উপসচিব পদে ২৬৮ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এবার নতুন করে ৩০তম বিসিএসের কর্মকর্তাদের এ পদে পদোন্নতির জন্য বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। এই ব্যাচের কর্মকর্তারা ২০২২ সালে চাকরির ১০ বছর পূর্ণ করে পদোন্নতির অপেক্ষায় ছিলেন। এর মাধ্যমে প্রশাসনে বড় পদোন্নতি দিয়েছে সরকার।

গত বছরের গণঅভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে প্রশাসনসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যাপকভাবে পদোন্নতি দেওয়া শুরু হয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, গত বছরের ৮ আগস্ট থেকে চলতি বছরের ৪ আগস্ট পর্যন্ত উপসচিব পদে ১৪১ জন, যুগ্ম সচিব পদে ৪২৪ জন, অতিরিক্ত সচিব পদে ১৪৯ জন, গ্রেড-১ পদে ২৬ জন এবং সচিব বা সিনিয়র সচিব পদে ৪৫ জনসহ মোট ৭৮৫ জন কর্মকর্তাকে নিয়মিত পদোন্নতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে সচিব পদে ১১৯ জন, গ্রেড-১ পদে ৪১ জন, অতিরিক্ত সচিব পদে ৫২৮ জন, যুগ্ম সচিব পদে ৭২ জন এবং উপসচিব পদে চারজনকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। একই সময়ে সচিব বা সিনিয়র সচিব নয়জন, গ্রেড-১ পদে একজন এবং অতিরিক্ত সচিব পদে ১৯ জনকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। উপসচিব থেকে সচিব পর্যন্ত ১৬৪ জন কর্মকর্তা কর্মকাল শেষে স্বাভাবিক অবসরে গেছেন। সম্প্রতি অন্যান্য ক্যাডারের ‘বঞ্চিত’ ৭৮ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ‘ভূতাপেক্ষ’ পদোন্নতির সুপারিশ করেছে পর্যালোচনা কমিটি।উপসচিব পদে ২৬৮ জনকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপনে এই পদোন্নতি দেওয়া হয়। এর মধ্যে একটি প্রজ্ঞাপনে ২৬২ জন এবং আরেকটি প্রজ্ঞাপনে বিদেশে কর্মরত ছয়জনের পদোন্নতি সিদ্ধান্ত রয়েছে।

এদিকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ২৬৮ জন কর্মকর্তাকে উপসচিব পদে পদোন্নতি দেয়ার পর তথ্য (সাধারণ) ক্যাডারে ব্যাপক হতাশা দেখা দিয়েছে। তথ্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষমান বিসিএস ২৪, ২৭ ও ২৮তম ব্যাচের অনেক সিনিয়র কর্মকর্তা এবারো পদোন্নতি পাননি। বরং আবেদনকৃত কয়েকজন মেধাবী কর্মকর্তাকে ডিঙ্গিয়ে জুনিয়রদের পদোন্নতি দেয়া হয়েছে।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে ১৩ জন কর্মকর্তার তালিকা পাঠানো হয়েছিল। এর মধ্যে ২৪তম বিসিএসের কামরুজ্জামান ভূঞা (উপপ্রধান তথ্য অফিসার, জ্যেষ্ঠতা নম্বর ৩০), মুহা: শিপলু জামান (৩৪), হাছিনা আক্তার (৩৯) এবং ২৭তম বিসিএসের মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন (৫৭) ছিলেন শীর্ষ চারজন। তবে তারা কেউই পদোন্নতি পাননি। অথচ একই তালিকার অপেক্ষাকৃত পিছনের জ্যেষ্ঠতা নম্বর ৫৯ ও ৬১ এর দু’জন কর্মকর্তা উপসচিব পদে উন্নীত হয়েছেন।

এ ঘটনায় তথ্য সার্ভিসের কর্মকর্তারা হতাশা প্রকাশ করে জানান, তারা অন্তত ৭৮ জন কর্মকর্তার পদোন্নতি আশা করেছিলেন। কারণ প্রশাসন ক্যাডারের ৩০তম ব্যাচ এবার উপসচিব হয়েছেন, অথচ তথ্য সার্ভিসের ২৪ ও ২৭তম ব্যাচের সিনিয়ররাই বঞ্চিত রয়ে গেলেন।

একজন পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মকর্তা বলেন, “আমরা শুধু পেশাগত দিক থেকেই নয়, ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক ক্ষেত্রেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। একই মেধাতালিকায় থাকা আমাদের ব্যাচমেটরা প্রশাসন ক্যাডারে ইতোমধ্যে যুগ্মসচিব হয়েছেন।