# গুমবিষয়ক স্থায়ী কমিশন গঠন করা হবে --আসিফ নজরুল

# মায়ের ডাক ও নিখোঁজ পরিবারের সাথে বেঠক

বাংলাদেশ জাতিসংঘের গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে সই করলেও এখনো রয়ে গেছে অনেক চ্যালেঞ্জ। এই সংকট উত্তরণের সহজ উপায় হচ্ছে গুমের শিকার হওয়া পরিবারগুলোর কথা শোনা। গতকাল সোমবার সকালে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রুহুল সিদ্দিকীর সঙ্গে আলোচনার পর জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান গ্রাজিনা বারানোস্কা এ মন্তব্য করেছেন।

গ্রাজিনা বারানোস্কা বলেন, ‘বাংলাদেশ গুমবিষয়ক সনদ সইয়ের পর আমরা এসেছি। সফরটি গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের কাছে মনে হয়, ভুক্তভোগীদের সহযোগিতা করাই আসল বিষয়। সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রমের ওপর পর্যবেক্ষণ বাড়াতে হবে। এখনো অনেক চ্যালেঞ্জ আছে।’ তিনি গুমের অভিযোগগুলোর বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তের ওপর জোর দেন। ওয়ার্কিং গ্রুপের অন্য সদস্য আনা লোরেনা ডেলগাদিলো পেরেজ বলেন, ভুক্তভোগীদের সহযোগিতার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতেই এই সফর। যাঁরা গুম হয়েছেন, তাঁদের ন্যায়বিচার পাওয়ার বিষযয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ডব্লিউজিইআইডি প্রতিনিধিদল বলপূর্বক গুমসংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন, বিশেষ করে বলপূর্বক গুম থেকে সব ব্যক্তির সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক সনদে (আইসিপিপিইডি) বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তিকে স্বাগত জানান। তাঁরা বলপূর্বক গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশন (সিওআই) কর্তৃক প্রদর্শিত কাজ এবং প্রতিশ্রুতিরও প্রশংসা করেন। ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব মানবাধিকার সমুন্নত, সুরক্ষা ও প্রচার এবং ভুক্তভোগীদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য সরকারের অটল সংকল্পের ওপর জোর দেন। তিনি এ প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে জাতিসংঘের ওয়ার্কিং গ্রুপের সমর্থন এবং প্রযুক্তিগত সহায়তাকে স্বাগত জানান। গত রোববার জাতিসংঘের গুম কমিটির দুই সদস্যের প্রতিনিধিদল চার দিনের সফরে ঢাকায় আসে। ১৮ জুন তাদের ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে।

গুমবিষয়ক স্থায়ী কমিশন গঠন করা হবে: আগামী এক মাসের মধ্যে গুম প্রতিরোধ বিষয়ক আইন প্রণয়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। এই আইনের অধীনে গুমবিষয়ক একটি শক্তিশালী স্থায়ী কমিশন গঠন করা হবে বলেও জানান তিনি। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে জাতিসংঘের গুম-সম্পর্কিত কার্যনির্বাহী দলের (ওয়ার্কিং গ্রুপ) সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। পরবর্তী সরকার আইনটি বাতিল করবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, ‘বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি বা যে সরকারই আসুক, তারা সবাই গুমের শিকার। তারা সবাই এ বিষয়ে সোচ্চার ছিলেন। আর বিএনপি-জামায়াত তো সবচেয়ে বেশি গুমের শিকার ছিল।’

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে জাতিসংঘের গুম সম্পর্কিত ওয়ার্কিং গ্রুপ বারবার বাংলাদেশে আসতে চেয়েছিল। কিন্তু বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার জাতিসংঘের ওয়ার্কিং গ্রুপকে বাংলাদেশে আসতে দেয়নি, তাদের চিঠির উত্তর পর্যন্ত দেয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সরকারের একটা কমিটমেন্ট ছিল গুমের তদন্ত ও বিচার করা। জাতিসংঘের ওয়ার্কিং গ্রুপ বাংলাদেশে এসেছে, তাদের সঙ্গে আজ মিটিং করেছি। মিটিংয়ে বসার পর তারা আমাদের কিছু কার্যক্রমের প্রশংসা করেছে। গুম কমিশনের, তদন্ত কমিশনের প্রশংসা করেছে। আমরা আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছি, সেটার প্রশংসা করেছে। গুমবিষয়ক কমিশনের মেয়াদ বাড়ানোর কথা বলেছে।’

ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন গঠন প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা দক্ষিণ আফ্রিকায় হয়েছিল এবং সারা পৃথিবীতে সাড়া ফেলেছিল। এই কমিশন শ্রীলঙ্কা এবং নেপালেও হয়েছে। কিন্তু অতটা সফল হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশনের চারটি অংশ থাকে। এরমধ্যে একটা হচ্ছে ট্রুথ সেকিং আসলে কী হয়েছিল সেটা। সেটার কাজ অলরেডি শুরু হয়েছে। জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি কিছুদিন আগে যে রিপোর্টটা প্রকাশ করলো, সেটা এটার একটা অংশ। আমাদের ট্রাইব্যুনালে যে বিচার হচ্ছে, তদন্ত হচ্ছে, সেটা ট্রুথ সেকিংয়ের একটা অংশ। আমাদের মোস্তফা সারওয়ার ফারুকী সাবেক গণভবনে যে জুলাই জাদুঘর করছেন, সেটা ট্রুথ সেকিংয়ের একটা অংশ। তারপর একটা আরেকটা অংশ হচ্ছে মেমোরিয়ালাইজেশন, স্মৃতিটাকে ধরে রাখা। সেটা মি. ফারুকীর জাদুঘরের মাধ্যমে নিশ্চয়ই করা হবে। আর তৃতীয় হচ্ছে অ্যামনেস্টি, এটা একটু কঠিন। এটা হচ্ছে যারা ছোট ছোট অপরাধে যুক্ত ছিলেন, উদ্দেশ্যমূলকভাবে কোনও অপরাধে যুক্ত ছিলেন না, তাদের ক্ষেত্রে কোনও অ্যামনেস্টির স্কোপ আছে কিনা, সেটা দেখা। সব দেশেই এটা করা হয়। চতুর্থ ধাপ হচ্ছে, রিকনসিলিয়েশন। যারা চরম দোষী আছে, তাদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়ার মাধ্যমে আমাদের একটা জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তোলা। আরেকটি হচ্ছে, যারা ক্ষতিগ্রস্ত তাদের যথেষ্ট পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দেওয়া। ক্ষতিপূরণ শুধু টাকার অঙ্কে না। হয়তো ধরেন জুলাই আন্দোলনে যাদের অঙ্গহানি হয়েছে, তাদের চাকরির ব্যবস্থা করা।’ আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়েছিলাম। সেখানে অনেক মিটিং করেছিলাম। আমাদের দ্বিতীয় ধাপে চিন্তা আছে— প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে রিজিওনাল কনফারেন্স করা। শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও দক্ষিণ আফ্রিকার যারা বিশেষজ্ঞ আছেন, তাদেরকে সেখানে আনা হবে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল, সিভিল সোসাইটি, মানবাধিকার গ্রুপ, ছাত্র সমাজ— সবার মতামত নিয়ে কী করা যায়, সেটা নিয়ে চিন্তা করা হবে।’

মায়ের ডাকের সাথে বৈঠক: বাংলাদেশে গুমের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের সংগঠন মায়ের ডাক এর সমন্বয়ক সানিজদা ইসলামের সাথে বৈঠক করেছে জাতিসংঘের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এনফোর্সড অর ইনভলান্টারি ডিজঅ্যাপিয়ারেন্স (ইউএনআরসিও) প্রতিনিধি দর। এসময় ৮০ জনেরও বেশি নিখোঁজ পরিবারের সদস্য, গোপন আটক থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তি এবং বলপূর্বক গুমকরে নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন। ১৬ বছরেরও বেশি সময় ধরে,মায়ের ডাক এবং ভুক্তভোগী পরিবারগুলি রাষ্ট্রীয় দমন, হয়রানি এবং পদ্ধতিগত অস্বীকৃতি সহ্য করেছে। তবুও, এই ভয়াবহ বাধা সত্ত্বেও, তারা নীরব হতে অস্বীকার করে সত্য ও ন্যায়বিচারের জন্য তাদের নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এসময় তারা নিখোঁজদের ফিরিয়ে আনার দাবি করেন। আরও বলা হয় সত্য উন্মোচিত করতে হবে। ন্যায়বিচার বাস্তবায়ন করতে হবে।

ন্যায়বিচার এবং উত্তরের জন্য বছরের পর বছর ধরে অপেক্ষা করা ভুক্তভোগী পরিবারগুলো তাদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, ক্ষতি এবং স্থিতিস্থাপকতার গভীর সাক্ষ্য ভাগ করে নিয়েছে। কুখ্যাত গোপন আটক কেন্দ্র - একটি কথিত আয়নাঘর থেকে ফিরে আসা বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা তাদের অভিজ্ঞতার ভীতিকর বিবরণ দিয়েছেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন পূর্ববর্তী শাসনামলে অবৈধ আটক ও নির্যাতনের ধরণ সম্পর্কে তুলে ধরা হয়। অংশগ্রহণকারীরা বর্তমান জোরপূর্বক গুম তদন্ত কমিশন সম্পর্কে তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, এর স্বচ্ছতার অভাব, সীমিত সম্পদ এবং নিখোঁজদের পরিবারকে অর্থপূর্ণভাবে অন্তর্ভুক্ত না করার সমালোচনা করেছেন। অনেকেই হতাশা প্রকাশ করেছেন। পরিবার এবং বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে মূল দাবি

১. নিঃশর্ত মুক্তি:

আমরা জোরপূর্বক অন্তর্ধানের শিকার সকল ব্যক্তির অবিলম্বে এবং নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি, সেইসাথে তাদের পরিবারের সত্য উন্মোচনের মৌলিক অধিকারও দাবি করছি।

২. স্বাধীন তদন্ত এবং বিচার:

এই জঘন্য কাজের জন্য দায়ীদের পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত এবং বিচারের জন্য নিবেদিত একটি সম্পূর্ণ স্বাধীন ব্যবস্থা তৈরি করা অপরিহার্য, যাতে বিচারিক প্রক্রিয়াগুলো ন্যায্য, বিশ্বাসযোগ্য এবং স্বচ্ছ হয়।

৩. গোপন আটক স্থান ভেঙে ফেলা:

আইনাঘর সহ সমস্ত অবৈধ আটক স্থান বন্ধ করে দিতে হবে। এই স্থানগুলোকে সম্মিলিত স্মৃতির স্থানে রূপান্তরিত করা উচিত — যেমন স্মৃতি জাদুঘর — যাতে ক্ষতিগ্রস্তদের সম্মান জানানো যায় এবং ভবিষ্যত প্রজন্মকে শিক্ষিত করা যায়। আমরা জনসাধারণের স্মৃতিস্তম্ভ এবং সেনাবাহিনীর জড়িত থাকার স্বীকৃতিরও আহ্বান জানাই।

৪. জাতিসংঘের সম্পৃক্ততা:

আমরা জাতিসংঘকে বাংলাদেশে জোরপূর্বক অন্তর্ধান এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিস্তৃত পরিসর মোকাবেলায় একটি ব্যাপক তথ্য-অনুসন্ধান মিশনের নেতৃত্ব দেওয়ার আহ্বান জানাই।

৫. কেবল ক্ষমা চাওয়া নয়: কেবল প্রতীকী ক্ষমা চাওয়াই ব্যর্থ হয়েছে তা স্বীকার করা অপরিহার্য। প্রকৃত ন্যায়বিচারের জন্য পূর্ণ সত্য-বক্তব্য, প্রাতিষ্ঠানিক জবাবদিহিতা এবং একটি ন্যায়সঙ্গত ও মানবিক সমাজ গড়ে তোলার জন্য সুনির্দিষ্ট প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ প্রয়োজন। পরিবারগুলি আবেগের সাথে অবিলম্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ন্যায়বিচারের আহ্বান জানিয়েছে।

অবশেষে ঢাকায় জাতিসংঘের ‘গুম’ টিম: বাংলাদেশের ‘গুম’ ইতিহাসে যুক্ত হলো এক নতুন অধ্যায়। দীর্ঘ এক দশকের চেষ্টার পর প্রথমবারের মতো ঢাকায় পা রেখেছে জাতিসংঘের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এনফোর্সড অর ইনভলান্টারি ডিজঅ্যাপিয়ারেন্স (ডএঊওউ)। রোববার ঢাকায় পৌঁছেন দুই সদস্যের একটি কারিগরি প্রতিনিধিদল। জাতিসংঘের এই বিশেষ কমিটি, যা গুমের মতো সংবেদনশীল মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে কাজ করে, ২০১৩ সাল থেকে বাংলাদেশ সফরের অনুমতি চেয়ে আসছিল। কিন্তু একাধিকবার অনুরোধ করেও অনুমতি মেলেনি। সর্বশেষ ২০২০ সালে দেওয়া অনুরোধও ছিল নিষ্ফল। তবে চলমান অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে সেই দরজা অবশেষে খুলেছে। এই সফর তদন্তমূলক নয় তথ্যভিত্তিক পর্যালোচনা ও পর্যবেক্ষণমূলক। সফরকালীন সময়ে প্রতিনিধিদলটি আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, গুমবিষয়ক জাতীয় কমিশনের সদস্য, ফরেন অফিসের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময় করবেন। এর পাশাপাশি থাকবে নীতিনির্ধারণী আলোচনাও। প্রতিনিধিদলের দুই সদস্য হলেন ডব্লিউজিইআইডির ভাইস চেয়ার গ্রাজিনা বারানোস্কা এবং সদস্য আনা লোরেনা ডেলগাদিলো পেরেজ। তাদের সফর শেষ হবে আগামী ১৮ জুন।

জাতিসংঘের এই টিম প্রথম ২০১৩ সালের ১২ মার্চ বাংলাদেশ সফরের জন্য আবেদন করে। এরপর ২০১৪, ২০১৬, ২০১৮—বিভিন্ন সময়ে নতুন করে সফরের আগ্রহ প্রকাশ করা হলেও, বিষয়টি বারবার উপেক্ষিত থাকে। বিশেষ করে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দেওয়া রিপোর্টে গুম নিয়ে বাংলাদেশের নাম উঠে আসার পর থেকেই তাদের আগ্রহ বাড়তে থাকে। মানবাধিকার প্রশ্নে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ ক্রমেই বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতিমালা, ইউরোপীয় ইউনিয়নের মানবাধিকার শর্ত—সবকিছু মিলিয়ে সরকারকেও এখন আগের মতো ‘না’ বলার অবস্থানে রাখা যাচ্ছে না। সাম্প্রতিক সময়েও একাধিক আন্তর্জাতিক রিপোর্টে বাংলাদেশে গুমের শিকার হওয়া পরিবারের আর্তনাদ উঠে এসেছে। তবে সরকার বরাবরই বলে আসছে—অনেক ‘গুম’ দাবিকৃত ব্যক্তি নিজেরাই আত্মগোপনে গিয়েছিলেন, কেউ কেউ বিদেশে পালিয়েছেন, আবার কেউ জঙ্গিবাদে যুক্ত ছিলেন। এই বিতর্কের মাঝেই জাতিসংঘের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপের সদস্যদের প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণ বাস্তবতার অনেক দিক উন্মোচন করতে পারে। যদিও এই সফর তদন্ত নয়, তবে এটা হতে পারে ভবিষ্যতের বড় কোনো আন্তর্জাতিক তদন্ত উদ্যোগের সূচনা।