চট্টগ্রামভিত্তিক আলোচিত শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমের নামে তিন ব্যাংকে থাকা আরও ৫৩টি হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছে আদালত। এসব হিসাবে ১১৩ কোটি ৯ লাখ ৮২ হাজার ৮৬৮ টাকা রয়েছে বলে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের আবেদনে বলা হয়েছে। সংস্থার উপপরিচালক তাহাসিন মুনাবীল হকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের এ আদেশ দেন। দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মো. তানজির আহমেদ এ তথ্য দিয়েছেন।

মোহাম্মদ সাইফুল আলম, যিনি এস আলম নামে বেশি পরিচিত তার ব্যাংক হিসাব জব্দের আবেদনে দুদক বলেছে, তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের অর্থ অন্যত্র ‘হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত’ করার চেষ্টা করছেন তিনি। অনুসন্ধান শেষ হওয়ার আগে এসব সম্পদ হস্তান্তর বা স্থানান্তর হয়ে গেলে পরবর্তীতে তা উদ্ধার করা দুরূহ হয়ে পড়বে। এজন্য এসব ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা আবশ্যক বলে মনে করে দুদক।

অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এ সরকারের সময় সুবিধা পাওয়া ও ব্যাংক খাতে অনিয়ম-দুর্নীতির জন্য আলোচিত ব্যবসায়ী এস আলমের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। ইতোমধ্যে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এস আলম ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে। তার ছেলের বিরুদ্ধেও দুটি মামলা হয়েছে। ২৪ জুন এস আলমের সাইপ্রাসে থাকা দোতলা বাড়ি জব্দের আদেশ দিয়েছে আদালত। এছাড়া ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জে স্ত্রী ফারজানা পারভীনসহ তার মালিকানায় থাকা ১৯ কোম্পানির শেয়ার ও জার্সিতে থাকা ছয়টি ট্রাস্ট কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়। গত বছরের ৭ অক্টোবর এস আলম ও তার স্ত্রী ফারজানা পারভীনসহ পরিবারের ১২ সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয় আদালত। চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের ৩ হাজার ৫৬৩ কোটি ৮৪ লাখ ২১ হাজার টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দেওয়া হয়। এরপর ৩ ফেব্রুয়ারি ৩৬৮ কোটি ২৫ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যের ১৭৫ বিঘা সম্পদ জব্দের আদেশ দেয় আদালত। ১২ ফেব্রুয়ারি ৪৩৭ কোটি ৮৫ লাখ ২ হাজার ২৭৪ টি শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ আসে। এসব শেয়ারের মূল্য ৫ হাজার ১০৯ কোটি টাকা। ২৩ ফেব্রুয়ারি তাদের ৮ হাজার ১৩৩ কোটি ৫৬ লাখ ৭২ হাজার টাকা মূল্যের শেয়ার অবরুদ্ধ করা হয়। ১০ মার্চ এস আলমের এক হাজার ছয় বিঘা জমি জব্দের আদেশ দেন আদালত। ৯ এপ্রিল তার ৯০ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দেওয়া হয়। একইদিন আদালত তার ঘনিষ্ঠজনদের নামে থাকা ৩৭৪ টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দেয়। ১৭ এপ্রিল এস আলম ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের নামে থাকা এক হাজার ৩৬০টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়।