস্থিতি শান্ত রাখুন এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সব সময় এ অঞ্চলকে স্থিতিশীল রাখার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। খাগড়াছড়ি সদরের জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল খাদেমুল ইসলাম বলেন, আমরা সজাগ আছি এবং তাদের আমরা যেমন নস্যাৎ করেছি, ভবিষ্যতে খাগড়াছড়ি সদরে যদি কোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হয়, সেনাবাহিনী কঠোর হস্তে তা দমন করার জন্য প্রস্তুত। অবরোধ শিথিল হলেও খাগড়াছড়ির বিভিন্ন উপজেলা ও ঢাকা, চট্টগ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ এখনও বন্ধ। আটকে আছে যাত্রী ও পণ্যবাহী শত শত যানবাহন। এখনও পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় জেলার নিদির্ষ্ট এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি রাখা প্রয়োজনÑ বলছে প্রশাসন। এদিকে, দুর্গাপূজা উৎসব ও অবরোধ শিথীল করায় পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে খাগড়াছড়িতে, খুলেছে কিছু কিছু দোকানপাট। আতঙ্ক থাকলেও কাজের তাগিদে ঘর ছেড়ে বাইরে আসছেন মানুষ। খাগড়াছড়িতে মোড়ে মোড়ে কড়া পাহারায় সেনাবাহিনী, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সড়কে টহল, চেকপোস্টে তল্লাশির পাশাপাশি, ঝুঁকিপূর্ণ পাড়াগুলো ঘিরে সতর্ক অবস্থায় সবাই। অবরোধ পরিস্থিতি কিছুটা শিথিল করায় গত দুই দিনের চেয়ে পরিস্থিতির খানিকটা উন্নতি হয়েছে। খুলছে কিছু দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। আতঙ্ক কাটিয়ে জরুরি প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হচ্ছেন স্থানীয়রা।
ঘটনার সূত্রপাত যেখান থেকে- গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাত আনুমানিক ১০টার দিকে খাগড়াছড়ি জেলায় মারমা সম্প্রদায়ের একজন অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী প্রাইভেট পড়া শেষে বাড়ি ফেরার পথে কয়েকজন দুর্বৃত্তের হাতে অপহরণের শিকার হয়ে ধর্ষিত হয় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে ওই স্কুল ছাত্রীকে মেডিকেল পরীক্ষা করলে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। এই জঘন্য ঘটনায় জড়িত মূল আসামি শয়ন শীলকে বৃহস্পতিবার সকালে সেনাবাহিনীর সদর জোনের সহযোগিতায় পুলিশ গ্রেফতার করে। আদালতে হাজির করে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। বাকি অপরাধীদের ধরতে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সমন্বিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এই দ্রুত পদক্ষেপ জনগণের নিরাপত্তা রক্ষায় সেনাবাহিনীর অগ্রণী ভূমিকার প্রমাণ বহন করে। ঘটনাটির সত্যতা বিচারে আইনি প্রক্রিয়া চলমান। শয়ন শীলকে গ্রেপ্তার করা সত্ত্বেও ইউপিডিএফের অঙ্গসংগঠন পিসিপির নেতা উখ্যানু মারমা ‘জুম্ম ছাত্র-জনতার’ ব্যানারে গত ২৪ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল এবং প্রতিবাদী মানববন্ধনের ডাক দেন। এর ধারাবাহিকতায় ২৫ সেপ্টেম্বর ইউপিডিএফের আহ্বানে খাগড়াছড়িতে অর্ধবেলা হরতাল পালন করা হয়। একই সময় দেশে-বিদেশে অবস্থানরত ব্লগার এবং পার্বত্যাঞ্চলের কিছু ব্যক্তি অনলাইনে বাঙালিদের উদ্দেশ্য করে বিভিন্ন রকম অপপ্রচার ও উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া শুরু করে। পরিকল্পনা মতো, ২৬ সেপ্টেম্বর ইউপিডিএফ কর্মী উখ্যানু মারমার নেতৃত্বে এবং সামাজিক মাধ্যমে দেশি ও প্রবাসী ব্লগারসহ পার্বত্য জেলার কিছু ব্যক্তির উসকানিমূলক প্রচারণা। এর জেরে গোটা খাগড়াছড়িতে উত্তেজনা। অবরোধ চলাকালে এক পর্যায়ে ইউপিডিএফের প্ররোচনায় উচ্ছৃঙ্খল এলাকাবাসী টহলরত সেনা দলের ওপর ইটপাটকেল ছোড়ে।
এমন উসকানির মধ্যেও সেনাবাহিনী ধৈর্য, সংযম ও মানবিকতার দৃষ্টান্ত দেখিয়ে বল প্রয়োগে যায়নি। ২৭ সেপ্টেম্বর ইউপিডিএফ এবং অঙ্গসংগঠনের কর্মীরা আবারও দাঙ্গা-হাঙ্গামা বাধানোর চেষ্টা চালায়। বিভিন্ন জায়গায় বাঙালিসহ সাধারণ মানুষের ওপর গুলী চালায়। ভাঙচুর, অ্যাম্বুল্যান্সে আক্রমণ, রাস্তা অবরোধসহ নাশকতাও বাদ দেয়নি। খাগড়াছড়ি পৌরসভা এলাকার আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটাতে তারা সক্ষম হয়। দিনেদুপুরে পাহাড়ি-বাঙালির মধ্যে দাঙ্গা বাধিয়ে দেয়। অবস্থা বিবেচনায় জেলা প্রশাসন খাগড়াছড়ি ও গুইমারা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে। এর পরও হাল ছাড়ছে না মতলববাজরা। খাগড়াছড়ি পৌরসভা এলাকায় দাঙ্গা বাধাতে না পেরে ২৮ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলার রামসু বাজার এলাকায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সাধারণ জনগণকে উসকে দেয়। অবরোধ করে গুইমারা-খাগড়াছড়ি রাস্তা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয়। লিপ্ত হয় বাঙালি জনগোষ্ঠীর সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায়। এ পর্যায়ে সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে তারা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র, ইটপাটকেল, গুলতি ও লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘবদ্ধভাবে সেনাবাহিনীর ওপর হামলা চালায়। রামগড় এলাকায় বিজিবির গাড়ি ভাঙচুর করে এবং বিজিবি সদস্যদের আহত করে। এক পর্যায়ে সেনাবাহিনীর টহল দল দ্রুত সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের ধাওয়া করে। গত কয়েক দিনের ঘটনা পর্যবেক্ষণে স্পষ্ট, ইউপিডিএফ হাল ছাড়ছে না। এরপরও ইউপিডিএফ কথিত ধর্ষণের এই ঘটনাকে পুঁজি করে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের অংশ হিসেবে উপজাতীয় সম্প্রদায়ের একটি অংশকে উত্তেজিত করার চেষ্টা করছে। সামাজিক মাধ্যমে মিথ্যা প্রচারণা ও উস্কানিমূলক সেøাগান যেমন ‘পাহাড় থেকে সেনা হটাও’ প্রচার করে তারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট ও পাহাড়ের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।