রাজধানীর পল্লবীতে যুবদল নেতা গোলাম কিবরিয়া হত্যার ঘটনায় আটক মো. মোক্তার হোসেন (৪০) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) হেফাজতে মারা গেছেন। মোক্তারের মারা যাওয়ার তথ্য গতকাল শুক্রবার নিশ্চিত করেছে ডিএমপি। এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। এ ঘটনায় গতকাল বেলা ১টার পর ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমানের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত সোমবার সন্ধ্যায় মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনের বি ব্লকের বিক্রমপুর হার্ডওয়্যার অ্যান্ড স্যানিটারি নামের দোকানে ঢুকে মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা এলোপাতাড়ি গুলী চালিয়ে যুবদল নেতা কিবরিয়াকে হত্যা করে। এই ঘটনায় তার স্ত্রী সাবিহা আক্তার বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে পল্লবী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। অজ্ঞাতনামা আসামী ৭-৮ জন। সুষ্ঠু তদন্তসহ জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে মামলাটি ডিএমপির ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ডিবি বৃহস্পতিবার শরীয়তপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত নজরুল, মাসুম ও জামানকে গ্রেপ্তার করে।

ডিএমপির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেন। কিবরিয়া হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র-গুলী মোক্তারের হেফাজতে আছে বলে জানান তারা। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে ডিবির একটি দল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পল্লবীর একটি গ্যারেজে অভিযান চালায়। ডিবির উপস্থিতি টের পেয়ে মোক্তার দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় কৌশলে তাকে আটক করা হয়। এ সময় উত্তেজিত জনতা মোক্তারকে মারধর করেন।

ডিএমপির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মোক্তারের তথ্যের ভিত্তিতে পল্লবীর একটি রিকশা গ্যারেজ থেকে পিস্তলের আটটি গুলী উদ্ধার করে ডিবি। পরে মোক্তারকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে মোক্তার অসুস্থবোধ করেন। তাকে তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে কিছু ওষুধ দিয়ে তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেন। তাকে আবার ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। ডিএমপির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজ (শুক্রবার) সকাল ১০টার দিকে খাবার খাওয়ার জন্য মোক্তারকে ডাকাডাকি করা হয়। কোনো সাড়াশব্দ না পাওয়ায় পুলিশ সদস্যরা দ্রুত তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের জন্য মোক্তারের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানায় ডিএমপি।

এদিকে, এ ঘটনায় ডিএমপি অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) মো. সরওয়ারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটিকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।