কোনো ভুল সিদ্ধান্তের কারণে যেন ফ্যাসিবাদ পুনর্বাসনের সুযোগ না পায়, সে বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচন আসন্ন। কোনো আবেগতাড়িত বা ভুল সিদ্ধান্তে যাতে চরমপন্থা বা ফ্যাসিবাদ পুনর্বাসিত হওয়ার সুযোগ না পায়, সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে গণঅভ্যুত্থানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অবদান ও শহীদদের স্মরণে আয়োজিত স্মরণসভায় ভার্চুয়ালি বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, কারও রাজনৈতিক অভিলাষ পূরণের প্রধান মাধ্যম হওয়া দরকার জনগণের রায়। রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করা না গেলে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে নির্বাচন আয়োজন সম্ভব কি না, সেই প্রশ্ন তৈরি হয়। সম্প্রতি কিছু নৃশংস ঘটনা ঘটেছে। এগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের সক্ষমতাকে ক্ষেত্রবিশেষে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

জুলাই আন্দোলনের কথা স্মরণ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, একাত্তরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা যেভাবে জনগণের কাছে স্মরণীয় হয়ে আছেন, ২৪ সালের শহীদরাও একইভাবে স্মরণীয়-বরণীয় হয়ে থাকবেন। গত বছর কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হলেও ১৬ তারিখের পর তা আর কোটায় সীমাবদ্ধ ছিল না। চূড়ান্ত বিশ্বাস জন্মেছিল, মাফিয়া সরকারের পতন সময়ের ব্যাপার। সেই বিশ্বাস থেকেই সকল গণতান্ত্রিক দল পরিকল্পনা করেছিল। এই আন্দোলন যাতে একক দলের আন্দোলন হিসেবে পরিচিতি না পায়, সেটি নিশ্চিত করা হয়েছিল।

২০১৪ সালে কোটা ব্যবস্থার সমালোচনা করেছেন বলে জানান তারেক রহমান। তিনি বলেন, গণ-অভ্যুত্থানে বীর শহীদরা জাতির গৌরব। শহীদদের কাঙ্খিত বাংলাদেশ গড়ার মধ্য দিয়ে তাদের প্রতি সম্মান জানানোর সুযোগ তৈরি হয়েছে। তাদের কাঙ্ক্ষিত রাষ্ট্র বিনির্মাণের প্রথম শর্তই হলো জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা। যার জন্য এমন পরিবেশ তৈরি জরুরি। যেন মানুষ তার পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে পারে।

অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশে গণতন্ত্রের সংকট দেখা যাচ্ছে, এজন্য সকলকে সজাগ থাকতে হবে। তিনি বলেন, সংগ্রাম শেষ হয়নি। সামনে গণতন্ত্রের যে সংকট দেখা যাচ্ছে সেই সংকট থেকে উত্তরণ করতে হলে আমাদেরকে অনেক সজাগ-সর্তক থাকতে হবে।

মির্জা আব্বাস বলেন, আজকে আমাদের রাজনৈতিক এই অবস্থার মধ্য থেকে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা ইনশাল্লাহ এটাকে আমরা রোধ করব।

অধ্যাপক তৌফিকুল ইসলাম মিথিলের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, বিএনপির জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি পালন কমিটির আহ্বায়ক রুহুল কবির রিজভী, সদস্য সচিব অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক আব্দুল হান্নান চৌধুরী বক্তব্য রাখেন। এছাড়া ছাত্র দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাথার সভাপতি আবু হোরায়রা, গণঅভ্যুত্থানের শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ, ইমতিয়াজ আহমেদ আবির, সাজ্জাদ হোসেন, সাজ্জাদ হোসেন সজলের স্বজনবৃন্দ, গণঅভ্যুত্থানে আহত আল মিরাজসহ অনুষ্ঠানের আয়োজক কমিটির নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।