ঈদুল আজহা সামনে রেখে রাজধানী ছাড়ছে মানুষ। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ কাটাতে গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকেই কমলাপুর রেলস্টেশনে উপচেপড়া ভিড়। ট্রেন ছাড়ার নির্ধারিত সময়ের অনেক আগে থেকেই যাত্রীরা স্টেশনে জড়ো হচ্ছেন। অনেকেই হাতে-পিঠে ব্যাগ নিয়ে অপেক্ষা করছেন ট্রেনের ঘণ্টা বাজার জন্য। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন রাখতে রেলওয়ের পক্ষ থেকে বাড়তি ট্রেনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
রেলওয়ের নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী, মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে পাওয়া যাচ্ছে পশ্চিমাঞ্চলগামী ট্রেনের টিকিট এবং দুপুর ২টা থেকে বিক্রি শুরু হবে পূর্বাঞ্চলগামী ট্রেনের টিকিটের। যাত্রীসেবায় স্বচ্ছতা ও সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে এবারও শতভাগ আসন অনলাইনে ছাড়া হচ্ছে।
রেল কর্তৃপক্ষ জানায়, ঈদের পর সাত দিনের ফিরতি ট্রেন যাত্রার জন্য বিশেষভাবে অগ্রিম টিকিটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৯ জুনের টিকিট ছাড়া হয়েছে ৩০ মে, ১০ জুনের ৩১ মে, ১১ জুনের ১ জুন, এবং ১২ জুনের টিকিট ছাড়া হয়েছে ২ জুন। এরপরের টিকিট—আগামীকাল বুধবার বিক্রি হবে ৪ জুন এবং ১৫ জুনের জন্য ৫ জুন পাওয়া যাবে। এই বিশেষ ব্যবস্থার আওতায় নেওয়া টিকিট ফেরত দেওয়া যাবে না। এক যাত্রী একবারে সর্বোচ্চ চারটি টিকিট কিনতে পারবেন এবং একাধিক আসনের টিকিট কেনার ক্ষেত্রে সহযাত্রীদের নাম দিতে হবে।
জানা গেছে, ঈদুল আজহায় পরিবার-পরিজনের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। অনেকের ছুটি আগে হওয়ায় সড়কপথে যানজট এড়াতে আগেই বাড়ি ফিরছেন। তবে স্বাভাবিক দিনের চেয়ে কিছুটা চাপ বাড়লেও ঈদকেন্দ্রিক চাপ এখনো শুরু হয়নি। পরিবহণ মালিকরা আশা করছেন, আজ বুধবার থেকে আরও বাড়বে। এদিকে সোমবার রাজধানী ছেড়ে যাওয়া বিভিন্ন ট্রেনেও যাত্রীর বাড়তি চাপ লক্ষ করা গেছে। কমলাপুর ও বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে এদিন ভিড় সাধারণ দিনের তুলনায় কিছুটা বেশি ছিল।
এদিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ঈদ যাত্রায় ফিটনেসবিহীন কোনো গাড়ি চলতে দেয়া হবে না। অনেক সময় দেখা যায় ফিটনেসবিহীন গাড়িগুলো মালিকপক্ষ রং করে রাস্তায় নামান। ফিটনেসবিহীন কোনো গাড়ি কোনো অবস্থায় রাস্তায় চলতে দেয়া হবে না।
তিনি আরও বলেন, ডাকাতি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ঈদ যাত্রায় ডাকাতি ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে পরিবহণে যাত্রী উঠানোর ক্ষেত্রে প্রতিটি স্টপেজ থেকেই সকল যাত্রীদের ছবি তুলতে হবে। অনেক সময় যাত্রীর ছদ্মবেশে অনেক ডাকাত বাসে উঠে পড়ে। এ সমস্যা এড়াতে দূরপাল্লার সকল পরিবহণে যাত্রীদের ছবি নেয়া হবে। বাসের প্রথম স্টপেজ থেকে শেষ স্টপেজ পর্যন্ত যারা উঠবে সকলের ছবি নিতে হবে।
উপদেষ্টা বলেন, প্রতিটি বাসে তিনজন করে স্টাফ থাকে। যদি কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সম্ভাবনা থাকে তাহলে তারা সাথে সাথেই মালিকপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে যোগাযোগ করবে।