আন্দোলনরত প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তাদের দাবি-দাওয়ার প্রস্তাব দিলে সচিব কমিটি সমস্যার সমাধান করে দেবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান। গতকাল বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা জানান।

সচিব বলেন, আন্দোলনকারীরা যদি তাদের দাবিগুলো স্মারকলিপি আকারে দেন, এগুলো নিয়ে তারা অনেক রিসার্চ করেছেন, তাদের কাছে আইন-কানুন আছে, এগুলো যদি অ্যাটাচ করে দেন, আমরা অল্প সময়ে এটা সমাধান করে দিতে পারবো। আমাদের কাছে কোনও আবেদন আসেনি, আমরা বিষয়টি শুনেছি।

উল্লেখ্য, তিন দফা দাবিতে গত মঙ্গলবার থেকে রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ততম সড়ক শাহবাগ মোড় পাঁচ ঘণ্টা অবরোধ করে রেখেছিলেন বুয়েটসহ বিভিন্ন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। দাবি পূরণে সুনির্দিষ্ট আশ্বাস না পাওয়ায় গতকাল বুধবার সারা দেশের প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি পালন করছেন তারা।

সচিব জানান, প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তাদের দাবি-দাওয়ার প্রস্তাব পাঠালে আন্তঃমন্ত্রণালয় বা সচিব কমিটির সভার মাধ্যমে অল্প সময়ের মধ্যে সেগুলো পূরণের ব্যবস্থা করা হবে।

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা যেমন দাবি করছেন, অন্যদিকে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরাও আন্দোলনে নেমে গেছে, এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সচিব বলেন, ‘দুটিই তো সরকারের। বেসরকারি নিয়ে তো কোনও সমস্যা নেই। সরকারের সুবিধা যারা বেশি খায়, সমস্যা তারাই বেশি সৃষ্টি করে। এনারা যে প্রস্তাব নিয়ে আসছেন আমরা তা সমাধান করার জন্য প্রস্তুত। তাদের প্রস্তাব এলে আমরা সবাইকে ডাকবো।’

তিনি বলেন, ‘রাস্তাঘাট বন্ধ করার কোনও দরকার নেই, ইট ইজ নট ওয়াইজ। তাদের দাবি-দাওয়া প্রসঙ্গে জনপ্রশাসন সচিব জানিয়েছেন, এটার সঙ্গে পিএসসি (সরকারি কর্ম কমিশন) জড়িত, জনপ্রশাসন জড়িত, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জড়িত, লেজিসলেটিভ বিভাগ জড়িত, আর যে সব প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা যে মন্ত্রণালয়ে চাকরি করছেন ওই সব মন্ত্রণালয় জড়িত। সবার সঙ্গে বসে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা (অফিসিয়াল একটা নাম আছে সচিব কমিটি) সেখানে এটা তুললেই সমাধান হবে। একটি বা দুটি মিটিং লাগবে। এটা সম্ভব, এটা এমন কোনও জটিল বিষয় নয়।’

মোখলেস উর রহমান বলেন, ‘যারা ভুক্তভোগী তারা তাদের মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এই প্রস্তাবটা আনবে। আমরা এটা পজিটিভলি দেখবো, আমরা এটা ফেলে রাখবো না।’

সচিব বলেন, ‘যখন কাগজ আসবে আমরা প্লেস করবো, আন্তঃমন্ত্রণালয় মিটিং তো যখন দরকার হয়, আমরা তখনই করি। এটার প্রধান মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের সচিব। সব সচিবরা এটার সদস্য। এখানে নেগেটিভ কিছুই নেই।

উল্লেখ্য, প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে নবম গ্রেডের ইঞ্জিনিয়ারিং পদ বা সহকারী প্রকৌশলী বা সমমানের পদে প্রবেশের জন্য সবাইকে নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে এবং প্রার্থীর কমপক্ষে বিএসসি ডিগ্রি থাকতে হবে। কোটার মাধ্যমে পদোন্নতি দেওয়া যাবে না। এমনকি বিভিন্ন নামে সমমনার পদ সৃষ্টি করেও পদোন্নতি দেওয়া যাবে না।

দশম গ্রেডের কারিগরি পদ বা উপ-সহকারী প্রকৌশলী বা সমমানের পদের জন্য নিয়োগ পরীক্ষা ডিপ্লোমা এবং বিএসসি ডিগ্রিধারীদের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।

ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি ডিগ্রি না থাকলেও ইঞ্জিনিয়ার পদবি ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।