অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং ঢাকা সফররত পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের মধ্যে অনুষ্ঠিত দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান একটি চুক্তি এবং ৫টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে। বাংলাদেশ ও পাকিস্তান ঢাকায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের এক বৈঠকে দু’দেশের মধ্যে বিদ্যমান বহুমাত্রিক ও ঐতিহাসিক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। এদিকে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেন, আমি মনে করি, পরিবারের মধ্যে, দুই ভাইয়ের মধ্যে কোনো কিছুর একবার সমাধান হলে, সেটা হয়ে গেছে। ইসলাম বলেছে, হৃদয় পরিষ্কার করতে। আপনারা আপনাদের হৃদয় পরিষ্কার করুন। দু’দেশের মানুষের আরও ভালো কিছু করার জন্য আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। ইসহাক দার বলেন, দুই দেশের মানুষের জন্য আরও ভালো কিছু করার জন্য আমরা একসঙ্গে কাজ করতে চাই। এটাতেই আমাদের ঐকমত্য এবং আমরা সেটাই করছি। দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে আলোচনার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আমরা বিস্তৃত বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। বাণিজ্য, অর্থনীতি, বিনিয়োগ এবং নিরাপত্তা প্রতিরক্ষায় একযোগে কাজ করাসহ পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবকিছু। তিনি বলেন, আপনাদের সঙ্গে আমাদের ঐকমত্য আছে, আমাদের মতামতে কোনো ভিন্নতা ছিল না। যা খুবই ভালো বিষয়। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, দুই পক্ষ একটি বিষয় ঠিক করেছি, যেটা আমাদের সমাধান করতে হবে, সেটি হলো দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে যাতে খুব স্মুথলি এগোতে পারি, সেই বিষয়গুলোতে আমরা ঐকমত্য। এজন্য এগুলো পেছনে ফেলতে হবে।

গতকাল রোববার সকাল পৌনে ১০টার দিকে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁ তৌহিদ হোসেন-ইসহাক দার শুরুতে একান্তে এবং পরে প্রতিনিধি পর্যায়ে বৈঠক করেন এবং বৈঠক শেষে তিনি এইসব কথা বলেন। এতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়ামসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন। পাকিস্তানের পক্ষে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। উল্লোখ্য যে, গত বছর বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানের পর ঢাকা ও ইসলামাবাদের মধ্যে নতুন করে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার হয়েছে। উভয় দেশ সরাসরি জাহাজ চলাচল, ভিসা ও বাণিজ্য ব্যবস্থা সহজীকরণের উদ্যোগ নিয়েছে এবং সরাসরি ফ্লাইট চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছে।

৫ স্মারক ও এক চুক্তি সই: একমাত্র যে চুক্তিটি সই হয়েছে সেটি হলো- দুই দেশের সরকারি ও কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের ভিসা বিলোপ চুক্তি। আর যেসব বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে সেগুলো হলো-দুই দেশের বাণিজ্যবিষয়ক জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন, সংস্কৃতি বিনিময়, দুই দেশের ফরেন সার্ভিস একাডেমির মধ্যে সহযোগিতা, দুই দেশের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থার (বাসস ও এপিপিসি) মধ্যে সহযোগিতা এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) সঙ্গে পাকিস্তানের ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ ইসলামাবাদের (আইএসএসআই) সহযোগিতা।

বৈঠক শেষে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, পাকিস্তান আমাদের দক্ষিণ এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী দেশ। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সম্পর্ক বহুমুখী এবং ঐতিহাসিক। আমরা বিদ্যমান সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছি। তিনি বলেন, বৈঠকে অতীতের অমীমাংসিত বিষয়, ব্যবসা ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং ক্রীড়া বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বৈঠকে উভয় পক্ষ বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করার এবং বিনিয়োগ সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছে। কেননা দুই দেশের বার্ষিক লেনদেন বর্তমানে এক বিলিয়ন ডলারের নিচে রয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ পাকিস্তানের বাজারে সাউথ এশিয়ান ফ্রি ট্রেড এরিয়া (সাফটা) এর আওতায় বস্ত্র, জ্বালানি, ওষুধ শিল্প, কৃষি, মৎস্য ও পশুপালন এবং তথ্য প্রযুক্তি খাতে প্রবেশাধিকারের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে। পাকিস্তানও বাংলাদেশে জ্বালানি রপ্তানি করার বিষয়ে আলোচনা করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে চট্টগ্রাম ও করাচির মধ্যে শিপিং পরিষেবা শুরু হয়েছে, তবে এটি নিয়মিত নয়। আমরা পরিষেবাটি নিয়মিত করার উপর জোর দিয়েছি। এছাড়া, ফ্লাইট পরিচালনার জন্য দুইটি বিমান কোম্পানিকে প্রাথমিক অনুমতি দেওয়া হয়েছে এবং এখন সরাসরি ফ্লাইট চালুর জন্য বিস্তারিত কাজ চলছে, যা বাণিজ্য, পর্যটন এবং অন্যান্য খাতে সহায়ক হবে। তিনি বলেন, উভয় পক্ষ উচ্চশিক্ষা খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা করেছে। বিশেষ করে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি প্রদান নিয়ে আলোচনা হয়েছে। উভয় পক্ষ চিকিৎসা শিক্ষা, ওষুধ, প্রকৌশল এবং প্রযুক্তি খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে একমত হয়েছে। দ্বিপাক্ষিক বিষয় ছাড়াও আঞ্চলিক বিষয়গুলোতে, যেমন- সার্কের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর আলোচনা করেছি।

গাজায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে উভয় পক্ষ চলমান নৃশংসতা বন্ধ করতে তাদের মতামত ব্যক্ত করেছে এবং তারা দুর্ভিক্ষকে গাজার জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের প্রতিবাদ জানিয়েছে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়ে বাংলাদেশ পাকিস্তানের সহযোগিতা চেয়েছে, যাতে রোহিঙ্গারা তাদের জন্মভূমি মিয়ানমারে নিরাপদে ফিরে যেতে পারেন।

তৌহিদ হোসেন বলেন, আপনারা নিশ্চয়ই প্রত্যাশা করেন না যে ৫৪ বছরের সমস্যা আজকের এক দিনের মিটিংয়েৃ যে মিটিংটা গত ১২ থেকে ১৩ বছর পর, তাও আবার হিনা রব্বানির দাওয়াত দেওয়ার জন্য এসেছিলেন, দ্বিপাক্ষিক সফর ছিল না... এখানে বসে আমরা এক ঘণ্টায় সমাধান করে ফেলতে পারব; এটা নিশ্চয়ই কেউ আশা করবেন না। আমরা পরস্পরের অবস্থান তুলে ধরেছি। তিনি বলেন, আমি আপনাদের এটুকু নিশ্চয়তা দিতে পারি, একটি বিষয়ে শুধু কথা হয়েছে যেটাকে খানিকটা অগ্রগতি হিসেবে ধরে নিতে পারেন। আমরা তিনটি বিষয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেছি।

তৌহিদ হোসেন বলেন, আমরা চাই হিসাবপত্র হোক, যেটা টাকা-পয়সার ব্যাপার, সমাধান হোক। আমি বাংলাদেশের অবস্থান শক্তভাবে তুলে ধরেছি। পাকিস্তানের সঙ্গে সিরিজ বৈঠক হচ্ছে। এটা তৃতীয় দেশ বিশেষ করে চীনের ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগের কারণে কি না- জানতে চাইলে তা নাকচ করে তিনি বলেন, ত্রিপক্ষীয় ব্যবস্থাটাতে চীনের উৎসাহ আছে, পাকিস্তানেরও উৎসাহ আছে। আমরা তো বলেছি, আপনারা আরও দেশকে নিয়ে আসেন, আমরা একসঙ্গে বসি। আমাদের অবস্থান সেই একই আছে। এটার কারণে আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করছি তা নয়।

বিগত সরকারের সময় পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ইচ্ছাকৃতভাবে পিছিয়ে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক গত সরকারের আমলে ইচ্ছাকৃতভাবে পিছিয়ে রাখা হয়েছিল। আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি, আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে একটি স্বাভাবিক সম্পর্ক চাই এবং অন্যান্য বন্ধু দেশের সঙ্গেও চাই; এর চেয়ে বেশি কিছু না।

রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠকের পর গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার একাত্তরে গণহত্যার জন্য ক্ষমা চাওয়াসহ অমীমাংসিত বিষয় দুইবার সমাধান হয়েছে বলে দাবি করেন। বৈঠকে অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে ইসহাক দার বলেন, ১৯৭৪ সালে প্রথমবারের মতো একাত্তর ইস্যুর ত্রিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়েছে। ওই সময়ের দলিলটি দুই দেশের জন্য ঐতিহাসিক। পরে আরও একবার ২০০২ সালে পারভেজ মোশাররফের সফরে দুঃখ প্রকাশের মধ্য দিয়ে সমাধান হয়। তিনি গোটা পাকিস্তান জাতির পক্ষ থেকে গোটা বাংলাদেশ জাতির উদ্দেশ্যে কথাটা বলেছিলেন। ফলে বিষয়টির দুইবার সমাধান হয়েছে। একবার ১৯৭৪ এ, আরেকবার ২০০০ এর শুরুতে। এছাড়াও পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ ইসহাক দারের এমন বক্তব্যের সঙ্গে বাংলাদেশ একমত নয় বলে সাফ জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেন।

পাকিস্তান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, আমরা চাই এখানে যে গণহত্যা হয়েছে এজন্য পাকিস্তান দুঃখ প্রকাশ করুক, মাফ চাক। আটকে পড়া মানুষদের যেন ফেরত নেয়। পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার গতকাল রোববার ঢাকায় গণমাধ্যমের কাছে ১৯৭১ সালের অমীমাংসিত বিষয়গুলোর মীমাংসা দ’ুবার হয়েছে এমন দাবি করেন। পাকিস্তানের মন্ত্রীর এ দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেন কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘অবশ্যই একমত না।’ উপদেষ্টা বলেন, ১৯৭১ সালের অমীমাংসিত বিষয়গুলো আলোচনায় তোলা হয়েছে। এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যেতে দুপক্ষ একমত হয়েছে।

এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার খোঁজখবর নিতে তার বাসায় যান বাংলাদেশে সফররত পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। গতকাল রোববার সন্ধ্যা ৬টা ৫৬ মিনিটে রাজধানীর গুলশানে অবস্থিত খালেদা জিয়ার বাসভবন ফিরোজায় যান তিনি। এছাড়াও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন ঢাকায় সফররত পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুহাম্মাদ ইসহাক দার। গতকাল রোববার দুপুর ২টায় রাজধানীর বসুন্ধারাস্থ জামায়াত আমীরের বাসভবনে এই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। পৃথক সাক্ষাতকালে ইসহাক দার বেগম খালেদা জিয়া ও জামায়াত আমীরের খোঁজখবর নেন এবং তার দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন। ঘণ্টাব্যাপী পৃথক এ সৌজন্য সাক্ষাৎটি আন্তরিক ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়।

উল্লেখ্য যে, বিকেলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ইসহাক দার। দুই দিনের সফরে শনিবার ঢাকায় এসেছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এক যুগেরও বেশি সময় পর এটি পাকিস্তানের কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম ঢাকা সফর। সফরের শুরুর দিনে বেশ ব্যস্ত সময় পার করেন ইসহাক দার। ইসলামাবাদ থেকে সর্বশেষ মন্ত্রী পর্যায়ের কেউ ঢাকা সফর করেছিলেন ২০১২ সালের নভেম্বরে। তখন তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রব্বানী খার বাংলাদেশে এসেছিলেন। এদিন তিনি বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ বছরের ২৭ এপ্রিল ইসহাক দারের ঢাকা আসার কথা ছিল। তবে ভারতের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে সীমান্তে উত্তেজনা দেখা দিলে দারের সফর স্থগিত করে ইসলামাবাদ।