রাজধানীর গুলশানে নিজেদের ক্রয় করা ফ্ল্যাট কীভাবে দখলের অভিযোগে মামলা হয় তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপি নেতা গিয়াস কাদের চৌধুরীর বড় ছেলে সামির কাদের চৌধুরী। গত সোমবার ফারজানা আন্না ইসলামের দায়েরকৃত মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই প্রশ্ন তুলেন তিনি।
সামির কাদের চৌধুরী বলেন, ২০০৫ সাল প্রায় ২০ বছর আগে আমরা এই ফ্ল্যাটটি ডেভেলপার কোম্পানি (সামসুল আলামিন রিয়েল এস্টেট লিমিটেড) থেকে ক্রয় করেছি। তখন এই বাড়িটির নাম ছিলো ওয়াটার ফ্রন্ট.. এখন পরিবর্তন করে ফেলেছে। ২০ বছর ধরে উনার (ফারজানা আন্না ইসলাম) কাছে ডকুমেন্টেশন, বানোয়াট এগুলো উনি খেয়াল করেননি, এখন উনার খেয়াল আসছে। আর খেয়াল আসার পরে উনি বিল্ডিংয়ের ভেতরে আছি আর আমরা বাইরে আছি, হাউ ভেরি আনফরচুনেট।
সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম জিয়াদুর রহমানের আদালতে শিল্পপতি মাইনুল ইসলামের স্ত্রী ফারজানা আন্না ইসলাম ফ্ল্যাট দখলের অভিযোগ এনে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর দুই ছেলে সামির কাদের চৌধুরী ও শাকির কাদের চৌধুরীসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ‘সামসুল আলামিন রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের’ প্রোপ্রাইটার আরেফিন সামসুল আলম, মেরিনা ইরশাদ, কেশব চন্দ্র নাথ, হারুন অর রশীদ, ফেরদৌস মুনসি, শাহাবুদ্দিন ও ছালাউদ্দিন আব্বাছি নামে আরও সাতজন রয়েছেন আসামি তালিকায়। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্ত করে এক মাসের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দিতে বলেছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গুলশানের মডেল টাউন এলাকায় ছয় তলা ভবন নির্মাণে আরেফিন সামসুল আলমের সঙ্গে ২০০৬ সালে মাইনুল ইসলাম ও ফারজানা আন্না ইসলাম দম্পতি চুক্তিপত্র করেন। ২০০৭ সালের ১৯ ডিসেম্বর তারা বাড়ি বুঝে পান। পরের বছর ২০০৮ সালের ২৪ মার্চ মারা যান মাইনুল ইসলাম। তার মৃত্যুর পর সামসুল আলম অন্য আসামিদের নিয়ে ফ্ল্যাট দখলের চেষ্টা করতে থাকেন। আসামিরা জাল দলিল তৈরি করে বাড়ির দ্বিতীয় তলার সম্পূর্ণ ফ্লোর দখলের চেষ্টা করেন।
সামির দাবি জানিয়ে বলেন, আমরা চাই, এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হোক। আর আমরা আমাদের ফ্ল্যাটে এই মুহুর্তে ঢুকতে চাই। এটা তো আমাদের প্রোপার্টি, আমরা আমাদের প্রপোর্টিতে কেনো ঢুকতে পারব না? আমরা বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়েছি, থানায় অবহিত করা আছে। আমি শিগগিরই আমাদের প্রপোর্টিতে গিয়ে আমাদের ফ্ল্যাটের রিনোভেশনের কাজ চালু করতে চাচ্ছি।
গুলশানে নাভানা টাওয়ারে ‘কিউসি’ অফিসে এই সাংবাদিক সম্মেলন হয়। সংবাদ সম্মেলনে সামির কাদেন চৌধুরীর ছোট ভাই সাকির কাদের চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন।
সামির কাদের বলেন, যে মামলাটা হয়েছে এটা কমপ্লিট একটা বানোয়াট মামলা। উনি কী উদ্দেশ্যে মামলা করেছেন এটা চিন্তার বিষয়, এটা পেছেনে কোনো না কোনো ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। তিনি বলেন, আমরা ফার্স্ট ফ্লোরে আছি। আমাদের সাথে এই সংবাদ সম্মেলনে আছেন উনারা সেকেন্ড ফ্লোরে আছেন। ২০২২ পর্যন্ত ওই বিল্ডিং আমাদের একটি কোম্পানি ‘রেডিও আমার’ এর অফিস অপারেশনে ছিলেন। এরপর আমরা ওইটা বিল্ডিং এর যে পরিস্থিতি হয়ে গেছে আমি নিজে পার্সোনালি গত চার বছরে ওই বিল্ডিং এই পর্যন্ত যাইনি, আমার ভাই বোধহয় আরো বেশি সময় ধরে ওখানে যাননি।