বেতনবৈষম্য নিরসনসহ তিনদফা দাবিতে দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের চলমান কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী রোববার (১ জুন) থেকে ক্লাসে ফিরছেন তারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দারের সঙ্গে বৈঠকের পর কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন ‘প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ’ নেতারা।
বৈঠক শেষে ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, দাবি পূরণের সরকারের সুস্পষ্ট ও ইতিবাচক পদক্ষেপের কারণে আমরা আপাতত কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করছি। আগামী ২৬ জুন পর্যন্ত আমরা পর্যবেক্ষণ করবো। দাবি বাস্তবায়নে অগ্রগতি না হলে এরপর আবারও কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, ‘আগামী ৩ জুন থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হবে। ফলে ১ ও ২ জুন বিদ্যালয় খোলা থাকবে। অর্থাৎ, রোববার সহকারী শিক্ষকরা সরকারের আশ্বাসে ক্লাসে ফিরে যাবেন। তারা শ্রেণি কার্যক্রমে অংশ নেবেন।’
এর আগে গত ২৬ জুন থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ঘোষণা দেন সহকারী শিক্ষকরা। এতে দেশের সাড়ে ৬৫ হাজারের বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস বন্ধ হয়ে যায়। শ্রেণি কার্যক্রম না চলায় স্কুলে এসেও ফিরে যেতে বাধ্য হয় শিশু শিক্ষার্থীরা।
তারও আগে ৫ থেকে ১৫ মে পর্যন্ত প্রত্যেক কর্মদিবসে এক ঘণ্টা, ১৭ মে থেকে দুই ঘণ্টা এবং ২১ মে থেকে ২৫ মে পর্যন্ত আধাবেলা কর্মবিরতি পালন করেন শিক্ষকরা।
সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবিÑ
১. সরকারের গঠিত কনসালটেশন কমিটির সুপারিশের যৌক্তিক সংস্কার করে সহকারী শিক্ষক পদকে অ্যান্ট্রি পদ ধরে ১১তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ।
২. ১০ বছর ও ১৬ বছরপূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা নিরসন।
৩. প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ পদোন্নতিসহ দ্রুত পদোন্নতি প্রদান।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বর্তমানে দেশে ৬৫ হাজারের বেশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পৌনে ৪ লাখেরও বেশি শিক্ষক কর্মরত। তাদের মধ্যে সাড়ে তিন লাখই সহকারী শিক্ষক। বর্তমানে প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের বর্তমান বেতন গ্রেড ১১তম। আর সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড ১৩তম।