আজ ১৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার, মহান বিজয় দিবস। বাংলাদেশের বিজয়ের ৫৪ বছর পূর্তির দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানীবাহিনীর আত্মসমর্পনের মধ্য দিয়ে জাতি পেয়েছিল একটি বিজয় নিশান। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে জাতি। এদিন পাকিস্তানী বাহিনী ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে পরাজিত হয়ে আত্মসমর্পণ করে। আমাদের জীবনে এই দিনটি শুধু-ই একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত নয়, একটি জাতির চিরন্তন সাহস, ত্যাগ এবং বিজয়ের প্রতীক। বিশ্ব মানচিত্রে লাল-সবুজের পতাকা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার এই দিনটি জাতির গৌরবময় অর্জনের স্মারক। প্রতিবছর নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালিত হয় বিজয়ের এই দিন।
দিন, মাস ও বছর পেরিয়ে আমাদের মাঝে এমন একসময় বিজয় দিবস এলো; যখন জাতির ভাগ্যাকাশে কালো শকুনের আনাগোনা। দীর্ঘ দুঃশাসনেরর পর আগ্রাসীদের দোসর ও ফ্যাসিবাদী শক্তির পতনের পর তাদের দোসররা অস্থিরতা তৈরি করে নানাভাবে আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে লিপ্ত। এর ধারাবাহিকতায় জুলাইযুদ্ধের অগ্রনায়ক ও ভারতীয় আগ্রাসন বিরোধী বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর শরীফ ওসমান হাদি আগ্রাসী শক্তির মদদে ঘাতকের বুলেটবিদ্ধ হয়ে আজ জীবন-মৃত্যুর মাঝখানে। এরপরও ভারতীয় আগ্রাসী বিরোধী দেশপ্রেমিক শক্তি জুলাইকে ধারণ করেই আজ আততায়ীর বুলেটকে তোয়াক্কা না করেই রাজপথে লড়াই করে যাচ্ছে। দেশের মানুষকে ফ্যাসিবাদের ব্যাপারে সচেতন করছে।
গত ১৬ বছর ধরে পক্ষ-বিপক্ষ সৃষ্টি করে বিভক্তির নীতির মাধ্যমে বাংলাদেশকে লুটেপুটে খেয়েছে গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ। এই বিভাজনকে সহ্য করতে পারেনি দেশের মানুষ। ফলে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ফের শুরু হয় লড়াই-সংগ্রাম। অবশেষে ৭১ এর রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের ভেতর দিয়ে এক নতুন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীমসহ দেশের রাজনৈতিক সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রধানেরা। যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনের জন্য সরকারি ও বেসরকারিভাবে জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
‘মহান বিজয় দিবস’ পালনের আহ্বান আমীরে জামায়াতের
যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে ১৬ ডিসেম্বর ‘মহান বিজয় দিবস’ পালন করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বিবৃতি প্রদান করেছেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, ১৬ ডিসেম্বর ‘মহান বিজয় দিবস’। আমাদের জাতীয় জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ এই দিন। জাতির ইতিহাসে দিবসটি আত্মত্যাগ, সংগ্রাম ও গৌরবের চিরন্তন স্মারক। মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান আমরা গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করছি। মহান আল্লাহ তাআলার দরবারে তাদের সকলের রূহের মাগফিরাত কামনা করছি। পাশাপাশি সকল শহীদদের শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।
আমীরে জামায়াত বলেন, দেশবাসী আজ এমন এক সময় ‘মহান বিজয় দিবস’ পালন করতে যাচ্ছে, যখন ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে দেশ ফ্যাসিবাদী সরকারের কবল থেকে মুক্ত হয়েছে। দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরের অপশাসন, জুলুম-নির্যাতন ও গুম-খুনের নিষ্ঠুর অভিশাপ থেকে দেশের মানুষ মুক্তি পেয়েছে এবং শান্তি,স্বস্তি ও স্থিতিশীলতার প্রত্যাশা করছে। একই সঙ্গে দেশ ভঙ্গুর অর্থনৈতিক অবস্থা থেকে উত্তরণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিপরীত পক্ষে ফ্যাসিবাদের দেশী বিদেশী দোসররা এখনো থেমে নেই। তারা নানামুখী ষড়যন্ত্র ও কূটকৌশলের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তারই জ্বলন্ত প্রমাণ ১২ ডিসেম্বর শরীফ ওসমান হাদীর ওপর ন্যক্কারজনক হামলা। এই প্রেক্ষাপটে দেশবিরোধী সকল ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করার জন্য আমরা দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, ১৬ ডিসেম্বর ‘মহান বিজয় দিবস’ যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে পালন করার জন্য আমি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সকল শাখা সংগঠন ও দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। সেই সাথে ‘মহান বিজয় দিবস’ উপলক্ষে আমি দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি এবং দেশের সার্বিক সুখ, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করছি।
মহান বিজয় দিবসের কর্মসূচি হিসেবে আজ মঙ্গলবার সকাল ৭টায় রাজধানী ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কেন্দ্রীয় যুব ও ক্রীড়া বিভাগের উদ্যোগে যুব ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া সারাদেশে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করে আলোচনা সভা, র্যালি ও দোয়ার মাধ্যমে ১৬ ডিসেম্বর ‘মহান বিজয় দিবস’ যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে পালন করার জন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে সকল শাখা সংগঠন ও দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে।
অপর এক বিবৃতিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম, পীর সাহেব চরমোনাই দেশবাসীকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, এক সাগর রক্তের বিনিময়ে ১৯৭১ সালে আমাদের বিজয় অর্জিত হয়েছে। সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে মানুষ হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে রক্ত ও জীবনের নজরানায় স্বাধীনতা অর্জন করেছে। আজকের এই দিনে মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে জীবন উৎসর্গ করা সকল বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি, তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। মুক্তিযুদ্ধে যারা অংশগ্রহণ করেছেন তাদের প্রতি সম্মান ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর হানাদার পরাভূত হলেও কাক্সিক্ষত বিজয় এখনো অর্জিত হয় নাই। সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয় নাই। রাষ্ট্র মানুষের প্রত্যাশামাফিক পরিচালিত হয় নাই। তাইতো ২৪ এ জুলাইয়ে আরেকটি রক্তক্ষয়ি অভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে দেশকে যেতে হয়েছে। তাই এবারের বিজয় দিবস স্বাধীনতাকে অর্থবহ করার সংগ্রাম অব্যাহত রাখার প্রতিজ্ঞার মাধ্যমে উদযাপন করছি।
বিজয় দিবস-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় পর্যায়ে সরকার নানারকম কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। ১৬ ডিসেম্বর প্রত্যুষে ঢাকায় ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সকাল ৬টা ৩৪ মিনিট রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান উপদেষ্টা সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার নেতৃত্বে উপস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এছাড়া বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশী কূটনৈতিক এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করবেন।
দিবসটি উপলক্ষে সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাগুলো আলোকসজ্জিত করা হয়েছে। যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনের জন্যে অন্যান্য আয়োজনের পাশাপাশি এবার সর্বাধিক পতাকা উড়িয়ে প্যারাস্যুটিং করে বিশ্বরেকর্ড গড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী ও নৌবাহিনীর যৌথ উদ্যোগে স্বাধীনতার ৫৪ বছর উদযাপন উপলক্ষে ৫৪ জন প্যারাট্রুপার পতাকা হাতে প্যারাস্যুটিং করবেন। এটিই হবে বিশ্বে সর্বাধিক পতাকা হাতে প্যারাস্যুটিং, যা গিনেস বুকে ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়বে বলে আশা করা যায়।
বিজয় দিবসের দিন বেলা ১১টা থেকে ঢাকার তেজগাঁওয়ে পুরাতন বিমানবন্দরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী পৃথকভাবে ফ্লাই পাস্ট মহড়া পরিচালনা করবে। চলবে বিজয় দিবসের বিশেষ ব্যান্ড-শো। সারাদেশে সশস্ত্র বাহিনীর পাশাপাশি পুলিশ বাহিনী, বিজিবি, আনসার বাহিনী ও বিএনসিসি’র বাদক দল বাদ্য পরিবেশন করবেন। দেশের সব জেলা-উপজেলায় তিন দিনব্যাপী আড়ম্বরপূর্ণ বিজয়মেলা অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৯টায় বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের সমাবেশ, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শন করা হবে।
আজ বিকেল ৩টা থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পরিবেশিত হবে বিজয় দিবসের গান। পাশাপাশি সারাদেশের ৬৪ জেলায় একযোগে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান পরিবেশন করবেন নতুন প্রজন্মের শিল্পীরা। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, রচনা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের আয়োজন করবে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসেও দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে অনুরূপ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
রাষ্ট্রপতি কর্তৃক বঙ্গভবনে বিকালে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেয়া হবে। এছাড়া মহানগর, জেলা ও উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহিদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ ডাক বিভাগ এ উপলক্ষে স্মারক ডাক টিকিট প্রকাশ করবে। দেশের সব হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, পথশিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র, প্রতিবন্ধী কল্যাণ কেন্দ্র, ডে-কেয়ার ও শিশু বিকাশ কেন্দ্র এবং শিশু পরিবার ও ভবঘুরে প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রীতিভোজের আয়োজন করা হবে।
বাংলাদেশে টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারি বেতার ও টিভি চ্যানেলে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসভিত্তিক অনুষ্ঠানমালা প্রচার করা হবে। দেশের সব শিশুপার্ক ও জাদুঘরসমূহে বিনা টিকিটে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে এবং ঢাকাসহ সারা দেশের সিনেমা হলগুলোতে বিনামূল্যে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শীত হবে। এছাড়া চট্টগ্রাম, খুলনা, মংলা ও পায়রা বন্দর, ঢাকার সদরঘাট, পাগলা ও বরিশালসহ বিআইডব্লিউটিসির ঘাটে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ড একক ও যৌথভাবে জাহাজসমূহ সকাল ৯টা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত জনসাধারণের দর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে।
শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের বিদেহ আত্মার মাগফেরাত, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বাস্থ্য কামনা এবং দেশের শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করে সারাদেশে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনার আয়োজন করা হবে।
প্রস্তুত স্মৃতি সৌধ
সাভার সংবাদদাতা : আজ ১৬ ডিসেম্বর ভোরের সূর্য ওঠার সাথে সাথে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে লাখো শহীদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন, প্রধান উপদষ্টা ড.ইউনুস, উপদেষ্টা পরিষদর সদস্য, কুটনতিক, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা। এসময় রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে দেওয়া হবে তিন বাহিনীর গার্ড অব অনার। রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধার পর জনসাধারণের জন্য স্মৃতিসৌধ খুলে দেওয়া হবে। পরে সেখানে শ্রদ্ধা জানাবেন বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের জনগণ।
বিজয় দিবস উদযাপনে বাহারি ফুলের সমারোহে সাজানো হয়েছে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ। ধুয়ে-মুছে পুরো এলাকা পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়। লাল ইট সাদা রঙের ছোঁয়া শুভ্রতা ছড়াচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে লাল টবে শোভা পাচ্ছে বাহারি ফুল গাছ। লেকের পানিতে নতুন করে রোপণ করা হয়েছে লাল শাপলা। এক কথায় অপরূপ সাজে সাজানো হয়েছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ
জাতীয় স্মৃতিসৌধের ইনচার্জ ও সাভার গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী উপ সহকারী প্রকৌশলী আনোয়ার খান জানান, মহামান্য রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টামন্ডলী ও বিদেশী কূটনীতিকসহ লাখ লাখ জনতা সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের সম্মানে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। সেই লক্ষ্যে গণপূর্ত অধিদফতরের পক্ষ থেকে স্মৃতিসৌধ কমপ্লেক্সকে ধুয়ে-মুছে পরিপাটি করা, ফুল দিয়ে সাজানো, রঙ তুলির কাজ, সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। তিনি জানান দুই সপ্তাহজুড়ে শতাধিক পরিচ্ছন্নতা-কর্মী কাজ করেছেন স্মৃতির এ মিনার ধোয়ামোছা আর সাজসজ্জায়। লাল-সবুজ ফুলের সমারোহে ছোট ছোট বাগানগুলোকে সাজানো হয়েছে অপরূপ সাজে। চত্বরের সিঁড়ি ও নানা স্থাপনায় লেগেছে রঙ-তুলির আঁচড়
এছাড়া স্মৃতিসৌধ এলাকার সড়কগুলোতে বাহারি রঙের বাতি দিয়ে সাজানো হয়েছে। একইসঙ্গে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে চারদিকে সিসিটিভির আওতায় আনা হয়েছে। মহাসড়ক ও পরিস্কার করা হয়েছে। ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকাজুড়ে বলে জানিয়েছেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক।