বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল, গোপালগঞ্জে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারীদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে ফ্যাসিস্টের দোসররা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছে। যারা আওয়ামী লীগের পেটুয়া বাহিনী হিসেবে বিগত ১৫ বছর কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করে নামমাত্র তাদেরকে এক থানা থেকে আরেক থানায়, এক জেলা থেকে আরেক জেলায় বদলি করা হয়েছে। কার্যত তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

গতকাল বুধবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় ১৯ জুলাইয়ের জাতীয় সমাবেশ উপলক্ষে জামায়াতে ইসলামীর গণসংযোগ ও প্রচার মিছিল পূর্বক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় তিনি আরও বলেন, যাদের নেতৃত্বে জাতি ফ্যাসিবাদের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছে সেই ছাত্র নেতাদের পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচিতে প্রশাসনের দুর্বল ভূমিকা সন্দেহভাজন। সেখানে দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অনতিবিলম্বে এনসিপি নেতাদের উপর হামলাকারী নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করার দাবি জানান নূরুল ইসলাম বুলবুল।

তিনি বলেন, ৫ আগস্ট পরবর্তী জামায়াতে ইসলামী বারবার দাবি জানিয়ে আসছে রাষ্ট্র সংস্কার, গণহত্যার বিচার করে সব দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের। কিন্তু একটি দল সংস্কার ও গণহত্যার বিচার এড়িয়ে গিয়ে শুধু নির্বাচন-নির্বাচন করেছ। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী ১ বছরেও রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার ও গণহত্যার বিচার নিশ্চিত না হওয়ায় ফ্যাসিস্টের দোসররা মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে। এরই অংশ হিসেবে গোপালগঞ্জে এনসিপি নেতাদের উপর হামলা চালিয়ে তাদের সমাবেশের মঞ্চ ভাংচুর করার সাহস দেখিয়েছে। এখনই ফ্যাসিস্টের দোসরদের দমন করতে হবে। নয়তো সরকার এই দায় এড়াতে পারবে না।

নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ৭ দফা জামায়াতে ইসলামীর দলীয় দাবি নয়, গণমানুষের দাবি। ‘বিগত ১৭ বছরের প্রতিটি হত্যাকান্ডের বিচার, রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার, জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন, শহীদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসন, পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন, প্রবাসীদের ভোট প্রদানের ব্যবস্থা এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিরকরণের’ এই ৭ দফা আদায় হলেই মানুষের অধিকার আদায় হবে, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মিত হবে। তাই তিনি ৭ দফা দাবি আদায়ে দেশবাসীকে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

কদমতলী উত্তর থানা আমীর আব্দুর রহিম জীবনের সভাপতিত্বে জামায়াতে ইসলামী (ঢাকা-৫ আসন) উদ্যোগে গণসংযোগ ও প্রচার মিছিল পূর্বক সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি ঢাকা-৫ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মোহাম্মদ কামাল হোসাইন। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যাত্রাবাড়ী পূর্ব থানা আমীর শাহজাহান খান, যাত্রাবাড়ী মধ্য থানা আমীর এডভোকেট এ.কে আজাদ, যাত্রাবাড়ী থানা আমীর অধ্যক্ষ সাদিক বিল্লাহ, যাত্রাবাড়ী উত্তর থানা আমীর জাকির হোসাইন, যাত্রাবাড়ী পশ্চিম থানা আমীর মাওলানা আবুল হোসেন, যাত্রাবাড়ী দক্ষিণ থানা আমীর নওশেদ আলম ফারুক সহ স্থানীয় দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ। প্রেসবিজ্ঞপ্তি।