রিকশার সামনের সিটে হেলে পড়ে আছে নিথর এক তরুণ। কয়েক কদম দূরে ট্যাংকের ওপর থেকে নিচে ফেলে দেওয়া হচ্ছে আরেকটি লাশ। পাশেই ভ্যানে সাজানো লাশের স্তূপ। এদিকে এক পাশে দুহাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে আবু সাঈদ আর মুগ্ধ বলছে ‘পানি লাগবে, পানি’চোখে তৃষ্ণা, ঠোঁটে অস্ফুট আহ্বান ‘বুক পেতেছি গুলী কর, বুকের ভেতর অনেক ঝড়’। আয়নাঘর। বাইরে উৎসুক জনতার ভিড়। সঙ্গে উচ্ছ্বাস। কিন্তু খানিক বাদেই বদলে যাচ্ছে দৃশ্যপট। দর্শন শেষে মুষড়ে যাওয়া মুখখানি দেখে বোঝা যাচ্ছে-হৃদয়ে বিঁধেছে বিষমাখা তীরের মতোই! আশেপাশে নীরব মানুষেরা তাকিয়ে আছে স্তব্ধ হয়ে। না, এই দৃশ্য কোনো বাস্তব সময়ের নয়। এটি একটি মঞ্চ প্রতিকৃতি, একটি অন্তরের প্রতিচ্ছবি। গা ছমছম করা এ দৃশ্যগুলো বাস্তব নয়, তবে হৃদয়ে গেঁথে যাওয়ার মতো এক মঞ্চায়ন। আলো-ছায়ার খেলায়, শব্দ আর আবহে এতটাই জীবন্ত করে তোলা হয়েছে, যেন কেউ দাঁড়িয়ে আছে জুলাইয়ের রক্তাক্ত সেই দিনগুলোতে। এক মুহূর্তের জন্য ভুল হয়ে যায়-এ কি প্রতিকৃতি, না কি চোখের সামনেই ঘটছে জুলাই বিপ্লবের রক্তভেজা সেই গল্পগুলো। যা দেখে শরীরের প্রতিটি লোম শিহরিত হয়, ঘৃণা আওড়িয়ে পড়ে স্বৈরাচারের মসনদে। এই মঞ্চায়নের নাম ‘জুলাই জাগরণ’। আর এই নামেই ২০২৫ জেগে উঠছে সেই ২০২৪ সালের রক্তাক্ত জুলাইয়ের স্মৃতিতে। ২০২৪ সালের জুলাই। বাংলাদেশের ইতিহাসে এক স্মরণীয় এবং হৃদয়বিদারক অধ্যায়। ফ্যাসিবাদ, নিপীড়ন ও গুম-খুনের বিরুদ্ধে জনতার জাগরণ ছড়িয়ে পড়েছিল রাজপথ থেকে পাড়া-গাঁ পর্যন্ত। নিহত হয়েছিল অগণিত তরুণ। নিখোঁজ, বন্দি, নির্যাতিত মানুষের সংখ্যা ছিল হাজারে হাজার। ঠিক সেই ঘটনাগুলোই তুলে ধরা হয়েছে ‘জুলাই জাগরণ’-এ। যা শুরু হয়েছে গতকাল শুক্রবার (১ আগস্ট ২০২৫) রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শুরু হওয়া চার দিনব্যাপী কালচারাল ফেস্ট সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠী আয়োজন করেছে ‘জুলাই জাগরণ’ নামের ব্যতিক্রমী সাংস্কৃতিক উৎসব। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠীর প্রচার সম্পাদক সাইফুল মামুনসহ আরও অনেকেই। তারা এ উৎসবকে বলছে, একটি স্মৃতি-জাগরণের অনুশীলন, একটি আত্মিক প্রতিবাদের বহিঃপ্রকাশ। এখানে ইতিহাস কেবল পাঠ্যবইয়ের পাতায় নেই, সে উঠেছে মঞ্চে, হেঁটেছে দর্শকের চোখের সামনে, ঢুকে পড়েছে হৃদয়ের গহীনে। প্রসঙ্গত, সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠী আয়োজিত ৩৬ জুলাই কালচারাল ফেস্ট উপলক্ষ্যে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শুরু হয়েছে। ‘জুলাই জাগরণ’ শীর্ষক এই ফেস্টে প্রতিদিন আলোচনা, গণসংগীত, প্রামাণ্যচিত্র, মঞ্চনাটক ও চিত্র প্রদর্শনী চলছে। এ আয়োজনকে ঘিরে অংশ নিচ্ছে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক দল, প্রগতিশীল শিল্পী ও লেখকরা।

চার দিনের উৎসবে ফুটে উঠেছে বহু দিনের গল্প: ‘জুলাই জাগরণ’ নামের এ আয়োজন চলবে চারদিন। এ আয়োজনে পুরো জুলাই-আগস্টের বিপ্লবের দিনগুলো ফুটে উঠেছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সবুজ ঘাসের ওপর দাঁড়িয়ে যেন হঠাৎই সময় থেমে গেছে। চারদিক থেকে ছুটে আসছে মানুষের ভিড়। কেউ চুপচাপ তাকিয়ে আছে, কেউ চোখ মুছছে। কেউ স্মৃতি আওড়াচ্ছে, কেউ আবার পুরোনো স্মৃতি নতুন করে ফ্রেমবন্দি করছে। আবার কিছু শিশু একপাশে খেলছে। চারদিক যেন এক অদ্ভুত বাস্তবতায় ভরে উঠেছে। একদিকে ইতিহাসের রক্তাক্ত কষ্ট, অন্যদিকে জীবনের স্বাভাবিক প্রবাহ। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র এবং নাগরিক অধিকারের জন্য যে লড়াই, তা শুধু অতীতের গল্প নয়। তা আজও প্রাসঙ্গিক, প্রয়োজনীয় এবং পুনর্জাগরণের দাবি রাখে। ‘জুলাই জাগরণ’ সেই পুনর্জাগরণেরই প্রতীক। এটি শুধুই ফেস্টিভ্যাল নয়, এটি একটি চেতনার বহিঃপ্রকাশ। একটি জীবন্ত স্মৃতির উৎসব, যেখানে শিল্প হয়ে ওঠে প্রতিবাদ, গান হয়ে ওঠে আহ্বান, আর নিথর দৃশ্য হয়ে ওঠে জীবনের প্রতিচ্ছবি। শুধু নাট্যমঞ্চ নয়, এই আয়োজন দাঁড় করিয়ে দিয়েছে একটি আয়না, যেখানে জাতি নিজের মুখোমুখি দাঁড়াতে পারে-দেখতে পারে, আমরা কেমন ছিলাম, কেমন হতে পারি।

দর্শনার্থীরা বলছেন, হয়ত আয়োজনটা চতুর্থ দিনে গিয়ে শেষ হয়ে যাবে কিন্তু যারা এই অসাধারণ আয়োজনটা করেছে, তারা ও আয়োজনটি আমার মতো অনেকের মনে জায়গা করে নিয়েছে চিরকালের মতো। মো. রিয়াজুল ইসলাম নামের আরেক বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের সময় দেশে থাকার সৌভাগ্য হয়নি, মোবাইলে-টিভিতে সেই বিপ্লব দেখেছি। কিন্তু এখানে এসে যেন সেই সময়টায় ফিরে গেলাম। আর মনে হচ্ছিল আমি এখন সেই জুলাইয়ের দিনগুলোতেই আছি। বিশেষ করে সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় ছেলে-মেয়েগুলোর অভিনয় আমার চোখে জল এনে দিয়েছে।’

আয়নাঘর: নীরবতার মধ্যেই শোনা যায় গুমের কান্না: উৎসবের সবচেয়ে কাঁপানো উপস্থাপনাগুলোর একটি ছিল ‘আয়নাঘর’। এটি ছিল এক অন্ধকার কক্ষে বসে থাকা কিছু মানুষের নিস্তব্ধ উপস্থিতি। কেউ কিছু বলছে না, কেউ কাঁদছে না, কেউ পালাচ্ছে না। কিন্তু ওই নীরবতা এমনভাবে পরিবেশিত যে, দর্শকদের দম বন্ধ হয়ে আসছিল। এই মঞ্চটি শেখ হাসিনার শাসনামলের সেই ‘আয়নাঘর’ নামের প্রতীকী নির্যাতন কেন্দ্রের রূপক। এখানে বিরোধী রাজনীতির কর্মীদের ধরে এনে বছরের পর বছর গোপনে আটকে রাখা হতো। দর্শনার্থীরা বলছেন, আমরা অনেক প্রতিবাদ দেখেছি, নাটক দেখেছি। কিন্তু এমন ভয়ংকর এক নিস্তব্ধতা আর দেখিনি। এটা যেন শুধু এক নির্যাতনের ঘর নয়, এ যেন আমার বিবেকের দরজা খুলে দিল।

শিশু তাফসির আলম বলে, আমি ভাবছিলাম এগুলো নাটক বা সিনেমা। কিন্তু মা বললো-এসব সত্যি ঘটেছে। তখন আমার গা কাঁটা দিয়ে উঠেছিল।’ এমন ঘরে মানুষ বছরের পর বছর ক্যামনে থাকে প্রশ্ন অবুঝ শিশুটির। আয়নাঘর পরিদর্শন শেষে স্কুল শিক্ষার্থী দুর্জয় বলে, পুরো আয়োজন দেখে তো অনেক মজারই মনে হচ্ছিল। আয়নাঘরে ঢোকার আগেও হেসেছি। উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছি। কিন্তু সত্যি বলতে, যখন ভেতরে ঢুকলাম, তখন দম বন্ধ হওয়ার অবস্থা। দেখে ঠিক থাকতে পারিনি। দ্রুতই বের হতে বাধ্য হয়েছি। একটা প্রতীকী আয়নাঘর যদি এমন হয়, তাহলে বাস্তবতা কতটা হৃদয়বিদারক হবে, তা এখানে না আসলে হয়তো উপলব্ধি হতো না।

শিশুদের চোখে ইতিহাস: রঙ আর রক্তের এক অদ্ভুত সহাবস্থান: এই উৎসব শুধু বড়দের জন্য নয়, এখানে ছোটদের জন্যও ছিল রঙিন আয়োজন। বেলুন, বায়োস্কোপ, রাইড, মুখে আঁকা, ছোটদের গানে অংশগ্রহণ, খেলাধুলা-সবকিছু মিলিয়ে এক পূর্ণাঙ্গ মিলনমেলা। তবে আশ্চর্যের বিষয়, এই আনন্দঘন পরিবেশের মাঝেই শিশুরাও ছুঁয়ে দেখেছে ইতিহাসের ছায়া। চার ও পাঁচ বছর বয়সী দুই শিশুকে নিয়ে এসেছিলেন মা আয়েশা খাতুন। মা বললেন, ছেলে-মেয়েটা গান গাইলো, হাসলো, খেললো। কিন্তু আমি ওকে নিয়ে যখন রিকশার পাশে দাঁড়ালাম, ও আমার হাত শক্ত করে ধরে বলল-‘মা জুলাই’। আমি ওর চোখে ভয় দেখেছি, আর বুঝেছি, শুধু আনন্দ নয়, ও ইতিহাসকে উপলব্ধি করেছে।’

এই ফেস্টিভ্যালের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ ছিল একই মঞ্চে দেশের সকল জুলাই শহীদের প্রতীকী কবর। যে কবরের পাশে দাঁড়িয়ে জীবন্ত ইতিহাসকে আরও একবার হৃদয়গ্রাহী করছে দর্শনার্থীরা। কেউ সন্তান, কেউ নিয়ে এসেছেন বন্ধুকে। কবরের পাশে দাঁড়িয়ে আত্ম উপলব্ধির ভাষায় বলছেন, বন্ধু দেশ স্বাধীন না হলে এখানে হয়তো আমার নামটাও আজ থাকতো।

সাংস্কৃতিক মঞ্চায়নের মধ্য দিয়ে ইতিহাসের উত্তরণ: ‘জুলাই জাগরণ’ শুধুই শিল্পের প্রদর্শনী নয়, এটি এক সামাজিক, রাজনৈতিক ও নৈতিক উত্তরাধিকারকে সামনে আনার প্রয়াস। আবৃত্তি, নাটক, গানের মধ্যে দিয়ে ফুটে উঠেছে সেই ভয়ংকর জুলাইয়ের রাতগুলো, গুম হওয়া তরুণদের কান্না, প্রতিবাদীদের আহ্বান, শহীদের নিথর দেহ। দর্শক কাইয়্মু আলী বলেন, যেহেতু এক রাজনৈতিক দলের সাংস্কৃতিক সংগঠনের আয়োজন, ভেবেছিলাম একটি রাজনৈতিক অনুষ্ঠান হবে। কিন্তু এখানে এসে দেখলাম এটি আত্মিক ধাক্কার মতো কাজ করেছে। আয়োজকরা শুধু কথা বলেনি, তারা দেখিয়েছে, অনুভব করিয়েছে। আরও একটি বিষয় অবাক হলাম, কোনো নেতার জন্য নেই স্লোগান, নেই শৃঙ্খলাহীন কোনো কাজ। গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে এমন ফেস্টিভ্যাল এর আগে কখনো দেখিনি।

বাবার সঙ্গে ঘুরতে আসা দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাইফুল্লাহ বলেন, ‘এখানে এসেই শুরুতে পুরো আয়োজনটা ঘুরে দেখেছি। দেখে মনে হয়েছে পুরো আয়োজনটা সাজানো হয়েছে জুলাই বিপ্লবের স্মরণে। আমরা রংপুরের আবু সাঈদের কথা শুনেছি, এখানে এসে তার প্রসারিত দু’হাতের চিত্রায়ন দেখেছি। রিকশা আর ভ্যানের ওপর লাশ দেখেছি। আমরা জানি, ওটা সত্যিকারের লাশ না কিন্তু এক মুহূর্তের জন্য মনে হলো সত্যিই কারো ভাই পড়ে আছে। তখন ভয় পেয়েছিলাম।’ পাশ থেকে এক মা বললেন, বাচ্চারা খেলছে, গাইছে ভালো লাগছে। কিন্তু এই অনুষ্ঠান আমাদের মনে করিয়ে দিলো স্বাধীনতা শুধু আনন্দে পাওয়া যায় না, এর পেছনে কষ্ট থাকে, লাশ থাকে।

সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠীর প্রচার সম্পাদক সাইফুল মামুন বলেন, ‘জুলাই জাগরণ শুধু একটি সাংস্কৃতিক উৎসব নয়, এটি জাতির স্মৃতি-জাগরণের আয়োজন। আমরা ইতিহাসকে শুধুই বলে যেতে চাইনি, চেয়েছি মানুষ যেন ইতিহাসকে ছুঁয়ে দেখে, উপলব্ধি করে এবং নিজের ভেতরে এক নতুন প্রশ্ন জাগায়– আমরা কীভাবে এখানে এলাম আর কোথায় যাচ্ছি?

তিনি বলেন, ‘আয়নাঘর থেকে রক্তাক্ত জুলাই-আগস্ট অথবা শহীদদের প্রতিকৃতি– প্রতিটি উপস্থাপন ছিল আমাদের এক অন্তর থেকে জন্ম নেওয়া আত্মপ্রকাশ। এই মঞ্চে যে কণ্ঠ উঠেছে তা শুধু সংগীতের বা আবৃত্তির নয়, তা ছিল প্রতিরোধের, মমতার আর দায়বদ্ধতার কণ্ঠ। সাইফুল মামুন আরও বলেন, ‘আমরা যারা আয়োজন করেছি, তাদের কাছে এটি শুধুই একটি চার দিনের আয়োজন নয়। এটি ছিল একটি শুদ্ধ আত্মচর্চা, নিজেকে খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা। যারা এই আয়োজনে এসেছেন, তারা হয়ত এখানে একটি মুহূর্ত কাটিয়েছেন কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি তারা ফিরে গেছেন গভীরতর প্রশ্ন, ব্যথা ও বোধ নিয়ে। এটাই ছিল আমাদের উদ্দেশ্য।’

জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সার্বভৌমত্ব ফিরিয়ে এনেছে বাংলাদেশ -ফারুকী: বাংলাদেশ জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নিজের সার্বভৌমত্ব ফিরিয়ে এনেছে বলে মন্তব্য করেছেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। ফারুকী বলেন, জুলাই বৈষম্যের বিরুদ্ধে তীব্র এক বিস্ফোরণ, প্রতিবাদের প্রবল উচ্চারণ। জুলাই আমাদের চেতনা, আমাদের প্রেরণা। ২৪-এর জুলাইয়ে আমাদের তরুণরা রক্তস্নাত এ পলল ভূমিতে মুক্তির বীজ বপন করেছে। দীপ্ত কণ্ঠে উচ্চারণ করেছে– জীবন যেখানে দ্রোহের প্রতিশব্দ, মৃত্যুই সেখানে শেষ কথা নয়। তিনি আরও বলেন, মাতৃভূমি অথবা মৃত্যু –সময়ের সাহসী এ অঙ্গীকারকে ধারণ, পালন ও লালন করেই আমাদের তরুণরা সাফল্যের এক মহাকাব্য রচনা করেছে জুলাইয়ে। ফ্যাসিবাদ আরোপিত সংস্কৃতি ও মিডিয়া নিয়ন্ত্রণের প্রসঙ্গ টেনে উপদেষ্টা বলেন, ‘কালচারাল হেজিমনির ফ্রেম ভেঙে দিয়ে দেশজ সাংস্কৃতিক বিকাশ ঘটাতে বাংলাদেশের পক্ষের সবাইকে এখন ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে প্রতিদিনই ডকুমেন্টারি তৈরি হচ্ছে -প্রেস সচিব: জুলাই গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে প্রতিদিনই নতুন নতুন ডকুমেন্টারি তৈরি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন নিজেদের অভিজ্ঞতা ও প্রতিরোধ-ইতিহাস তুলে ধরতে সক্রিয়ভাবে উদ্যোগ নিচ্ছে।

শফিকুল আলম বলেন, জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে আমরা অনেক সুন্দর ডকুমেন্টারি তৈরি করেছি। ১৯৭১ সালের গণহত্যার সময় ‘স্টপ জেনোসাইড’-এর মতো দু-একটা কাজ হয়েছিল, আর এখন জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে প্রতিদিনই কিছু না কিছু তৈরি হচ্ছে। প্রতিটি ইউনিভার্সিটি কীভাবে আন্দোলনে যুক্ত হয়েছে, কোথায় গণজোয়ার উঠেছে সবই আসছে ডকুমেন্টারির মাধ্যমে।

তিনি আরও বলেন, ছাত্রছাত্রীরা নিজেরা এ কাজ করছেন। তারা দেখাচ্ছেন কীভাবে ছাত্রলীগকে প্রতিহত করেছে, কীভাবে ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। এটা একপ্রকার গণ-স্মৃতিচর্চা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আলোচনার এক পর্যায়ে প্রেস সচিব বলেন, এই সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের ভেতর দিয়ে আমরা বুঝতে পারছি আওয়ামী লীগের কালচারাল হেজিমোনিকে কীভাবে চিরতরে চ্যালেঞ্জ করা যায়। জুলাই অভ্যুত্থান শুধু রাজপথ নয়, সংস্কৃতি, মিডিয়া, এবং ইতিহাসের বইয়েও একটি স্থায়ী জায়গা করে নিচ্ছে।