সন্দেহজনকভাবে মালদার ২২ বছর বয়সী যুবক শেখ আমিরকে আটক করে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে ভারত। ব্যবসার কাজে বাংলাদেশে আসা ব্যবসায়ী পবন কুমার দাস তাকে আবিষ্কার করেন। এ নিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়, বাংলাদেশের ঘুমরায় ব্যবসার কাজে গিয়েছিলেন পবন কুমার দাস। গোজাডাঙা সীমান্তের ওপারে রাস্তার ধারে কান্নায় ভেঙে পড়া এক যুবককে দেখে থমকে গেলেন তিনি। মালদার ২২ বছর বয়সী যুবক শেখ আমির তিনি। তিনি কাজের খোঁজে রাজস্থানে গিয়েছিলেন।

কিন্তু তাকে বাংলাদেশি সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়। তারপর দুই মাস জেল খাটেন। এরপর তাকে সেখান থেকে সীমান্ত পার করে বাংলাদেশে ঠেলে দেয়া হয়। আমিরের পরিবারের দাবি, তার কাছে আধার কার্ড ছিল। কিন্তু ভোটার কার্ড ছিল না। রাজস্থান পুলিশ তার পরিচয়পত্র মানেনি। মোবাইল ফোনও বাজেয়াপ্ত করে। এখন তিনি পুরোপুরি নিঃস্ব। এক সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন খাবার ও টাকার অভাবে। পবন দাসই প্রথম তাকে খাবার দেন। থাকার ব্যবস্থা করেন। একটি ভিডিও ধারণ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেন। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ায় বিষয়টি নজরে আসে কালিয়াচক থানার পুলিশ ও পশ্চিমবঙ্গ অভিবাসী শ্রমিক কল্যাণ বোর্ডের। তারা এখন আইনি প্রক্রিয়ায় আমিরকে ফেরানোর চেষ্টা করছে।

পবন দাস টেলিফোনে টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, কত সময় লাগবে ওকে মালদায় ফেরাতে? মানুষের কি বিন্দুমাত্র সহানুভূতি নেই? দুই দিন ধরে ও এক দানা ভাতও খায়নি, আমিই ওকে খাওয়াই। ভিডিওটা কালিয়াচকের কয়েকজন বন্ধুকে পাঠিয়েছিলাম, তারাই ওর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। আমিরকে আপাতত পবনের বাংলাদেশি ব্যবসায়ী সহযোগীর কাছে রাখা হয়েছে। তবে পবন দাসের আশঙ্কা, যদি বাংলাদেশের প্রশাসন তাকে ‘অবৈধ অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে গ্রেফতার করে তাহলে পরিস্থিতি জটিল হতে পারে।

আমিরের পিতা জিয়েম শেখ কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, পবন সাহেব না থাকলে আমি ছেলের খবরই পেতাম না। তিনি না শুধু খবর দিয়েছেন, ওকে খাওয়ালেন, আশ্রয় দিলেন। আল্লাহ তাকে রহম করুন। পবন দাস অবশ্য নিজে কৃতিত্ব নিতে নারাজ। তিনি বলেন, আমি যা করেছি, তা মানবিক দায়িত্ব। আসল সাহায্য হবে যদি আমিরকে শিগগির দেশে ফিরিয়ে আনা যায়।