কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন অব বাংলাদেশে (কেআইবি) অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে প্রশাসক আবদুর রব খানের অপসারণ দাবি করেছে এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এ্যাব) নেতারা। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে সংগঠনটির নেতারা এ দাবি জানান। সাংবাদিক সম্মেলনে এ্যাব আহ্বায়ক ড. কামরুজ্জামান কায়সার সার্বিক বিষয়ে আলোচনা করেন। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সদস্য সচিব শাহাদত হোসেন বিপ্লব। এছাড়াও ছিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন চঞ্চল, এ্যাব সদস্য (দপ্তরের দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. জামশেদ আলম প্রমুখ।

সম্মেলনে শাহাদত হোসেন বিপ্লব জানান, দেশের প্রায় ৩৫ হাজার কৃষিবিদের জাতীয় সংগঠন কেআইবি দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে স্বৈরাচারীভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে। বিগত সরকারের অনুসারী নেতারা পালিয়ে যাওয়ার পর সমাজসেবা অধিদপ্তর কেআইবিতে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য গত ২০ জানুয়ারি আবদুর রব খানকে ৯০ দিনের জন্য প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয়; কিন্তু তিনি দায়িত্ব পালন না করে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারে জড়িয়ে পড়েন।

শাহাদত হোসেন বিপ্লব বলেন, সমাজসেবা অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রশাসকের কোনো উন্নয়ন, নিয়োগ বা চাকরিচ্যুতি করার এখতিয়ার নেই। কিন্তু আবদুর রব খান এসব নিয়ম ভেঙে কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন ও নিয়োগ বাণিজ্যে লিপ্ত হয়েছেন। কোটেশন ছাড়া অতিরিক্ত ব্যয় দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ, নিজস্ব লোক নিয়োগ, বিলাসবহুল বেতন ও ভাতা গ্রহণসহ নানা অনিয়মে তিনি জড়িয়ে পড়েছেন। নির্বাচনের কোনো উদ্যোগ না নিয়ে উল্টো মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করছেন, যা কেআইবির গঠনতন্ত্র পরিপন্থি।

সংবাদ সম্মেলনে এ্যাব নেতারা জানান, সাধারণ কৃষিবিদরা এ অনিয়মের প্রতিবাদে দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন এবং সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও সমাজকল্যাণ উপদেষ্টার কাছে লিখিতভাবে প্রশাসকের অপসারণ দাবি জানিয়েছেন। এ্যাবও কেআইবিতে গণতান্ত্রিক ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে একাত্মতা প্রকাশ করেছে।

এ্যাবের নেতারা জানান, সোমবার সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাইদুর রহমান খানের সঙ্গে বৈঠক করে তারা অবৈধ প্রশাসকের নিয়োগ নবায়নের বিরোধিতা করেন। মহাপরিচালক তাদের আশ্বস্ত করেন যে তিন দিনের মধ্যে সিনিয়র কৃষিবিদদের সঙ্গে আলোচনা করে নতুন প্রশাসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এবং ততদিন পর্যন্ত বর্তমান প্রশাসকের মেয়াদ বাড়ানো হবে না। কিন্তু রাতেই তাদের বিরুদ্ধে ভাঙচুর ও অরাজকতার মিথ্যা মামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন নেতারা। তারা বলেন, কেআইবি আমাদের সংগঠন, কৃষিবিদদের অর্থে গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠান। এটিকে রক্ষা করা আমাদের অধিকার ও দায়িত্ব। অথচ এখন আমাদের বিরুদ্ধেই মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।

এ্যাবের নেতারা জরুরি ভিত্তিতে বর্তমান প্রশাসকের নিয়োগ বাতিল, কেআইবির আর্থিক অনিয়ম তদন্তে স্বাধীন কমিটি গঠন এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে গঠনতন্ত্র মোতাবেক নির্বাচন তফসিল ঘোষণার দাবি জানান।