ভারতের সাবেক পররাষ্ট্রসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেছেন, ভারত প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হলেও, যেকোনো শক্তি যদি ভারতের মূল স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করে তবে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। গত বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লির ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারে আয়োজিত “ Are We Prepared for the Bangladesh Elections? ” শীর্ষক এক আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন। এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ছাত্রশিবিরের প্যানেলের জয় নিয়ে কথা বলেছেন ভারতের বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা শশী থারুর। গত বৃহস্পতিবার থারুর এক্সে একটি পোস্ট করেন। এতে শিবিরের জয়কে “আসন্ন দিনগুলোর জন্য একটি উদ্বেগজনক ইঙ্গিত” হিসেবে অভিহিত করেন তিনি। এছাড়া তিনি প্রশ্ন করেন আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে কি জামায়াতে ইসলামী সরকার গঠন করবে? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের জয়ের প্রভাব জাতীয় নির্বাচনে পড়বে কি না।
ভারতের সাবেক পররাষ্ট্রসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী দলের ভূমিকাকে উল্লেখ করে বলেন, একটি চিতা তার দাগ বদলায় না তেমনি জামায়াতও তার চরিত্র বদলাবে না। তিনি আরও বলেন, এটা ঠিক যে, যেই ক্ষমতায় আসুক আমরা তার সঙ্গে কাজ করব। কিন্তু যদি কেউ ভারতের স্বার্থবিরোধী কাজে লিপ্ত হয়, তাহলে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। সাবেক এই কূটনীতিক বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
বাংলাদেশে কি জামায়াতের সরকার আসবে? প্রশ্ন ভারতের কংগ্রেস নেতা শশী থারুরের : এক্সে শশী থারুর লিখেছেন, “ভারতের বেশিরভাগ মানুষের কাছে এটি (শিবিরের জয়) হয়ত খুব সামান্য একটি ঘটনা হিসেবে মনে হতে পারে। কিন্তু এটি আসন্ন দিনগুলোর জন্য একটি উদ্বেগজনক ইঙ্গিত।” থারুর উল্লেখ করেন বাংলাদেশে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল (বর্তমানে নিষিদ্ধ) আওয়ামী লীগ এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) উভয়ের প্রতিই জনগণের মধ্যে অসন্তোষ বেড়েই চলেছে। আর যারা এ দুটি দলের ওপর বিরক্ত তারা জামায়াতের দিকে ঝুঁকছেন।
থারুর লিখেছেন, “যারা এই দুই দলের ওপর বিরক্ত, তারা ক্রমবর্ধমানভাবে জামায়াতে ইসলামীর দিকে ঝুঁকছে। এর কারণ এই নয় যে ভোটাররা ধর্মান্ধ বা কট্টরপন্থী ইসলামে বিশ্বাসী। বরং জামায়াতে ইসলামী এমন কোনো দুর্নীতি বা অব্যবস্থাপনার সাথে যুক্ত নয়, যা অন্য দুটি মূলধারার দলের ক্ষেত্রে দেখা যায়।” তিনি প্রশ্নের সুরে বলেছেন, “২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির সাধারণ নির্বাচনে এর কী প্রভাব পড়বে? নয়াদিল্লিকে কি তাহলে প্রতিবেশী দেশে জামায়াতের সংখ্যাগরিষ্ঠতার (সরকারের) মোকাবিলা করতে হবে?” এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঐক্যবদ্ধ ছাত্র জোটের ব্যানারে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্রার্থীরা সহ-সভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক (জিএস) এবং সহকারী সাধারণ সম্পাদক (এজিএস)-সহ মোট ২৮টি গুরুত্বপূর্ণ পদের মধ্যে ২৩টিতে জয়ী হয়েছে। সূত্র: এএনআই, প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া