পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সিভিল সার্ভিসেস একাডেমির মধ্যে শিগগিরই একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ও পাকিস্তান সফররত সিভিল সার্ভিসেস প্রতিনিধি দলের প্রধান নাসিমুল গনি। এই অগ্রগতিকে দক্ষিণ এশিয়ার দুই দেশের প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ক জোরদারের একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছেন তিনি। পাকিস্তানের লাহোরে সিভিল সার্ভিস একাডেমির ৪৮তম স্পেশাল ট্রেনিং প্রোগ্রামের (এসটিপি) প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার পর পাকিস্তানের পত্রিকা দ্য নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, দুই দেশ ‘সঠিক পথে এগোচ্ছে’ এবং একে অপরের অভিজ্ঞতা থেকে ক্রমেই উপকৃত হবে।

এই জ্যেষ্ঠ সচিব বলেন, পাকিস্তান আমাদের কাছে সিভিলে সার্ভিস পর্যায়ের এমওইউ পাঠিয়েছে, যা বাংলাদেশের সরকার বিবেচনা করছে। নাসিমুল গনি বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ডিজিটাল গভর্নেন্স ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মতো ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহায়তা দিতে পারে পাকিস্তান। একই সঙ্গে তিনি বলেন, উদীয়মান বিভিন্ন খাতে পাকিস্তানের অভিজ্ঞতা থেকেও বাংলাদেশ শিখতে চায়।

পাকিস্তানের সিভিল সার্ভিস কর্মকর্তাদের প্রশংসা করে এই সিনিয়র সচিব বলেন, তারা অত্যন্ত মেধাবী, দক্ষ এবং শাসনকার্য পরিচালনার জন্য প্রস্তুত। তাদের যোগ্যতা পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের স্থিতিশীলতা নিয়ে তাকে আশ্বস্ত করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। নাসিমুল গনি বলেন, ‘ভিন্ন সামাজিক-অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে কাজ করলেও পাকিস্তান ও বাংলাদেশ প্রায় একই ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। সেগুলো হলো- দারিদ্র্য বিমোচন, দুর্যোগ প্রস্তুতি, সেবাদান ব্যবস্থা ও প্রশাসনিক সংস্কার। এসব বিষয়ে গঠনমূলক সংলাপ ও জ্ঞান বিনিময় দুই দেশকে একে অপরের শক্তিকে কাজে লাগাতে সহায়তা করবে। উদাহরণ হিসেবে বন্যা ব্যবস্থাপনার কথা উল্লেখ বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই সিনিয়র সচিব বলেন, “এ সফরে বাংলাদেশ তার দুর্যোগ প্রস্তুতি কার্যক্রম পাকিস্তানি সহকর্মীদের সঙ্গে ভাগ করেছে, আবার ঢাকা পাকিস্তানের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও প্রশাসনিক সংস্কারের অগ্রগতি জানতে আগ্রহী।

আসন্ন সমঝোতা স্মারক শাসনব্যবস্থা, সক্ষমতা উন্নয়ন ও প্রশাসনিক প্রশিক্ষণে দুই দেশের আরও গভীর সহযোগিতার ভিত্তি তৈরি করার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে কয়েকটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরের লক্ষ্যে ১৭ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানে যান নাসিমুল গনি। থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ব্যাংকক হয়ে পাকিস্তানের ইসলামাবাদে পৌঁছান তিনি। ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তানে অবস্থান করবেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব। সফর শেষে ওইদিন দুপুর ২টায় ইসলামাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন এবং বিকেল সাড়ে ৩টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন।