ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি’র (ডিআরইউ) সদস্যদের জন্য ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স পিএলসি’র সাথে গ্রুপ বীমা চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম জানিয়েছেন, তিনি নিজের মেয়াদে সংস্কার কমিশনের দেয়া সাংবাদিক সুরক্ষা আইন করে যাবেন। পাশাপাশি সাংবাদিকদের জন্য ৯ম ওয়েজ বোর্ড করার কাজও চলছে বলে জানান তিনি।
গতকাল সোমবার বিকাল ৩টায় ডিআরইউ’র শফিকুল কবির মিলনায়তনে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়। এতে তথ্য উপদেষ্টা আরো বলেন, সাংবাদিক সবাইকে সুরক্ষা ও কল্যাণের আওতায় আনা কঠিন। তারপরও সাংবাদিকদের কল্যাণে তথ্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে। ৩ মাস পরপর সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট্রের মাধ্যমে সহায়তা করা হচ্ছে। সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের কার্য পরিধি বাড়াতে কাজ চলছে। সাংবাদিকদের সন্তানদের বৃত্তির জন্য ২ কোটি টাকা অর্থ ছাড় হয়েছে। সাংবাদিকরা সাবলম্বি না হলে কোনো দল বা গোষ্ঠীর পাপেটে পরিনত হবে, এটা এড়ানো যাবে না। ডিআরইউ যেন সরকারী সুবিধা পায় সেই চেস্টা করা হবে জানিয়ে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, আমরা ৯ম ওয়েজবোর্ড করতে চাই। কিন্তু এটা খুবই জটিল একটি প্রক্রিয়া। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এটার সাথে সম্পৃক্ত। যে সময় দরকার তা পেলে করে দিয়ে যেতে পারবো, না হলে একটা পর্যায় পর্যন্ত রেখে দিয়ে যাবো পরবর্তী সরকার তা বাস্তবায়ন করবে।
তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলনে আহত ও নিহতদের অনেকেই এখনো আড়ালের রয়ে গেছে। তাদের নিয়ে প্রতিবেদন হলে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নিতে সহজ হয়। তাই তাদের নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করার অনুরোধ জানান তিনি। ডিআরইউ সভাপতি আবু সালেহ আকন বলেন, এখনও সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটছে। গত কয়েক দিনে হামলা চালিয়ে কয়েকজন সাংবাদিকদের আহত করা হয়েছে। আমরা এসব ঘটনার বিচার চাই। সাংবাদিকরা জীবনের নিরাপত্তা চায়। বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশন এর সভাপতি সাঈদ আহমেদ বলেন, কয়েকটি ইন্সুরেন্স কোম্পানি গ্রাহকের টাকা দিতে পারছে না। অনেকে টাকা নিয়ে বিদেশে পালিয়ে গেছে। রেখে যাওয়া সম্পদ বিক্রি করে গ্রাহকের টাকা দেয়ার দাবী জানান তিনি। ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স পিএলসি এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজিম উদ্দিন বলেন, গ্রাহকের আস্থা বাড়াতে দাবি পরিশোধকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। যে কোম্পানী যত বেশি দাবি পরিশোধ করবে, ঐ কোম্পানী তত বেশি বীমা পলিসি বিক্রি করতে পারবে। ন্যাশনাল লাইফ দাবি পরিশোধে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে।
ন্যাশনাল লাইফ ২০২৪ সালে দাবি পরিশোধ করে ১২০৮ কোটি টাকা। তার বিপরীতে প্রিমিয়াম অর্জন করে ২১০৬ কোটি টাকা।
পেশাদার সাংবাদিকদের বৃহৎ সংগঠন ডিআরইউর সাথে যুক্ত হয়ে আমরা গর্বিত। আমরা সাংবাদিকদের কল্যাণে সর্বাত্মক চেষ্টা করবো। গ্রুপ বিমার আওতার বাইরে থাকা সদস্যদের জন্য ১ লাখ টাকা সহযোগীতার ঘোষণা দেন তিনি।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বিএফইউজে সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, ডিআরইউ’র সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ ও ডিআরইউ’র সহ-সভাপতি গাযী আনোয়ার।
অনুষ্ঠানে ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম, ডিআরইউ’র যুগ্ম সম্পাদক নাদিয়া শারমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হাই তুহিন, দপ্তর সম্পাদক রফিক রাফি, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক বোরহান উদ্দীন, কার্যনির্বাহী সদস্য মো: জুনায়েদ হোসাইন (জুনায়েদ শিশির), আকতারুজ্জামান, আমিনুল হক ভুইয়া, সুমন চৌধুরীসহ ডিআরইউ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্সের গ্রুপ বীমার সুবিধার আওয়তায় থাকবেন ২০-৬০ বছর বয়সী ডিআরইউ'র সদস্য ২ হাজার সাংবাদিক। স্বাভাবিক মৃত্যু হলে ৩ লাখ টাকা, দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু হলে ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা, অঙ্গহানি হলে ১ লাখ টাকা এবং কোন অপারেশন হলে ৭০ হাজার টাকা পাবেন ডিআরইউ সদস্যরা। এ চুক্তিটি এক বছরের জন্য করা হয়েছে। পরবর্তীতে বীমা চুক্তির সময় আরো বাড়ানো হবে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি