স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ সীমান্ত হত্যা বন্ধ চায়। আমাদের বোন ফেলানী কাঁটাতারে ঝুলন্ত অবস্থায় জীবন দিয়েছিল। আমরা এই কথাটা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য, তার প্রতি কি ধরনের নৃশংসতা হয়েছিল, সেটা প্রতিদিন মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য এই সড়কের নামকরণ করছি। তিনি বলেন, একইসঙ্গে বিশ্বের বিবেকের কাছে তুলে ধরছি, সীমান্ত হত্যার মতো একটি জঘন্যতম পরিস্থিতি বাংলাদেশের সীমান্তে বিরাজ করছে। আর সেই কারণেই বর্তমান সরকার সমস্ত সীমান্ত হত্যা বন্ধ চায় বলেই। এদিকে ভারতীয় হাইকমিশনের পাশের রাস্তার নাম ‘ফেলানী এভিনিউ’ করা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশান-২ গোলচত্বরে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) আয়োজিত সীমান্তে বিএসএফ-এর গুলীতে নিহত কিশোরী ফেলানীর স্মরণে গুলশান-২ থেকে প্রগতি সরণি পর্যন্ত সড়কটির নাম ‘ফেলানী অ্যাভিনিউ’ হিসেবে নামফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে একথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী, পূর্ত সচিব মো. নজরুল ইসলাম, রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজসহ ডিএনসিসির কর্মকর্তাবৃন্দ। ফেলানী অ্যাভিনিউ নামফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী বলেন, ফেলানী হত্যাকা- নিছক একটি হত্যাকা- নয়; এটি একটি সুস্পষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা। এ সময় ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে নিজেদের সম্মান বজায় রাখার প্রতীক ও প্রতিবাদ হিসেবেই ফেলানীর নামে এই সড়কের নামকরণ করা হয়েছে। নামফলক উন্মোচন শেষে দোয়া পরিচালনা করেন ডিএনসিসি মসজিদের ইমাম মাওলানা আনসার উল করিম।
উপদেষ্টা বলেন, দেশের ১৮ কোটি মানুষ সীমান্ত হত্যা বন্ধ চায়। ফেলানীর প্রতি কী ধরনের নৃশংসতা হয়েছে সেটি প্রতিদিন স্মরণ করিয়ে দিতেই এ রাস্তার নামকরণ। এ সড়কের মাধ্যমে বিশ্ব বিবেকের কাছে তুলে ধরছি, সীমান্ত হত্যার মতো জঘন্য পরিস্থিতি বাংলাদেশের সীমান্তে বিরাজ করছে। বর্তমান সরকার সব সীমান্ত হত্যা বন্ধ চায় বলে এ রাস্তা উদ্বোধন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে মাথা উঁচু করে সম্মান বজায় রাখতে পারে তার প্রতীক এ রাস্তা।
এদিকে কুড়িগ্রাম সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলীতে নিহত ফেলানী খাতুনের নামে রাজধানীর গুলশানে একটি সড়কের নামকরণ হয়েছে। গুলশান-২ থেকে প্রগতি সরণি পর্যন্ত সড়কটির নতুন নাম দেওয়া হয়েছে ‘ফেলানী এভিনিউ’। বাবার সঙ্গে কিশোরী ফেলানী ভারতের নয়াদিল্লীতে গৃহকর্মীর কাজ করত। বিয়ের উদ্দেশে সে দেশে ফিরছিল। ২০১১ সালে ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের অনন্তপুর-দিনহাটা সীমান্তের খিতাবেরকুঠি এলাকায় বিএসএফের সদস্যরা ফেলানীকে গুলী করে হত্যা করে। ফেলানীর লাশ পাঁচ ঘণ্টা কাঁটাতারে ঝুলে ছিল।