সামনের নির্বাচনে দেশ সেবার সুযোগ পেলে দুর্নীতির শেকড় কেটে দেওয়ার অঙ্গীকার করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, আমরা সেবা করতে চাই। আমরা দায়িত্ব পালন করতে চাই। আল্লাহ পাকের ইচ্ছা এবং দেশের মানুষের সমর্থনে ক্ষমতায় গেলে মানুষের সেবা করবো। অবস্থান যাই হউক। জাতির মেরুদ- ঠিক করবো সবার আগে। শিক্ষাই জাতির মেরুদ-। যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে গণসংবর্ধনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বক্তব্যের শুরুতে তিনি নিরাপত্তার বিষয় টেনে বলেন, আমার দেশ ঘরে বাইরে কর্মস্থলে সব জায়গাতে নিরাপদ হওয়া লাগবে। আমরা এমন একটি দেশ চাই যেখানে লুটতরাজ থাকবে না। সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবো। আমাদের সভ্য দেশগুলোর সাথে বন্ধুত্ব রাখবো তবে কারো সাথে বড়ভাই বা দাদার মতো সম্পর্ক রাখবো না। বিশ^ দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবো।

তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশটাকে আরও সুন্দরভাবে দেখতে চেয়েছিলাম। বাংলাদেশে ধর্মবর্ণ বৈষম্য নাই। শ্রেণি-বৈষম্য আছে। রাজার হস্তে কাঙ্গালের ধন চুরি করে। আমরা দেখছি দেশের সম্পদ লুট করার জন্য বিপুল সংখ্যক মাছচাষি হয়ে গেছে। নমিনেশন জমা দেওয়ার সময় যে সম্পদ থাকে পরে দেখা যায় একশ’ ২২গুণ পর্যন্ত সম্পদ বেড়ে যায়। তারা মাছ চাষ করে বড়লোক হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে থেকে আপনারা দেশ গড়ার কাজ করেন। দেশে থেকে আপনারা কেন পারেন না প্রশ্ন রাখেন ডা. শফিকুর রহমান। কুরআনকে জীবন ব্যবস্থা উল্লেখ করে বলেন, সেখানে বিস্তারিত বিধান দেওয়া আছে। এই কুরআন মানুষকে সম্মানের আসনে বসিয়েছে। সমাজকে সম্মানের আসনে বাসিয়েছে। কুরআনকে কল্যাণের জন্য দেওয়া হয়েছে। কুরআনকে অমান্য করলে অপমানিত হওয়া লাগে।

জামায়াতে ইসলামের আমীর বলেন, আমাদের প্রথম বাবা আদম আলাইহে সালাম। মাতা হাওয়া আলাইহে সালাম। আমরা মানুষ। যখন যেখানে কোন মানুষ মজলুম হবে আমাদের দায়িত্ব হবে তার পাশে দাঁড়ানো। কিন্তু আমরা কি দেখছি। আমাদের চোখের সামনে সব সভ্যতা উলটপালট হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বিশ^াস করে দেশের প্রতি আমাদের দায়িত্ব রয়েছে। শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে চাই। ১৫ বছর নির্যাতন চালানো হয়েছে। ১১ জন বিচারের নামে হত্যা করা হয়েছে। বাড়িঘর বুলডোজার দিয়ে ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। চাকরি থেকে বিতারিত করা হয়েছে। ধন সম্পদ লুণ্ঠন করা হয়েছে। পিতাপুত্রকে একসাথে দুপুরের খাবার খেতে দেওয়া হয় নি।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমাদের জীবন থেকে চলে গেছে ১৫ বছর। এরপরও ৫ আগস্টে পরিবর্তন আসার পর বললাম হিংসা চারিতার্থ করা যাবে না। কেউ প্রতিশোধ নিবেন না। আমাদের আহ্বানে দেশ শৃঙ্খলায় চলে আসে। আমরা শহীদ পরিবারের কাছে গিয়েছি। শান্তনা দিয়েছি। সহায়তা করেছি। আমরা বলেছি ছোটরা পরিণত না হওয়া পর্যন্ত আমরা দায়িত্ব নিয়েছি। এসময় তিনি দায়িত্ব নেওয়া বিভিন্ন পরিবারের ঘটনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এসব পরিবারের দায়িত্ব আমরা পালন করছি এখনো। কারণ শহীদদের জীবন উৎসর্গ করার কারণেই আজ অনেকে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে।

আমরা সেবা করতে চাই। আমরা দায়িত্ব পালন করতে চাই। আল্লাহ পাকের ইচ্ছা এবং দেশের মানুষের সমর্থনে ক্ষমতায় গেলে মানুষের সেবা করবো। অবস্থান যাই হউক। জাতির মেরুদ- ঠিক করবো সবার আগে। শিক্ষাই জাতির মেরুদ-। এই শিক্ষায় শিক্ষিতরা দেশগড়ার কারিগর হবে। বেকার দেখবো না বাংলাদেশে। দেশবাসীর ভালবাসা পেলে দেশের চেহারা বদলে দেবো। দেশে ধর্মের ভেদাভেদ থাকবে না। যোগ্যতার বিচার হবে। দুর্নীতি দূর করবো। কারণ দুর্নীতি ক্যান্সারের মতো। দুর্নীতির শিকড় কেটে দিবো। আমরা আপস করবো না। এসব কাজে প্রবাসীদের পাশে চান ডা. শফিকুর রহমান।

এসময় বিদেশে পাচার হওয়া বিপুল পরিমাণ অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনার অঙ্গীকার করেন জামায়াতে ইসলামীর আমীর।