ঈদ উপলক্ষ্যে রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছেন দেশের নানান অঞ্চলের ঘরমুখো মানুষ। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকেই ঢাকার কমলাপুর রেল ষ্টেশন, বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড ও কাউন্টারে খোজ নিয়ে জানা গেছে , ভিড় এড়াতে আগেই পরিবারের সদস্যদের পাঠিয়ে দিচ্ছেন চাকরিজীবীরা।

তারা জানান, ঈদের ছুটি শুরু হলেই যাবেন চাকরিজীবীরা। তবে, সেই ভিড়ে পরিবার নিয়ে দুর্ভোগ এড়াতেই আগেভাগে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বাড়ি পাঠাচ্ছেন তারা। পাশাপাশি এখন পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে না বলেও জানান তারা। তবে অগ্রিম টিকিটের ক্ষেত্রে ভাড়া কিছুটা বেশি গুনতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন কেউ কেউ। তবে, বাস কাউন্টার কর্তৃপক্ষ জানান, এখন পর্যন্ত যাত্রীর চাপ তেমন নেই। ফলে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের সুযোগও নেই।

ধুমকেতু এক্সপ্রেস। সকাল ৬টায় কমলাপুর স্টেশন থেকে গন্তব্য রাজশাহীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। অন্যান্য দিনের মতো গতকাল সকালেও ঠিক সময়ে ঈদে ঘরে ফেরা মানুষদের নিয়ে ধুমকেতু এক্সপ্রেসের যাত্রার মধ্যদিয়ে দ্বিতীয় দিনের ঈদযাত্রা শুরু। সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ১১টি ট্রেন কমলাপুর স্টেশন ছেড়ে গেছে নিজ নিজ গন্তব্যে। এখনও ছাড়ার অপেক্ষায় আছে তিতাস কমিউটার, জামালপুর এক্সপ্রেস, একতা এক্সপ্রেস ও রুপসি বাংলা এক্সপ্রেস।

প্রতিবারের মতো এবারও আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের যাতায়াতে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ঈদযাত্রাকে নিরাপদ, স্বাচ্ছন্দ্যময় ও উৎসবমুখর করতে প্রস্তুত করা হয়েছে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। টিকিট কাউন্টার, প্ল্যাটফরমসহ সব জায়গায় রয়েছে র্যাব, পুলিশ, আনসার সদস্যের পাশাপাশি রেলওয়ের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী।

এবারের ঈদ যাত্রার প্রথম দিনে দুটি ট্রেন কিছুটা বিলম্বে ছাড়লেও দ্বিতীয় দিনে চিত্র পাল্টেছে। সকাল থেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে যথা সময়েই ছাড়ছে ট্রেন। কোনো বিলম্ব না থাকায় স্বস্তির কথা জানাচ্ছেন যাত্রীরা। তারা বলছেন, এভাবেই যেন ট্রেনে ভোগান্তিহীন যাত্রা চলে শেষ দিন পর্যন্ত। স্টেশন কর্তৃপক্ষ বলছে, আগাম প্রস্তুতি থাকায় যাত্রায় কোনো সমস্যা হবে না।

স্টেশনে আসা জামালপুর এক্সপ্রেসের যাত্রী সাফওয়ান বলেন, ট্রেনের টিকিট কাটতে ভোগান্তি হলেও যাত্রায় ভোগান্তি থাকে না। সবার মতো আমিও অনলাইনে টিকিট কেটেছিলাম, শঙ্কা ছিল শিডিউল বিপর্যয় হয় কি না। এখন স্টেশনে এসে দেখি আগেই ট্রেন দুই নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে আছে। নিশ্চয়ই ভালো হবে।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, অন্যান্য বছর ঈদযাত্রায় ৮ থেকে ১০ জোড়া বিশেষ ট্রেন চালাতো বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এবার সেটি কমিয়ে ৫ জোড়া করা হয়েছে। তাছাড়া প্রতিদিনের যাত্রায় কোনো ভোগান্তি যেন না হয় এজন্য আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। আমরা যাত্রীদের সেবায় সর্বোচ্চ দিয়ে কাজ করছি। কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছালে সে ট্রেন ছাড়ায় কোনো বিলম্ব হবে না।