তোফাজ্জল হোসাইন কামাল : আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ভোটকেন্দ্রগুলোতে বডিওর্ন ক্যামেরা ব্যবহারের যে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার, তার বাস্তবায়ন হবে ভোটকেন্দ্রে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে। তারাই এ ক্যামেরা ইউনিফর্মের সঙ্গে ব্যবহার করবেন। ক্যামেরা পরিচালনার জন্য তাদেরকে প্রশিক্ষিত করে গড়ে তোলা হবে। যাতে করে নির্বাচনের দিন সকল প্রকার চিত্র তারা ওই ক্যামেরায় ধারণ করতে পারেন, কেন্দ্রে পাঠাতে পারেন। এ কাজগুলো করার জন্যই ৫২০ জন মাস্টার ট্রেইনার তৈরি করেছে পুলিশ সদর দফতর। পুলিশ টেলিকম ইউনিট এই প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এখন মাস্টার ট্রেইনারগণ সারাদেশে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারসহ ১৩০টি ভেন্যুতে দেড়লাখ পুলিশ সদস্যকে বডিওর্ন ক্যামেরা ব্যবহারের নানা দিক প্রশিক্ষণ দেবেন। তফশিল ঘোষণার আগেই এই প্রশিক্ষণ শেষ হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দপ্তর ৪৩ হাজার ভোটকেন্দ্রে বডিওর্ন ক্যামেরা ব্যবহারের পরিকল্পনা নিয়েছে। এর সঙ্গে বড় ধরনের আর্থিক সংশ্লেষ রয়েছে। অর্থের সংস্থানের ওপর নির্ভর করছে কতটা কেন্দ্রে বডিওর্ন ক্যামেরা ব্যবহার করা যাবে। এ ব্যাপারে যে সিদ্ধান্তই হোক না কেন পুলিশ সদর দপ্তর বডিওর্ন ক্যামেরা ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজটি এগিয়ে রাখছে।

জানতে চাইলে পুলিশ টেলিকমের ডিআইজি (এঅ্যান্ডঅ্যাফ) মো. রফিকুল হাসান গনি গতকাল দৈনিক সংগ্রামকে বলেন, তারা ইতোমধ্যে মাস্টার ট্রেইনারদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শেষ করেছেন। এখন মাস্টার ট্রেইনারগণ জেলা পর্র্যায়ে নির্ধারিত ভেন্যুতে পুলিশ সদস্যদের বডিওর্ন ক্যামেরা ব্যবহারের নানা দিক প্রশিক্ষণ দেবেন।

জানা গেছে, বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশের কাছে ১০ হাজার বডিওর্ন ক্যামেরা রয়েছে। এগুলো ইতোমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় ব্যবহার হচেছ। এসব ক্যামেরা দিয়ে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দিয়ে পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষিত করা হবে। ভোটকেন্দ্রের যে কোনো ঘটনার দৃশ্য এ ক্যামেরায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে রেকর্ড হয়ে যাবে। এ ছাড়া ভোটকেন্দ্রের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে তাৎক্ষণিক পক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ভোট গ্রহণকালে পুলিশ সদর দপ্তরের কমান্ড সেন্টার থেকে বডিওর্ন ক্যামেরা দিয়ে সরাসরি ভোটকেন্দ্রের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। প্রতিটি বডিওর্ন ক্যামেরার ভেস্টের সঙ্গে জিপিএস ট্রাকিং ডিভাইস লাগানো থাকবে। এজন্য ভেন্ডরদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে পুলিশ সদর দফতর। লক্ষ্য উন্নতমানের বডিওর্ন ক্যামেরা জাতীয় নির্বাচনে ব্যবহার করা।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, ভোটকেন্দ্রের যে কোনো ঘটনার বিতর্ক সমাধানে সহায়ক হতে পারে বডিওর্ন ক্যামেরা। ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া সরাসরি রেকর্ড করার মাধ্যমে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার কাজটিও করা যাবে। বডিওর্ন ক্যামেরার মেমোরি কার্ডে যেকোন ঘটনার ফুটেজ প্রমান (অ্যাভিডেন্স) হিসেবে সংরক্ষিত থাকবে। প্রয়োজন অনুযায়ী সেই ফুটেজ কাজে লাগাতে পারবেন সংশ্লিষ্টরা।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, ভোটকেন্দ্রের যে কোনো ঘটনার বিতর্ক সমাধানে সহায়ক হতে পারে বডিওর্ন ক্যামেরা। ভোট কেন্দ্রের ভেতরে-বাইরে যেকোন ঘটনার ফুটেজ অ্যাভিডেন্স হিসেবে বডিওর্ন ক্যামেরার মেমোরি কার্ডে সংরক্ষিত থাকবে। প্রয়োজন অনুযায়ী সেই ফুটেজ কাজে লাগাতে পারবেন সংশ্লিষ্টরা।