একব্যক্তি দুই বারের বেশি প্রধান মন্ত্রী না হওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বেইলি রোডে ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে অংশ নিয়ে এ মত দেয় দলের পক্ষ থেকে। সংলাপ শেষে বিকেলে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন দলের নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। তিনি বলেন, মিটিং হচ্ছে ধারাবাহিক। আজকে দুটা পয়েন্টে আমরা মোটামুটি অগ্রসর হয়েছি। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বিষয়টিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দলই সম্মতি দিয়েছে। সেটা হচ্ছে আপার হাউস এবং লওয়ার হাউস। তার জন্য ইলেকট্ররাল কলেজ সেটা আরেকটু বিস্তৃত হবে। কমিশন বলেছে ইউনিয়ন মেম্বারদের যদি রাখা হয় তাহলে এর সংখ্যা হয়ে যায় ৭০ থেকে ৭৫ হাজার। আমরা বলেছি, বড় করা দরকার তবে এতো বড় নয়। পৌরসভাকে ইউনিয়ন পরিষদকে এনে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে হবে। তাতে করে সংখ্যা গরিষ্ঠ যেই বা জোট হউক এর বাইরেও প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার একটা সম্ভাবনা থাকবে। যদিও মেজরিটে দলের পক্ষ থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার সম্ভবনা বেশি থাকে। দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদের ব্যাপারে। সেখানেও মেজরিটি দলগুলো একমত হয়েছি যে, কোন প্রধানমন্ত্রী দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। কোন কোন দল ইনক্লুডিং বিএনপি, তারা পুরোপুরি একমত হননি। তারা বলেছেন যে, দুই মেয়াদ তারপর ড্রপ। তারপরে আবার হতে পারবে। এখানে আমাদের একটু দূরত্ব রয়েছে। তবে মেজরিটি বিশ^াস করে যে, দুই মেয়াদ হতে পারবে এরপর আর হতে পারবে না। জামায়াতে ইসলামীর মত দুই মেয়াদে এক ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে, এরপর আর হতে পারবেন না। এসময় সঙ্গে ছিলেন দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ :
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী ঐকমত্য কমিশনের সাথে সংস্কার বিষয়ে সংলাপ শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সংসদের উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতির নির্বাচন চায়। তাতে করে মানুষের প্রতিটি ভোটের প্রভাব রাষ্ট্র পরিচালনায় প্রতিফলিত হবে। বর্তমান পদ্ধতিতে দেশের অধিকাংশ মানুষের ভোট রাষ্ট্র পরিচালনায় কোন কাজে আসে না। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও চিন্তার বিপরিতে সংখ্যালঘুর শাসনে পরিচালিত হয় বাংলাদেশ। এই অশুভ ধারা থেকে উত্তোরণের জন্য এবং সত্যিকারের জাতীয় সরকার গঠনে পিআর পদ্ধতির নির্বাচন অপরিহার্য।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আজকে বৈঠকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অংশ নেন দলের দুই প্রেসিডিয়াম সদস্য। মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী এবং অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন।
মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের অবস্থান পরিষ্কার করে বলেন, দুইবারের বেশি কোন ব্যক্তি যাতে প্রধানমন্ত্রী না হতে পারে সেই প্রস্তাবে ইসলামী আন্দোলন সমর্থন করেছে। কারণ প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদের সীমা না থাকায় রাজনীতিতে ব্যক্তিকেন্দ্রীকতার জন্ম নিচ্ছে যা দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক বিকাশকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।