# সেনাবাহিনী গুমে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে জড়িত নয়, তবে তারা জানত

# গুমের শিকার ব্যক্তিদের সম্ভাব্য চার ধরনের পরিণতি হয়েছিল

# গুমে জড়িতরা এখনো ক্ষমতার কেন্দ্রে, ভিকটিমদের দিচ্ছে হুমকি

# ২৫৩ ব্যক্তিকে গুম করার অকাট্য প্রমাণ পেয়েছে কমিশন

জঙ্গীবাদবিরোধী অভিযানের ছায়ায় ইসলামী উগ্রবাদের হুমকিকে ব্যবহার করে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার গুমকে ‘একটি সুশৃঙ্খল ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ’ দিয়েছিল বলে মনে করছে গুম সংক্রান্ত অনুসন্ধান কমিশন।

কমিশনের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম বলেছেন, তাদের উদ্দেশ্য ছিল নিজেদের রাজনৈতিক ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করা, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন এবং শাসনকে দীর্ঘায়িত করা। এই গুমের শিকার হয়েছেন শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক কর্মী, সাংবাদিক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারসহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি পেশাজীবী তথা সাধারণ জনগণ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ কথা বলেন মইনুল ইসলাম। তবে লিখিত বক্তব্যের শেষাংশে স্বীকার করে নেওয়া হয় যে সন্ত্রাসবাদের হুমকি মিথ্যে নয়।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, কমিশনে জমা পড়া ১ হাজার ৮৫০টি অভিযোগ বিশ্লেষণ করে ২৫৩ জন ব্যক্তিকে গুম করার মুহূর্তে, গুমকালীন সময়ে এবং গুম থেকে ফেরত আসার সময়কার অকাট্য প্রমাণ পেয়েছে কমিশন। কমিশনে জমা পড়া অভিযোগগুলো বিশ্লেষণ করে বোঝা যায়, গুম হওয়া ব্যক্তিদের চার ধরনের পরিণতি হয়েছে। প্রথমত: তাকে হত্যা করা হয়। দ্বিতীয়ত: তাকে বিচারের আগেই মিডিয়ার সামনে উপস্থাপন করে সাধারণত ‘জঙ্গী’ তকমা দিয়ে বাংলাদেশেই বিচারাধীন বা নতুন ফৌজদারী মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তৃতীয়ত তাকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে পাঠিয়ে দিয়ে ভারতের আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে গ্রেপ্তারের ব্যবস্থা করা হয়। চতুর্থত ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে, অল্প সংখ্যক ক্ষেত্রে মামলা না দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।

লিখিত বক্তব্যে কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, প্রায় ১ হাজার ৮৫০টি অভিযোগ বিশ্লেষণ করে তার মধ্যে থেকে ২৫৩ জন গুমের শিকার ব্যক্তির তথ্য অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদনে উপস্থাপন করা হয়েছে। তাদের সবার ক্ষেত্রে মোটামুটি তিনটি বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। নিখোঁজ হওয়ার সময়ে তাদের নিকটাত্মীয়ের দায়ের করা সাধারণ ডায়েরি, ফৌজদারি মামলা, গুম থাকা অবস্থায় সংবাদ প্রতিবেদন এর মত সমসাময়িক প্রমাণ রয়েছে। শুধুমাত্র এই ২৫৩ জন সমসাময়িক প্রমাণ দাখিল করতে সক্ষম হয়েছেন, বাকিরা হননি। কারণ তখন এসব ক্ষেত্রে জিডি করতে গেলে জিডি নেওয়া হত না। গুম অবস্থা থেকে ফেরতের সময় তাদের সন্ত্রাসবিরোধী মামলাসহ বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় কোনো একটি সংস্থা স্বীকার করে নেয় যে ওই ব্যক্তি তাদের হেফাজতে আছে। এই ভিক্টিমরা জীবিত আছেন, তাই তারা কমিশনকে জানাতে পেরেছেন যে তারা রাষ্ট্রীয় হেফাজতে গোপন আটককেন্দ্রে বন্দি ছিলেন, যেখানে তাদের অনেকের একে অপরের সঙ্গে দেখাও হয়েছে এবং একই ধরনের নির্যাতনের মুখোমুখি হয়েছেন। অর্থাৎ এই ২৫৩ ব্যক্তিকে গুম করার মুহূর্তে, গুমকালীন সময়ে এবং গুম থেকে ফেরত আসার মুহূর্তে তিনটি পর্যায়ই অকাট্য প্রমাণাদি পাওয়া যাচ্ছে।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আমাদের কাছে ২৫৩ জন মানুষের একটি তথ্যভিত্তিক দলিল রয়েছে, যারা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এবং এক দশকের বেশি সময় ধরে একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন থেকেও অত্যন্ত সাদৃশ্যপূর্ণ অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন। এমন ঘটনা কাকতালীয় হওয়া সম্ভব নয়। এমনকি হাতে গোনা কিছু অবাধ্য কর্মকর্তার বিচ্ছিন্ন অপরাধও হতে পারে না। এই অভিজ্ঞতার সাদৃশ্যতা একটি সাংগঠনিক ও পদ্ধতিগত কাঠামোর অস্তিত্ব নির্দেশ করে।

গুমকে বিগত সরকার ‘প্রাতিষ্ঠানিকভাবে অস্ত্র হিসেবে’ ব্যবহার করেছে মন্তব্য করে কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, এতে স্পষ্ট হয় যে বিগত সরকারের শাসনামলে গুম একটি সুশৃঙ্খল ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপে ‘জঙ্গীবাদবিরোধী অভিযানে’র ছায়াতলে ইসলামী উগ্রবাদের হুমকিকে ব্যবহার করে পরিচালিত হয়েছে। তিনি বলেন, এ প্রক্রিয়ায় তারা ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থাকে অস্ত্র বানিয়েছে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও নিরাপত্তা বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাবাধীন করেছে এবং নির্যাতন ও গোপন আটকের সংস্কৃতি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে চালু করেছে। এমনকি সাধারণ নাগরিকদের বেআইনি পন্থায় বারবার ভারতীয় বাহিনীর হাতেও তুলে দিয়েছে।

প্রতিবেদনে নাম আসা ২৫৩ জনের ঘটনাগুলো এক দশকেরও বেশি সময়জুড়ে বিস্তৃত জানিয়ে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, তাদের বয়স, পেশা ও নিখোঁজ থাকার সময়কাল-সবই ভিন্ন হলেও তাদের অভিজ্ঞতাগুলো ‘আশ্চর্যজনক প্যাটার্নে’ মিলে যায়। অধিকাংশই সে সময়কার বিরোধী দলগুলোর বা ভিন্ন মতের সমর্থক ছিলেন এবং তাদের অনেককেই রাজনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে। এমনকি অল্প কিছু ক্ষেত্রে তৎকালীন শাসক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদেরও দলীয় কোন্দল বা প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণেও ওম করা হয়েছে। সকল ক্ষেত্রেই ভুক্তভোগীরা প্রায় একই ধরনের প্রক্রিয়ার শিকার। তাদের ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত নির্যাতন, সন্ত্রাসী হিসেবে প্রচার, একই ধরনের আইন অনুযায়ী অভিযোগ দায়ের এবং একই ধরনের ভাষায় ঘটনার বর্ণনা পাওয়া যায় জানিয়ে কমিশন প্রধান বলেন, বিভিন্ন পটভূমি থেকে আসা ব্যক্তিদের অভিজ্ঞতার এই সামঞ্জস্য ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যকে’ স্পষ্ট করে। ব্যাপারটা মোটেও এমন নয় যে একটি ‘জঙ্গিবাদ দমন অভিযানে’ দুই-একজন অসাবধানী কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্তৃক কিছু মানবাধিকার লঙ্ঘন এর ঘটনা ঘটে গেছে। বরং এটি ছিল একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দমনযন্ত্র, যা জঙ্গিবাদবিরোধী প্রচারণাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে। এছাড়া আমাদের প্রতিবেদনে সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের তথ্যপ্রমাণ বিশ্লেষণ করে আমরা দেখিয়েছি যে মামলার সংখ্যা হ্রাস-বৃদ্ধির ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা নয় বরং রাজনৈতিক ও ‘পার্ফরমেন্স ইনডিকেটর’ ভিত্তিক বিবেচনা কাজ করেছে।

কমিশন সরকারের সন্ত্রাসবিরোধী প্রক্রিয়া পরিবর্তনের সুপারিশ করেছে জানিয়ে চেয়ারম্যান বলেন,আমরা দুটি সুপারিশ দিয়েছি। প্রথমত, সন্ত্রাসবিরোধী মামলার অপব্যবহারের বিষয়ে অবগত হয়ে সেগুলো ন্যায় বিচারের মানদ- বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করা। দ্বিতীয়ত, আইনশৃংখলাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিদের সাথে আলোচনার প্রেক্ষিতে মানুষের মনস্তত্ব পরিবর্তনের জন্য বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বর্তমান কাউন্টার টেরোরিজম মেথড ত্রুটিপূর্ণ। বিধায় মালয়েশিয়া-ইন্দোনেশিয়ার মত উপযুক্ত কাউন্টার টেরোরিজম মেথড বের করা।

তবে সন্ত্রাসবাদের হুমকি যে মিথ্যে নয়, সে কথা স্বীকার করে নিয়ে লিখিত বক্তব্যের শেষাংশে বলা হয়, সন্ত্রাসবাদ সারা বিশ্বে একটি বাস্তব হুমকি, বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। ২০১৬ সালের হলি আর্টিজানে হামলার মত ঘটনা এর প্রমাণ। তবে, এই হুমকি মোকাবেলায় রাষ্ট্রের সততা, মানবাধিকারের প্রতি প্রতিশ্রুতি এবং আইনসম্মত প্রক্রিয়ায় অটল থাকা জরুরি। সরকার সন্ত্রাসবিরোধী প্রচারণাকে যখন রাজনৈতিক বিরোধীদের দমনের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে, তখন তা আইনের শাসন, প্রতিষ্ঠান ও জনগণের বিশ্বাসকে ধ্বংস করে দেয়।

সেনাবাহিনী গুমে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে জড়িত নয়, তবে তারা জানত

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সামরিক বাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থা এবং র‌্যাবে দায়িত্বরত সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গুমে জড়িত থাকার অভিযোগ এলেও সেনাবাহিনী ‘প্রাতিষ্ঠানিকভাবে’ এ অপরাধে জড়িত ছিল না বলেই মনে করেন সরকারের গুম সংক্রান্ত কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। তবে সেনাবাহিনীর একজন সাবেক প্রধানের বক্তব্য তুলে ধরে কমিশনের সদস্য নূর খান বলছেন, সেনাবাহিনী প্রাতিষ্ঠানিকভাবে জড়িত না থাকলেও গুমের বিষয়টি তারা ‘জানত’।

‘গুমের’ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর মধ্যে কার কী ভূমিকা ছিল, তা গত ৪ জুন জমা দেওয়া কমিশনের দ্বিতীয় অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়। সেখানে বলা হয়, গুমের বেশির ভাগ ঘটনাই ঘটেছে পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে। গুমের শিকার ব্যক্তি, তার পরিবারের সদস্য ও প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশ, র‌্যাব এবং পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটকে ‘মূল অপরাধী’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এর বাইরে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই), জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) অধিদপ্তর ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার ‘সত্যতা’ পাওয়ার কথা বলেছে কমিশন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই বিভিন্ন ‘ব্ল্যাক সাইট’ পরিচালনা করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে, যার মধ্যে সবচেয়ে কুখ্যাত হচ্ছে ‘আয়নাঘর’, যেখানে বন্দিদের সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রেখে চরম নির্যাতন চালানো হত।

বিগত সরকারের আমলে ‘আয়নাঘর’ নামে কুখ্যাতি পাওয়া তিনটি গোপন বন্দিশালা গত ১২ ফেব্রুয়ারি ঘুরে দেখেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। জাতিসংঘের ‘গুম’ বিষয়ক কার্যনির্বাহী দলের (ডব্লিউজিইআইডি) ভাইস চেয়ারপারসন গ্রাজিনা বারানোভস্কারের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বুধবার সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাতে গ্রাজিনা বারানোভস্কা বিভিন্ন সংস্থায় (যেমন র‌্যাব, ডিজিএফআই, বিজিবি) অতীতে কর্মরত কিছু সেনা সদস্যের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

জবাবে সেনাবাহিনী প্রধান বলেন, এ ধরনের সেনা সদস্যরা ‘সংশ্লিষ্ট সংস্থার অধীনে নিয়ন্ত্রণাধীন থেকে’ দায়িত্ব পালন করেন। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিচার প্রক্রিয়া ও মানবাধিকার রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক তদন্ত প্রক্রিয়ায় সর্বাত্মক সহযোগিতা করে যাচ্ছে।

ওই সাক্ষাৎ বিষয়ে গুম সংক্রান্ত কমিশনের সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করেন এক সাংবাদিক। জবাব দিতে গিয়ে কমিশনের চেয়ারম্যান মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ডিজিএফআই প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত হয়। ডিজিএফআই সরাসরি প্রতিরক্ষা মন্ত্রীকে রিপোর্ট করে। সাধারণত প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর দায়িত্বটি পালন করে থাকেন প্রধানমন্ত্রী। অর্থাৎ ডিজিএফআইয়ের মহাপরিচালক সরাসরি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অধীনে পরিচালিত হচ্ছিল। এনএসআই সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর অধীনে পরিচালিত হত, যদিও তারা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে নয়। এটা ঠিক ইন্সটিটিউশনালি আর্মি রেসপন্সিবল না। এটা সত্য। কিন্তু ডিজিএফআইয়ের অফিসাররা, এনএসআইয়ের অনেক অফিসার, বিশেষ করে র‌্যাবের যারা কমান্ডিং অফিসার, র‌্যাবের এডিজি অপস যিনি থাকতেন তারা কিন্তু আর্মির অফিসার। এই অফিসাররা র‌্যাব, ডিজিএফআই, এনএসআই এ ডেপুটেশনে নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন। বেসিক্যালি তারা আর্মড ফোর্সের অফিসার, তারা সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী বা নৌবাহিনীর হতে পারেন। তাদের কমান্ডটা ডিফরেন্ট।

এসময় গুম সংক্রান্ত কমিশনের সদস্য নূর খান বলেন, তবে তারা জানত না এটা বলার সুযোগ নেই। কারণ তাদের একজন সাবেক সেনাপ্রধান পাবলিকলি বলেছেন যে, দুজন সেনাসদস্য তার কাছে আশ্রয় চেয়েছিলেন, তারা এই ধরনের কাজগুলোর সঙ্গে যুক্ত হতে চান না। একজন সাবেক সেনাপ্রধান এই স্টেটমেন্ট দেওয়ার পরে তারা জানত না–এই কথা বলার সুযোগ নেই। তবে অফিসিয়ালি ইনভলভ ছিল না। এ সময় চেয়ারম্যান বলেন, অ্যাজ আ ইন্সটিটিউশন–তারা (সেনাবাহিনী) অফিসিয়ালি ইনভলভ ছিল না।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চতুর্দশ প্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভুঁইয়া সম্প্রতি তার কর্মজীবনের স্মৃতিচারণা করে নিজের ফেইসবুক পাতায় ধারাবাহিকভাবে লিখছেন। তিনি ২৫ জুন ২০১২ সালে সেনাপ্রধান হিসেবে যোগ দেন এবং ২০১৫ সালের ২৫ জুন তার মেয়াদ শেষ হয়। তার একটি স্মৃতিচারণামূলক লেখার দিকে ইঙ্গিত করে ওই কথা বলেন নূর খান।

গুমের শিকার ব্যক্তিদের সম্ভাব্য চার ধরনের পরিণতি হয়েছিল

বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, কমিশনে জমা অভিযোগগুলো বিশ্লেষণে দেখা যায়, গুমের শিকার ব্যক্তিদের সম্ভাব্য চার ধরনের পরিণতি হয়েছিল। সেগুলো হলো ভুক্তভোগীকে হত্যা। বিচারের আগেই ভুক্তভোগীকে গণমাধ্যমের সামনে উপস্থাপন করে সাধারণত জঙ্গি তকমা দিয়ে বাংলাদেশে বিচারাধীন বা নতুন ফৌজদারি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো। ভুক্তভোগীকে সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাঠিয়ে দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে গ্রেপ্তারের ব্যবস্থা করা। আর ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে অল্পসংখ্যক ক্ষেত্রে মামলা না দিয়ে ভুক্তভোগীকে ছেড়ে দেওয়া।

৪ জুন প্রধান উপদেষ্টার কাছে কমিশন দ্বিতীয় অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন জমা দেয়। কমিশনপ্রধান বলেন, এই প্রতিবেদনে তাঁরা তুলে ধরেছেন, বিগত কর্তৃত্ববাদী সরকারের আমলে বাংলাদেশে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি ও ভিন্নমতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে পদ্ধতিগত দমননীতির অংশ হিসেবে গুমকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরও বহু অপরাধী ও তাঁদের শুভাকাঙ্ক্ষীরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার কেন্দ্রে অবস্থান করায় অনেক জোরালো প্রমাণ ও নিদর্শন ধ্বংস করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক অসহযোগিতা, সাক্ষীদের ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানা রকম ভীতিকর-আতঙ্কজনক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। তবু বহু ভুক্তভোগী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাঁদের অভিযোগ ও অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন। দেশীয়-আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বিস্তারিতভাবে তাঁরা সে কাহিনি তুলে ধরেছেন। গোপন আটক কেন্দ্রের অস্তিত্ব এখন আর অস্বীকার করা যায় না। এমনকি প্রধান উপদেষ্টা কিছু আটক কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন। সেখানে তিনি ভুক্তভোগীদের বক্তব্য শুনেছেন, যা গণমাধ্যমের কল্যাণে সারা বিশ্বের মানুষ দেখেছে।

গত ১৫ সেপ্টেম্বর গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশন (দ্য কমিশন অব এনকোয়ারি অন এনফোর্সড ডিসাপিয়ারেন্স) গঠিত হয়। গঠনের কমিশন বলপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান, শনাক্ত, কোন পরিস্থিতিতে গুম হয়েছিলেন, তা নির্ধারণে কাজ শুরু করে।

গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানের জন্য সারা দেশে মোট ১৬টি গোপন বন্দিশালা পরিদর্শন করা হয়েছে বলে কমিশন জানায়। কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ ছাড়া বিভিন্ন সময় তথ্যপ্রাপ্তির পরপরই তাৎক্ষণিকভাবে অভিযান চালানো করা হয়েছে। গুমসংক্রান্ত অভিযোগগুলোর মধ্য থেকে ১৩১টির বিষয়ে আইন মোতাবেক এফআইআর বা জিডি রেকর্ড করে ভুক্তভোগীদের সন্ধান-উদ্ধারে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পুলিশের মহাপরিদর্শকের কাছে পাঠানো হয়েছে।

দ্বিতীয় অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে প্রায় ১ হাজার ৮৫০ অভিযোগ বিশ্লেষণ করে ২৫৩ জন গুমের শিকার ব্যক্তির তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে বলে জানায় কমিশন। কমিশন বলেছে, এ ক্ষেত্রে তিনটি বৈশিষ্ট্য লক্ষণীয়। প্রথমত, নিখোঁজ হওয়ার সময় ভুক্তভোগীর নিকটাত্মীয়ের করা সাধারণ ডায়েরি, ফৌজদারি মামলা, গুম থাকা অবস্থায় সংবাদ প্রতিবেদনের মতো সমসাময়িক প্রমাণ রয়েছে। শুধু এই ২৫৩ জন সমসাময়িক প্রমাণ দাখিল করতে সক্ষম হয়েছেন। বাকিরা হননি। কারণ, তখন এসব ক্ষেত্রে জিডি করতে গেলে তা নেওয়া হতো না। দ্বিতীয়ত, গুম অবস্থা থেকে ফেরতের সময় ভুক্তভোগীদের সন্ত্রাসবিরোধী মামলাসহ বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় কোনো একটি সংস্থা স্বীকার করে নেয় যে ব্যক্তিটি তাদের হেফাজতে আছে। তৃতীয়ত, এই ভুক্তভোগীরা জীবিত আছেন, তাই তাঁরা কমিশনকে জানাতে পেরেছেন যে তাঁরা রাষ্ট্রীয় হেফাজতে গোপন আটক কেন্দ্রে বন্দী ছিলেন। যেখানে তাঁদের অনেকের একে অপরের সঙ্গে দেখাও হয়েছে। একই ধরনের নির্যাতনের মুখোমুখি হয়েছেন। অর্থাৎ এই ২৫৩ ব্যক্তিকে গুম করার মুহূর্তে, গুমকালীন ও গুম থেকে ফেরত আসার মুহূর্তে তিনটি পর্যায়ই অকাট্য প্রমাণাদি পাওয়া যাচ্ছে।

কমিশন জানায়, তাদের কাছে দাখিল করা ৮১ শতাংশ অভিযোগ জীবিত ভুক্তভোগীদের। ১৯ শতাংশ অভিযোগ ফেরত না আসা ভুক্তভোগীদের। এবারের প্রতিবেদনে গুম অবস্থা হতে ফিরে না আসা ১২ জন ভুক্তভোগীর বিষয়ে অগ্রগতি তুলে ধরা হয়েছে, যাঁদের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে অনুসন্ধান সম্পন্ন হয়েছে। তাঁদের গুমের জন্য কারা দায়ী, তা প্রাথমিকভাবে কমিশন শনাক্ত করতে পেরেছে। চলমান অনুসন্ধানের স্বার্থে এই মুহূর্তে এর চেয়ে বেশি প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না।

ফিরে না আসা ভুক্তভোগীদের আরও অনেকের বিষয়েই কমিশনের কাজের অগ্রগতি রয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। কমিশন বলেছে, কিন্তু একেকজন ভুক্তভোগীর বিষয়ে অনুসন্ধান সম্পন্ন করার আগে এ বিষয়ে এ মুহূর্তে তথ্য প্রকাশের কোনো সুযোগ নেই। ফিরে না আসা ভুক্তভোগীদের বিষয়ে অপরাধী এবং গুমের অপরাধ সংঘটনের স্থানসহ নানাবিধ বিষয়ে তথ্যের ঘাটতি, পুরোনো কললিস্ট না পাওয়াসহ নানা রকম বিলম্বঘটিত প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছে কমিশন। তা সত্ত্বেও কমিশন আন্তরিকতার সঙ্গে অনুসন্ধান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

গুমে জড়িতরা এখনো ক্ষমতার কেন্দ্রে, ভিকটিমদের দিচ্ছে হুমকি

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গুমে জড়িত কর্মকর্তাদের অনেকে এখনো ‘রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার কেন্দ্রে’ অবস্থান করছেন এবং তারা ঘটনার শিকার ও সাক্ষীদের ‘ভয়-ভীতি’ দেখিয়ে চলেছেন বলে প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়েছে গুম সংক্রান্ত অনুসন্ধান কমিশন। কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলছেন, তাদের নাম প্রকাশ করলে ভিকটিমদের জীবন ঝুঁকিতে পড়ে যেতে পারে। এই কারণে তাদের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, কমিশনের দ্বিতীয় অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন গত ৪ জুন প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রতিবেদনে আমরা তুলে ধরেছি যে, বিগত কর্তৃত্ববাদী সরকারের আমলে বাংলাদেশে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি ও ভিন্ন মতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে পদ্ধতিগত দমননীতির অংশ হিসেবে গুমকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। ৫ অগাস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরেও বহু অপরাধী ও তাদের শুভাকাঙ্ক্ষীরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার কেন্দ্রে তাদের অবস্থানে থাকায় অনেক জোরালো প্রমাণ ও নিদর্শন ধ্বংস, অনেক ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক অসহযোগিতা, সাক্ষীদের ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানারকম ভীতিকর ও আতঙ্কজনক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

এসব কর্মকর্তা কারা, তাদের নাম-পরিচয় জানতে চাইলে চেয়ারম্যান বলেন, যাদেরকে আমরা আইডেন্টিফাই করেছি তাদের নামগুলো আমরা প্রকাশ করছি না। কী জন্যে করছি না, মেইনলি একটা কারণ- ফর দ্যা সেইফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি অব দ্যা ভিকটিমস। এখনো গুমের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিরা (পারপিট্রেটর) ভিকটিমদের থ্রেট করতেছে। একজন ভিকটিমকে থ্রেট করা হচ্ছে এমন অডিও রেকর্ডও আছে আমাদের কাছে।

প্রশ্নকারী সাংবাদিকের উদ্দেশ্যে কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, আপনি চান ওদের জীবন ঝুঁকিতে পড়ুক? এমনিতেই তারা ট্রমার মধ্যে আছে। আমরা ভিকটিম এবং ঘটনার শিকার পরিবারগুলোর জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলতে চাই না। ভিকটিমদের ও সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালকে (আইসিটি)। দায়িত্বটা এখন তাদের, আমাদের কাছে তো কোনো মেকানিজম নাই। এখন এটা ট্রাইবুনালের কর্তব্য।

একই প্রশ্নের জবাবে গুম সংক্রান্ত কমিশনের সদস্য নূর খান বলেন, ভিকটিমদের নিরাপত্তা এবং সন্দেহভাজন আসামি যাতে পালিয়ে না যায়, এ বিষয়গুলো মাথায় রেখে সম্পূর্ণ বিষয়টা চলমান অবস্থায় আমাদের পক্ষে প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না।

ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে ‘গুম ও আয়নাঘরের’ বিষয়টি আবার সামনে আসে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্বে এসে এসব ঘটনা তদন্তে গত ২৭ অগাস্ট অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের গুম তদন্ত কমিশন গঠন করে। কমিশন গত ১৪ ডিসেম্বর অন্তর্বর্তী একটি প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেয়। পরদিন ওই প্রতিবেদনের কিছু অংশ প্রকাশ করা হয়।

ওই প্রতিবেদনে আওয়ামী লীগের শাসনামলে ‘গুমের নির্দেশদাতা’ হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়ার দাবি করা হয়। এরপর ৪ জুন দ্বিতীয় অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে তুলে দেয় কমিশন। সেখানে ‘গুমের’ শিকার ব্যক্তি এবং প্রত্যক্ষদর্শী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বরাতে নির্যাতান ও স্বীকারোক্তি আদায়ের সচিত্র বর্ণনা দেওয়া হয়।

২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শাসনামল কমিশনের বিবেচনায় আনা হচ্ছে। কমিশন এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৮৫০টি অভিযোগ পেয়ে ১ হাজার ৩৫০টি অভিযোগ যাচাই বাছাই শেষে দ্বিতীয় প্রতিবেদন তৈরি করেছে।

গুমের শিকার হওয়ার পর নিখোঁজ ব্যক্তিদের খোঁজে পেতে কমিশন কী করছে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের ফৌজদারী কার্যবিধিতে দুটো বিষয় আছে। একটা হচ্ছে অনুসন্ধান (এনকোয়্যারি), আরেকটা হচ্ছে তদন্ত (ইনভেস্টিগেশন)। আমরা কিন্তু তদন্ত করছি না, আমরা অনুসন্ধান করছি। তদন্তের দায়িত্ব হচ্ছে আমাদের যে আইসিটি আছে তাদের। তদন্ত করা পুলিশের দায়িত্ব। সার্চ হচ্ছে পার্ট অব ইনভেস্টিগেশন, নট পার্ট অব এনকোয়্যারি। আপনাদের মনে রাখতে হবে, সার্চ হচ্ছে অনেক গভীর তদন্ত।

কমিশনের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন এসময় বলেন, আমরা যে একেবারেই সার্চ করছি না তা নয়। কমিশন সার্চের প্রক্রিয়ায় চারটি কাজ করছে। এক নম্বর হচ্ছে পুলিশের কাছে আমরা ১৩১টি কেইস পাঠিয়েছি। যাদের বিষয়ে তদন্ত করা ও তাদের খুঁজে বের করতে বলেছি আমরা। দ্বিতীয়ত হচ্ছে, আমরা নিজেরা বিভিন্ন জায়গায় তথ্যের ভিত্তিতে গোপন বন্দিশালাগুলোতে ইনসপেকশনে যাচ্ছি। তৃতীয়ত: ভারতের কারাগারে কতোজন বাংলাদেশি আছে, সেটার তালিকা আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে চেয়েছি এবং এটা আংশিক পেয়েছি। আমরা সেই নামগুলো আমাদের লিস্টের সাথে মিলিয়ে দেখছি। চতুর্থত বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে যে বাংলাদেশিদের পুশ ইন করা হচ্ছে, তাদের মধ্যে গুম হওয়া কেউ আছে কী না সেটা মিলিয়ে দেখছি। এমন না যে আমরা সার্চ করছি না। তবে যেটা ইন ডেপথ, সেটা পুলিশ করবে, আইসিটি করবে। এখনো তালিকা মিলিয়ে গুম হওয়া কাউকে শনাক্ত করা যায়নি বলে সাজ্জাদ হোসেন জানান।