পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মিয়া শাহবাজ শরিফের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. ইকবাল হোসেন খান। গতকাল বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। সাক্ষাতে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, শিক্ষা, সংস্কৃতি, কৃষি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সহযোগিতা জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা হয়। সাক্ষাতে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার, প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ, ধর্ম বিষয়ক ও আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতিমন্ত্রী সরদার ইউসুফ খান, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী আতা তারার, ইসলামাবাদে বাংলাদেশের হাইকমিশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ শেহবাজ শরীফ ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. এ এফ এম খালিদ হোসেন এবং তার প্রতিনিধিদলকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। তিনি উল্লেখ করেন পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গভীরভাবে অভিন্ন ইতিহাস, সাংস্কৃতিক বন্ধন এবং পারিবারিক আত্মীয়তার ভিত্তিতে প্রোথিত। জনগণের সঙ্গে জনগণের যোগাযোগ, শিক্ষাগত বিনিময়, বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্কসহ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ইতিবাচক গতিপথে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি জোর দিয়ে বলেন যে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হওয়া উচিত। নিউইয়র্ক এবং কায়রোতে তাদের বৈঠকের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং দারিদ্র্য বিমোচনে তার ভূমিকার প্রশংসা করেন, পাশাপাশি পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার আকাক্সক্ষার প্রশংসা করেন। তিনি বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করার ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার উদ্যোগকে স্বাগত জানান।
সাক্ষাতে ধর্ম উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে একটি চিঠি হস্তান্তর করেন। চিঠিতে পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান প্রফেসর ইউনূস। তিনি উল্লেখ করেন, এই দুর্যোগে বাংলাদেশের জনগণ ভ্রাতৃপ্রতিম পাকিস্তানের পাশে রয়েছে এবং প্রয়োজনে ত্রাণ ও পুনর্বাসনে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। আলোচনায় ঢাকা-করাচী সরাসরি ফ্লাইট পুনঃচালু করা, উচ্চশিক্ষায় শিক্ষার্থী বিনিময় কর্মসূচি এবং বৃত্তি কার্যক্রম সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। ইতোমধ্যে পাকিস্তান সরকার অনার্স থেকে পিএইচডি পর্যায় পর্যন্ত পড়াশোনার জন্য বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ৫০০টি বৃত্তি অনুমোদন করেছে। এ প্রসঙ্গে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী প্রধান উপদেষ্টাকে তার সুবিধামত পাকিস্তানে একটি সরকারি সফরের জন্য আমন্ত্রণ পুনর্ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশ পক্ষ প্রধান উপদেষ্টা এবং বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে সফরের আমন্ত্রণও জানায়।