বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির আয়োজিত ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট’-এর ফাইনাল ও পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার রাজধানীর শিল্পাঞ্চল তেজগাঁওয়ের বিজি প্রেস খেলার মাঠে বিকেল সাড়ে ৩টায় শুরু হওয়া ফাইনালে মুখোমুখি হয় সিরাজগঞ্জ শহর শাখা ও সিলেট জেলা পূর্ব শাখা। খেলায় সিরাজগঞ্জ শহর ৩-০ গোলে সিলেট জেলা পূর্বকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়।

‘জুলাই জাগরণ নব উদ্যমে বিনির্মাণ’Ñ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারাদেশের ১৩৮টি শাখার অংশগ্রহণে টুর্নামেন্টটি গত ১৫ জুন শুরু হয়। নক আউট পদ্ধতিতে আন্তঃশাখার মধ্যে অনুষ্ঠিত খেলাগুলোর মধ্য থেকে বিভাগীয় পর্যায়ের বাছাই শেষে সিরাজগঞ্জ শহর, সিলেট জেলা পূর্ব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ফরিদপুর শহরÑএই চারটি দল সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয়। এর মধ্যে থেকে সেরা দুটি দল ফাইনালে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।

ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় স্পোর্টস সম্পাদক হারুনর রশিদ রাফির সঞ্চালনায় ফাইনাল ও পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান এবং সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম, কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহসহ কেন্দ্রীয় সেক্রেটারিয়েটের নেতৃবৃন্দ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, “ছাত্রশিবির দেশের জন্য একটি বড় নেয়ামত। দেশকে সঠিক পথে নেতৃত্ব দিতে প্রয়োজনে জীবন দিতে প্রস্তুত। ইতোমধ্যে সংগঠনটি অসংখ্য পাবলিক ইভেন্ট, প্রদর্শনী, কালচারাল ফেস্ট, সায়েন্স ফেস্ট আয়োজন করেছে। ছাত্রশিবির শুধু ভালো ছাত্রই নয়, বরং বিনোদন ও নেতৃত্ব প্রদানে সক্ষমতারও প্রমাণ দিয়েছে। আজকের ফাইনালে অংশ নেওয়া উভয় দলকেই আমি আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।

তিনি বলেন, “দেশকে সঠিক পথে রাখতে ছাত্রশিবির ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করবে ইনশাআল্লাহ। এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ভয়-ভীতি বা চাপের কাছে নতিস্বীকার করা যাবে না।

চ্যাম্পিয়ন দলকে অভিনন্দন জানিয়ে কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, ১৩৮টি দলের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে যারা ফাইনাল খেলেছে, তারা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। ছাত্রশিবির শুধু বিনোদনের আয়োজনই করে না, বরং জুলাইকে কেন্দ্র করে একাডেমিক ইভেন্ট, কালচারাল ফেস্ট, প্রদর্শনীসহ ৩৬ দিনব্যাপি কর্মসূচি পালন করেছে। এই ফুটবল টুর্নামেন্ট শহীদ আবু সাঈদ, মুগ্ধ, শান্ত, ওয়াসিমসহ সকল শহীদদের স্মরণ করার অন্যতম আয়োজন। আমাদের খেলা শুধু আনন্দ নয়, বরং সহযোগিতা, ভালোবাসা ও পরস্পরকে অগ্রাধিকার দেওয়ার এক অনন্য দৃষ্টান্ত।

তিনি আরও বলেন, একটি মহল জুলাই আন্দোলনের কৃতিত্ব নিয়ে অসুস্থ প্রতিযোগিতা শুরু করেছে, যা শহীদ ও গাজীদের ত্যাগকে অসম্মানিত করে। আমরা বিশ্বাস করিÑপাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আক্রান্ত হলে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছে, ছাত্র আক্রান্ত হলে ছাত্রীরা ঢাল হয়েছে। এ আন্দোলনে মিডিয়া কর্মী, অনলাইন কর্মী, প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধা, বিভিন্ন পেশাজীবী ও সাধারণ মানুষ সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে। তাই জুলাই ঘোষণাপত্রের পুনর্বিবেচনা করে সবার অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং প্রজন্ম তৈরি করাই এখন সময়ের দাবি।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী চ্যাম্পিয়ন দলকে নগদ ৫০ হাজার ও রানার্সআপ দলকে ৩০ হাজার টাকা এবং উভয় দলকে মেডেল ও ট্রফি প্রদান করা হয়।

খেলায় ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন সিরাজগঞ্জ শহরের ইমরোজ হাসান। প্রেসবিজ্ঞপ্তি।