জুলাই সনদ বাস্তবায়ন, গণভোটের সময় নির্ধারণ ও আদেশ জারি নিয়ে দেশে বড় ধরনের রাজনৈতিক অনৈক্য তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রশ্নও সামনে এসেছে। এক পক্ষের আলটিমেটাম অন্যপক্ষের আগের অবস্থানে অনড় থাকায় পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল আকার ধারণ করছে। রাজনৈতিক বোদ্ধারা বলছেন, এ অনৈক্য ও বিভেদ বহুল কাক্সিক্ষত ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকেও একটা অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

পরিস্থিতি নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা তপন চৌধুরী বলেছেন, দেশে রাজনৈতিক সমঝোতা নিয়ে দলগুলোর মধ্যে যে অনৈক্য ও বিভেদ দেখা দিয়েছে, তা খুবই হতাশাজনক। এই অনৈক্য ও বিভেদ নির্বাচনকেও একটা অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আমরা দেখছি সংস্কার প্রশ্নে দলগুলোর মধ্যে মতভেদ প্রকট হয়ে উঠেছে। তাতে পুরো প্রক্রিয়া এখন ঝুলে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। যদি শাসনতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থায় আমরা কোনো পরিবর্তন করতে না পারি, তাহলে দেশ আবারও এক অন্ধকারে পড়বে। পুরোনো ব্যবস্থা জেঁকে বসবে। অথচ গত বছর তরুণদের নেতৃত্বে যে পরিবর্তন হয়েছিল, তাতে সাধারণ মানুষসহ ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তাদের একটি বড় অংশ আশাবাদী হয়েছিলেন। যতই দিন যাচ্ছে, সেই আশা ফিকে হচ্ছে। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারী, শিক্ষার্থী, তরুণ, বৃদ্ধ সবাই দেশে স্থিতিশীলতা দেখতে চায়। রাজনৈতিক অস্থিরতা আর দেখতে চাই না। কিন্তু সেই আশা কতটা পূরণ হবে, তা নিয়ে এখন আমরা সন্দিহান। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনৈক্য থাকলে নির্বাচন কতটা সুষ্ঠু করা যাবে, তা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দেবে। সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে সেটি হবে জাতির জন্য বড় দুর্দশা ও চরম হতাশার। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক মতবিরোধের সুযোগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিরও কিছুটা অবনতি দেখতে পাচ্ছি। এটি জনজীবন ও ব্যবসা-বাণিজ্য কোনো কিছুর জন্যই সুখকর নয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আমরা যেটি বলেছি সেটিই সঠিক এমন অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভূখণ্ডে আবারও অনিশ্চয়তার ঘূর্ণি দেখা দিয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের পর যে আশা জেগেছিল- একটি অন্তর্বর্তীকালীন নৈতিক শাসনব্যবস্থা, যেখানে রাষ্ট্রের মৌলনীতি পুনর্গঠিত হবেÑ তা ক্রমেই অনৈক্য, কৌশলগত দ্বন্দ্ব ও রাজনৈতিক অবিশ্বাসের চোরাবালিতে তলিয়ে যাচ্ছে। ঐতিহাসিক ‘জুলাই সনদ’, যা জাতির কাছে এক নতুন রাজনৈতিক অঙ্গীকার হিসেবে হাজির হয়েছিল, এখন সেই সনদই হয়ে উঠেছে পরস্পরবিরোধী কূটনীতি ও দলীয় স্বার্থের পরীক্ষাক্ষেত্র। ঐকমত্যের দর্শন পরিণত হলো রাজনৈতিক স্বার্থের প্রতিদ্বন্দ্বিতায়, আর জুলাই সনদ পরিণত হলো দলীয় স্বার্থের ব্যাখ্যার ক্ষেত্রফলে। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি এই তিন দল এবং তাদের সাথে থাকা দলগুলোও এখন এই সনদের বাস্তবায়ন ঘিরে পরস্পরবিরোধী অবস্থানে দাঁড়িয়ে। বিএনপি অনড়, তাদের দাবি গণভোট জাতীয় নির্বাচনের দিনেই হতে হবে, যাতে জনগণের মতামত সরাসরি নির্বাচনের বৈধতার সঙ্গে যুক্ত হয়। অন্যদিকে জামায়াতের দাবি নভেম্বরে, নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজন করতে হবে। নচেৎ জনগণের রাজনৈতিক আকাংখা অবজ্ঞাত থাকবে। আর এনসিপি বলছেÑ সময় নয়, প্রক্রিয়াই মুখ্য গণভোট যেকোনো সময় হতে পারে, যদি সেটি গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই তিনটি অবস্থান শুধু রাজনৈতিক নয়, বরং বাংলাদেশের ক্ষমতার রাজনীতির তিনটি দর্শনকে প্রতিফলিত করছেÑ আস্থাহীনতা, কৌশল, এবং সুবিধাবাদী বাস্তবতা।

সূত্র মতে, জুলাই সনদের দর্শন মূলত নৈতিক রাষ্ট্র পুনর্গঠনের ওপর দাঁড়ানো। সেখানে সুশাসন, জবাবদিহিতা, নিরপেক্ষ নির্বাচন, এবং জনগণের ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের প্রতিশ্রুতি ছিল। কিন্তু দলগুলো সেই নৈতিক দলিলকে নিজেদের স্বার্থে ছেঁটে ফেলছে। বিএনপি মনে করে কমিশন সরকারের স্বার্থে কাজ করছে। ফলে ঐক্যের দলিল হয়ে উঠেছে অনৈক্যের মঞ্চ। বিএনপির নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রকাশ্যেই বলেছেন, কমিশনের প্রস্তাব জাতিকে ঐক্য নয়, বরং বিভাজনের পথে ঠেলে দিচ্ছে। এই বক্তব্যগুলো প্রমাণ করে, রাজনীতির আড়ালে এক নীরব সংঘর্ষ চলছেÑ ক্ষমতার নকশা নিয়ে।

এদিকে মাঠপর্যায়ে কর্মীদের মধ্যে রাজনৈতিক ঐক্যের যে আবহ তৈরি হয়েছিল, তা ভেঙে গেছে। রাজনীতির এই অনৈক্য কেবল নির্বাচনের দিনপঞ্জি বা গণভোটের সময়সূচির প্রশ্ন নয় এটি রাষ্ট্রের নৈতিক কাঠামো নিয়েও প্রশ্ন তোলে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সরকারের নৈতিক বৈধতা কেবল নিরপেক্ষ আচরণের মাধ্যমেই টিকে থাকতে পারে। ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের আত্মবিশ্বাস থাকলেও বাস্তবে প্রশ্ন উঠছে, নির্বাচন আদৌ গ্রহণযোগ্য হবে কি না। অন্তর্বর্তী সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো রাজনৈতিক আস্থা বজায় রাখা। কারণ একটি নির্বাচনের সাফল্য কেবল কারিগরি নয়, তা রাজনৈতিক বিশ্বাসের ওপরও নির্ভরশীল। যদি রাজনৈতিক দলগুলো মনে করে সরকার কোনো নির্দিষ্ট পক্ষের স্বার্থে কাজ করছে, তাহলে নির্বাচন আগেই তার নৈতিক ভিত্তি হারাবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের কথা বলেছেন- এটা হঠকারী নয়, বরং সুপরিকল্পিত। তিনি দলগুলোর মানসিক কাঠামো বুঝে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, সেই বোঝাপড়ার মধ্যে কি রাজনৈতিক বাস্তবতার পরিমিতি আছে? বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির বর্তমান অবস্থান প্রমাণ করছে, রাজনৈতিক দলগুলো এখন আর জাতীয় ঐক্যের মনস্তত্ত্বে বিশ্বাসী নয়, তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় টিকে থাকতে চায়।

সংশ্লিষ্টরা প্রশ্ন রেখে বলছেন, এই বিভাজনের শেষ কোথায়? নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসছে, রাজনৈতিক সন্দেহ ও অবিশ্বাসের মাত্রাও তত বাড়ছে। ফেব্রুয়ারির নির্বাচন যদি রাজনৈতিক সমঝোতা ছাড়া অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে যেকোনো ফলাফলই হবে বিতর্কিত। আর একবার যদি নির্বাচন বিতর্কিত হয়, রাষ্ট্র আবারও প্রবেশ করবে সেই পুরোনো চক্রেÑ অরাজকতা, প্রতিবাদ, সহিংসতা ও বৈধতার সংকটে। তারা বলছেন, আগামী নির্বাচন শুধু রাজনৈতিক নয়, নৈতিক সংকটেরও প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠবেÑ যেখানে জনগণের ভোট নয়, বরং দলীয় অবস্থান নির্ধারণ করবে রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ। আগামী নির্বাচন শুধু ক্ষমতার পালাবদল নয়, রাষ্ট্রের আদর্শিক চরিত্র নিয়েও প্রশ্ন তুলবে।

নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনৈক্যের সুর বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন দৈনিক দেশ রূপান্তরের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসব্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টক শো অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দল কিংবা বর্তমান সরকারের ভুলের কারণে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশে যে ঐক্য তৈরি হয়েছে, সেখানে যদি বড় ধরনের ফাটল ধরে তাহলে বাংলাদেশ আবার কত বছরের জন্য পিছিয়ে যাবে সেটা বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ সব দল বোঝে।

অন্যদিকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসছে, ততই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন ও নির্বাচনী মাঠ। নির্বাচন কমিশন আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণার সম্ভাবনা দেখছে, তবে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হওয়ার আগেই সহিংসতার আগুন জ্বলে উঠেছে দেশের নানা প্রান্তে। নির্বাচনের আগ মুহূর্তে গত অক্টোবর মাসেই নিহত হয়েছেন ১০ জন। যা দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে। সর্বশেষ চট্টগ্রাম নগরীর হামজারবাগে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর গণসংযোগে গুলির ঘটনায় এই আশঙ্কা আরও তীব্র হয়। গত বুধবারের সেই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান আলোচিত সন্ত্রাসী সরওয়ার হোসেন বাবলা (৪৩), আহত হন এরশাদ উল্লাহসহ আরও কয়েকজন। একই দিন রাতে রাউজানে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজন গুলিবিদ্ধসহ বেশ কয়েকজন আহত হন।

পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) এ এইচ এম শাহাদত হোসাইন বলেন, নির্বাচনী সহিংসতা রোধে পুলিশ এখন থেকেই সক্রিয়। নির্বাচন-পূর্ব, নির্বাচনকালীন ও পরবর্তী সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিশেষ অভিযান চলবে। বিশেষ করে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি।

তবে নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, সহিংসতা দমনে শুধু পুলিশি তৎপরতা যথেষ্ট নয় রাজনৈতিক দলের আন্তরিকতা ও পারস্পরিক সহনশীলতা ছাড়া শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সম্ভব নয়। তারা বলছেন, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে বিপুলসংখ্যক অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। সেই সঙ্গে গণ-অভ্যুত্থানের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু অস্ত্র লুটও হয়, যার অধিকাংশ এখনো উদ্ধার হয়নি। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অস্ত্রগুলো নির্বাচনের সময় সহিংসতার ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দিতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নির্বাচনী সহিংসতার মূলে রয়েছে রাজনৈতিক অসহিষ্ণুতা, পারস্পরিক অবিশ্বাস, এবং ক্ষমতার একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণের আকাঙ্ক্ষা।

মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির (এইচআরএসএস) নির্বাহী পরিচালক ইজাজুল ইসলাম বলেন, আমরা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি যে, প্রার্থীদের ঘোষণা ও প্রচারণার সঙ্গে সঙ্গেই সহিংসতা বাড়ছে। যদি এখনই রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ না আনা যায়, তবে ভোটের সময় পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে।

মানবাধিকারকর্মী আবু আহমেদ ফয়জুল কবির বলেন, সহিংসতা গণতন্ত্রের শত্রু। একজন প্রার্থী গুলিবিদ্ধ হওয়া এবং একজন প্রাণ হারানো কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত তাদের কর্মীদের নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং সহিংসতায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া।

এই মুহূর্তে জনমনে একটি প্রশ্ন, শেষ পর্যন্ত কী ঘটতে চলেছে দেশে? চরম এক অনিশ্চয়তা গ্রাস করেছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে যে বিশৃঙ্খলা অরাজকতা অনিয়ম চলছিল তা কাটিয়ে এবার একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে দেশে, তেমন আশায় বুক বাঁধলেও এখন যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তাতে সবকিছু অনিশ্চিত হয়ে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।

রাজনৈতিক দলগুলোকে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ বজায় রেখে এক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল হোন। আন্দোলন-সংগ্রামে একত্রে থেকেছেন, এটা অব্যাহত রাখুন।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (জাতীয় ঐকমত্য) মনির হায়দার বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থানকে কাছাকাছি নিয়ে আসার জন্য কমিশনের বিভিন্ন রকম চেষ্টা ও তৎপরতা চলমান আছে।