যশোরের চৌগাছায় গ্রেপ্তারের পর বন্দুকযুদ্ধের নাটক সাজিয়ে ছাত্রশিবিরের দুই নেতাকে গুলী করার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় এসআই আকিকুল ইসলামসহ তিন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে আরও তিন মাস সময় দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার এ দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল-১। এ দিন প্রসিকিউশনের পক্ষে এ মামলার তদন্ত শেষ করতে আরও তিন মাস সময় আবেদন করা হয়। পরে তা মঞ্জুর করে থেকে নতুন দিন ধার্য করেন চেম্বার আদালত।
এ মামলায় গ্রেপ্তার অন্য আসামিরা হলেনÑ চৌগাছা থানার তৎকালীন কনস্টেবল সাজ্জাদুর রহমান ও কনস্টেবল জহরুল হক। তাদের গতকাল সকালে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ। গত ২৯ সেপ্টেম্বর এই তিন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেল। ওই দিন ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর আবদুস সাত্তার পালোয়ান। তিনি এ মামলায় গ্রেপ্তার তিন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন। পরে তা মঞ্জুর করেন আদালত। এর আগে, ১০ সেপ্টেম্বর সাজ্জাদুরকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। ওই দিন তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ। ৯ সেপ্টেম্বর আকিকুলকে গ্রেপ্তার করে হাজির করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে যশোরের চৌগাছা থানা এলাকায় মোটরসাইকেলে যাওয়ার পথে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নেওয়া হয়। এরপর ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে পরিচয় জানার পর তাদের সঙ্গে ‘চুক্তি’ হয়। চুক্তি অনুযায়ী দুজনকে আদালতে হাজিরের কথা ছিল। কিন্তু আগের দিন রাতে তাদের চোখ বেঁধে অন্য স্থানে নিয়ে দুই হাঁটুতে বন্দুক ঠেকিয়ে গুলী করা হয়। তবে বন্দুকযুদ্ধে গুলী হয়েছে উল্লেখ করে আদালতে তোলা হয়। পরে শুনানি শেষে তাদের দুজনকে কারাগারে পাঠান আদালত। এ ছাড়া চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুই শিবির নেতারই পা কেটে ফেলতে হয়। ওই ঘটনাকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে বিবেচনায় নেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। এরই অংশ হিসেবে চৌগাছার ঘটনাটি নিয়ে ট্রাইব্যুনালে মামলা করা হয়।