সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবসময় চীন বাংলাদেশের পাশে থাকবে উল্লেখ করে ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, রাখাইনে প্রস্তাবিত মানবিক করিডোর প্রক্রিয়ায় চীন যুক্ত নয়। চীন প্রতিটি দেশের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করে। এটা মিয়ানমার ও বাংলাদেশের ইস্যু। ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, রাখাইনে প্রস্তাবিত মানবিক করিডোর প্রক্রিয়ায় চীন যুক্ত নয়। চীন প্রতিটি দেশের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করে। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা পরিহার করে উভয়পক্ষকে শান্তিপূর্ণ উপায়ে এই সঙ্কটের সমাধানে আসার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।
গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজে (বিস) আয়োজিত এক সেমিনারে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। সেমিনারে মূল বক্তা ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিস চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত এ এফ এম গাউসুল আজম সরকার। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন বিস মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ইফতেখার আনিস।বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের ৫ দশক: নতুন উচ্চতার দিকে যাত্রা’ শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করে বিস। সেমিনারে অতিথি বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।
তিস্তা প্রকল্পে সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, তিস্তা প্রকল্পে সহায়তা দিতে প্রস্তুত চীন। তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এক প্রশ্নের জবাবে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ভারত-পাকিস্তানের উত্তেজনা প্রশমনে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্ত চান তিনি। তিনি বলেন, পরিস্থিতি শান্ত করতে উভয় দেশকে কাজ করতে হবে। কমাতে হবে উত্তেজনাও। এমন সংকটময় সময়ে চীন সবসময়ই সত্যের পক্ষে থাকবে। কথা প্রসঙ্গে ইয়াও জানান, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় পাশে থাকবে তার দেশ। চলতি মাসের শেষে শত ব্যবসায়ী বিনিয়োগকারীসহ দেশটির বাণিজ্যমন্ত্রী আসছেন। ইয়াও ওয়েনের দাবি এত বড় বাণিজ্যিক প্রতিনিধি দল আগে আসে নাই। এর মাধ্যমে বাণিজ্য আরো প্রসারিত হবে।
সেমিনারে অতিথি বক্তা ইয়াও ওয়েন বলেন, ভারত ও পাকিস্তান দুটোই চীনের প্রতিবেশী দেশ। তবে ৭ মে দুই দেশের মধ্যে যে ঘটনা ঘটেছে, চীন তা নিয়ে ইতোমধ্যেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা পরিহার করে উভয়পক্ষকে শান্তিপূর্ণ উপায়ে এই সঙ্কটের সমাধানের আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, চীন সকল প্রকার সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে। কাশ্মীর হামলার ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত করতে হবে।
সেমিনারে মূল বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, চীন-বাংলাদেশের সম্পর্ক শুধু ৫০ বছরের নয়, এই দুই দেশের সম্পর্ক হাজার বছরের। চীন বাংলাদেশের বিশ্বস্ত বন্ধু। অবকাঠামো উন্নয়ন ও বাণিজ্য সহযোগিতায় চীন বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তিনি বলেন, চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র উল্লেখযোগ্য। সেটা হলো, চীন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে কখনো কোনো হস্তক্ষেপ করেনি। আরেকটি হলো, চীন বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে গভীর সম্পর্ক রাখে। ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, তিস্তা ইস্যু, চিকিৎসা, যুব উন্নয়ন, উচ্চগতি সম্পন্ন রেল যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি খাতে চীন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।