প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শুধু প্রবাসীদের জন্য আগাম ১০ লাখ পোস্টাল ব্যালট ছাপাবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
গতকাল সোমবার নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সঙ্গে আয়োজিত সংলাপে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ এ তথ্য জানান।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকারের প্রত্যাশার কথা তুলে ধরে আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, বাংলাদেশে প্রতিটি পোস্টাল ব্যালটের ভোটে ব্যয় ৭০০ টাকা। পোস্টাল ব্যালটে মাত্র ২.৭ শতাংশ রেজিস্ট্রেশন হয়েছে। সবশেষ লোকসভা নির্বাচনে ১ লাখ ১৯ হাজার রেজিস্ট্রেশন হয়েছিল, ভোট দিয়েছেন মাত্র ২ হাজার ৯০০ জন।
তিনি বলেন, প্রত্যাশা অনেক। আমাদের ধারণা এবার ভোটার সংখ্যা বাড়বে, কতটা হবে তা জানি না। প্রাথমিকভাবে ১০ লাখ ব্যালট পেপার ছাপিয়ে রাখব। রেজিস্ট্রেশনের সংখ্যা দেখে পরবর্তী ধাপে যাব।
নির্বাচন কমিশনার সানাউল্লাহ বলেন, অপতথ্য ছড়িয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার ও এআই অপব্যবহার এখন বৈশ্বিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি সবার জন্য সাধারণ উদ্বেগের বিষয়। আমাদের জন্যও চ্যালেঞ্জটি গুরুতর। অপতথ্য রোধে মূলধারার গণমাধ্যম বড় ভূমিকা রাখতে পারে। বাস্তবতা হচ্ছে সঠিক তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করা। সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হলে ভালো তথ্যও বন্ধ হয়ে যাবে। সবকিছু আটকে দেওয়া সম্ভব নয়, এটি বাস্তবসম্মত নয়। কিছুটা হলেও সচেতনতা তৈরি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ইসি কোনো সীমাবদ্ধতা আরোপ করবে না। আচরণবিধিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। আইসিটি আইনসহ প্রচলিত আইনও রয়েছে। এক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। নভেম্বর থেকে সচেতনতা তৈরি ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। কেন্দ্রীয় ও স্থানীয়ভাবে কিছু কমিটি করা হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচনী সংস্কৃতি নষ্ট হয়ে গেছে। নির্বাচন ভালো করতে হলে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমরা সবাই ভাবমূর্তির সংকটে রয়েছি। এ আস্থার সংকট কাটিয়ে ওঠাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।
নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহিম মাছউদ বলেন, এআই অপব্যবহার রোধে আরপিও এবং আচরণবিধিতে সাইবার সুরক্ষার বিষয়টি রাখা হয়েছে এবং শাস্তির বিধান যোগ করা হয়েছে। এখন জনসচেতনতা তৈরি জরুরি, এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংলাপে চার নির্বাচন কমিশনার, ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিবসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া স্টার নিউজের হেড অব নিউজ ওয়ালিউর রহমান মিরাজ, মাছরাঙ্গা টিভির বিশেষ প্রতিনিধি নিয়াজ মোর্শেদ, আনন্দ টিভির নিউজ ইনচার্জ জয়নাল আবেদীন এবং এটিএন বাংলার চিফ রিপোর্টার একরামুল হক সায়েম সংলাপে অংশ নেন।