দেশে এখন ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ৬৩ লাখ ৭ হাজার ৫০৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ লাখ ৪১ লাখ ৪৫৫ জন এবং নারী ভোটার ৬ লাখ ২২ লাখ ৫ হাজার ৮১৯ জন। হিজড়া ভোটার ১২৩০ জন।
গতকাল রোববার বিকেলে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
সিনিয়র সচিব বলেন, আরেকটা তালিকা আমরা করব ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত যারা ১৮ বছর পূরণ করবে, তাদের নিয়ে। এর আগে গত ১০ আগস্ট বাদ পড়া সাড়ে ৪৪ লাখ ভোটারের সম্পূরক হালনাগাদ ভোটার তালিকার খসড়া প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ওই সময় জানানো হয়, সম্পূরক ভোটার তালিকা প্রকাশ হওয়ায় যোগ্য ব্যক্তির নাম অন্তর্ভুক্তি, মৃত্যুজনিত বা অন্তর্ভুক্তি হওয়ার অযোগ্য ব্যক্তির নাম কর্তন, ভোটার স্থানান্তর এবং কোনো সংশোধন বা ত্রুটি-বিচ্যুতি দূর করার জন্য দরখাস্ত (ফরম-২, ফরম-১২, ফরম-১৩ ও ফরম-১৪ এর মাধ্যমে দরখাস্ত করতে হবে) দাখিল করা যাবে ২১ আগস্ট পর্যন্ত। দাখিলকৃত দরখাস্তসমূহ সংশ্লিষ্ট উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসার ও রেজিস্ট্রেশন অফিসার কর্তৃক নিষ্পত্তি করা হবে ২৪ আগস্টের মধ্যে। এরপর অন্যান্য কাজ শেষে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে ৩১ আগস্ট।
এদিকে যাদের বয়স ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ১৮ বছর পূর্ণ হবে, তারাও এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটার তালিকায় যুক্ত হবেন। আগামী রোজার আগে ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। ইতোমধ্যে সাংবিধানিক সংস্থাটি নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে।
শারীরিকভাবে অক্ষমদের সহায়তায় ভোটকেন্দ্রে স্বেচ্ছাসেবী থাকবে : প্রতিবন্ধী ও বয়স্ক বা শারীরিকভাবে অক্ষমদের সহায়তায় ভোটকেন্দ্রে বিএনসিসি, স্কাউট বা স্বেচ্ছাসেবী থাকবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। গতকাল রোববার চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ‘ন্যাশনাল কনসালটেশন অন ইনক্লুসন অব পার্সন উইথ ডিসঅ্যাবিলিটিস ইন ইলেকটোরাল প্রসেস’ শীর্ষক কর্মসূচিতে তিনি এমন পরিকল্পনার কথা বলেন।
আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, সমাজ, দেশ ও জাতি হিসেবে আমাদের অনেক বেশি করণীয় আছে। শপিং মল, রাস্তা হয়; কিন্তু তাদের জন্য কিছু ব্যবস্থা রাখা হয় না। সার্বিকভাবে পুরো সমাজেই আমরা তাদের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা করতে পারিনি। ইসি এর বাইরে নয়, এটা দুঃখজনক।
তিনি বলেন, তারা যে অধিকার পাওয়ার কথা আমরা কিছুটা এগিয়েছি। আমাদের অনেক পথ এগোতে হবে। শুধু দৃষ্টি প্রতিবন্ধী নয়, যাদের হাতটা কাঁপে, কেন্দ্রে যেতে পারেন না, কেবল প্রতিবন্ধী নয়; যারা বয়স্ক, তাদেরও সহায়তা দেওয়ার বিধান আছে।
এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, প্রতিবন্ধীদের ভোটে অংশ নেওয়ার জন্য সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে। আমরা কমিশনের পক্ষ থেকে বাস্তবসম্মত যা যা করা সম্ভব সব করবো। সহায়ক নিয়োগ করতে পারি কিনা, ভলানটিয়ার বিএনসিসি, স্কাউট, এটা নিয়ে আমরা ভাবছি। পাশাপাশি যৌক্তিক আলোচনা এসেছে, পরিবহন সুবিধা, এটা আমাদের বিবেচনায় নিতে হবে।
প্রতিবন্ধীরা ভোটকেন্দ্রের যেখানে চাইবেন সেখানেই যেন ভোট দিতে পারেন, নিচতলা হতে পারে, আমরা সেটা পরিপত্র দিয়ে করতে পারবো।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ করলেই আমরা অন্তর্ভুক্তিমূলক বলি, আসলে সব মানুষ যদি অংশ না নেয় তাহলে কি করে হলো। অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন যেমন গুরুত্বপূর্ণ, সহায়ক পরিস্থিতি তৈরি করাও গুরুত্বপূর্ণ।
আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, আমরা আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচন তুলনামূলক ভালো করবো ইনশাল্লাহ। আমরা যেখানে নির্বাচনই ভুলে গিয়েছিলাম, সেখানে ডিজেবল পিপলদের জন্য ভাবছি, কাজেই এটা ৩৬ জুলাইয়ের ফসল।
তিনি আরো বলেন, আমরা জেলখানার কয়েদিদের ৭১টি জেলে, জেল অথরিটির সঙ্গে কথা বলেছি, প্রবাসীদের জন্য, ভাসমান মানুষ তাদের ভোটের ব্যবস্থার জন্যও ভাবছি।
ইউএনডিপি, নির্বাচন কমিশন ও সাইট সেভারর্স আয়োজিত এই কর্মসূচিতে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা প্রতিবন্ধীরা তাদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
এতে ইসি সচিব ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লেলারসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ইসি সচিব বলেন, সংবিধানের কোনো ধারাতেই ডিজেবলদের কোনো রেস্ট্রিকশন আনা হয়নি। আমাদের দিক থেকেও তাদের ভোটে অংশগ্রহণ নিয়ে কোনো অসুবিধা নেই।