অন্তর্বর্তী সরকার যে রূপরেখা তৈরি করেছে, সে অনুযায়ী নির্বাচন হবে, তা সেনাবাহিনীও চাইছে। তারা মনে করছে, নির্বাচন হলে দেশের স্থিতিশীল অবস্থা আরও ভালো হবে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। গতকাল বুধবার দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা বলেছেন জেনারেল অফিসার কমান্ডিং, সদর দপ্তর আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড (জিওসি আর্টডক) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাইনুর রহমান।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। ওই সময়ে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে নির্বাচন কমিশন।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাইনুর রহমান বলেন, দেশের জনগণের মতো সেনাবাহিনীও চায়, সরকারের রূপরেখা অনুযায়ী একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। সে রূপরেখার মধ্যে সময়সীমাও দেওয়া আছে। আমরা আশা করি, নির্বাচন হলে দেশের স্থিতিশীলতা আরও ভালো হবে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে আরও স্বাভাবিক হবে এবং সেনাবাহিনী তখন সেনানিবাসে ফিরে যেতে পারবে। আমরা সেদিকে তাকিয়ে আছি। মো. মাইনুর রহমান বলেন, গত ১৫ মাস যে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে সেনাবাহিনী; এটা সহজ পরিস্থিতি ছিল না। এ ধরনের পরিস্থিতি বাংলাদেশ প্রতিদিন ফেস করেনি। এ জন্য আমরাও চাই, একটা সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক এবং আমরা সেনানিবাসে ফেরত আসতে পারি। নির্বাচনী কাজে সহায়তায় সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি তুলে ধরে এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, সরকার এখন পর্যন্ত নির্বাচনের যেটুকু রূপরেখা প্রণয়ন করেছে, সেটার ওপর ভিত্তি করে সেনাবাহিনী যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। আমাদের যে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম এখন সীমিত আকারে চলছে। তার মধ্যে নির্বাচনের সময় আমাদের কী করণীয়, সেটাকে ফোকাসে রেখেই প্রশিক্ষণ করছি।

১৫ মাস ধরে সেনাসদস্যদের একটি অংশ ব্যারাকের বাইরে থাকায় প্রশিক্ষণ বিঘিœত হচ্ছে জানিয়ে লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাইনুর বলেন, নির্বাচন পর্যন্ত বা তার কিছুটা পরেও যদি বাইরে থাকতে হয়, তাহলে আরও কিছুদিন বাইরে থাকতে হবে। এতে করে আমাদের প্রশিক্ষণ বিঘিœত হচ্ছে। বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করে যাওয়া সেনাবাহিনীকে নিয়ে নানা অপপ্রচার চলছে দাবি করে মো. মাইনুর রহমান বলেন, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে সেনাবাহিনী এখন আরও বেশি ঐক্যবদ্ধ। যে দায়িত্ব সেনাবাহিনীকে দেওয়া হয়েছে, সেটা সেনাবাহিনী পালন করবে।

সেনা কর্মকর্তা মাইনুর রহমান বলেন, ৫ আগস্টের পরবর্তী পরিস্থিতির দিকে একটু ফিরে তাকান। ১৫ বছর যে আবেগের বহিঃপ্রকাশ ঘটানো যায়নি, সেনাবাহিনী এই সময়ের মধ্যে কুমিল্লা, নোয়াখালীর বন্যা, বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে সড়ক অবরোধসহ...আমরা না থাকলে অবনতি কতটা হতো, সেটি কেউ ধারণাও করতে পারবেন না।